নির্বাচন করতে চান পলক
মন খারাপ পর্ব কাটিয়ে জেলখানায় মানিয়ে নেয়া জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় কারাগারে বন্দি সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের এখন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লড়তে চান।
৮ সেপ্টেম্বর, বুধবার ঢাকার আদালত প্রাঙ্গনে সাংবাদিকদের উদ্দেশে এমন অভিব্যক্তি প্রকাম করেন তিনি।
এজলাসে ওঠানোর সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশে পলক বলেন, সব কিছুরই শেষ আছে। এসময় এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, সামনে তো নির্বাচন? আপনি কি নির্বাচনে অংশ নেবেন। এই কথা শুনে 'হ্যা' সুচক মাথা নাড়ান পলক।
এরপর আবারও তিনি বলেন, সব কিছুরই শেষ আছে। পরে পুলিশ তাদের সিএমএম আদালতের ৫ তলার এজলাসে ওঠান। এরপর তাদের কাঠগড়ার ভেতর নেওয়া হয়। সেখান দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য তাদের মাথার হেলমেট, বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট খুলে দেন। কাঠগড়ায় সামনের দিকে গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, পাশে ছিলেন জুনায়েদ আহমেদ পলক, রাশেদ খান মেনন ও আতিকুল ইসলাম। এসময় তারা আইনজীবীদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে থাকেন।
এ সময় পলক তার আইনজীবীকে বলেন, আমি ভালো আছি। মানসিকভাবে শক্ত আছি। মনে থেকে উজ্জীবিত রয়েছি। আগে মন খারাপ থাকলেও এখন আর মন খারাপ হয় না। নিজেকে মানিয়ে নিয়েছি। এই সংবাদ পলকের বাড়িতে পাঠানোর জন্য তিনি গণমাধ্যমকে অনুরোধ করেন।
পলকের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম (সাইফ) জানান, তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে ভালো এই সংবাদ তার বাড়িতে জানাতে বলেছেন। জেলখানায় যে সুবিধা পাওয়া কথা সেটা তিনি পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন। কিছুদিন আগে আওয়ামী লীগের এক নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। এই বিষয় তিনি ভীতিগ্রস্ত হলেও, এখন মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সব কিছুতেই নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন।
পরে বেলা ১১ টা ৮ মিনিটে বিচারক এজলাসে ওঠেন। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার উপপরিদর্শক মো. ইয়াছির আরাফাত তাদের এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরেন।
এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমন আসামিদের এই মামলায় গ্রেফতার দেখানোর শুনানিতে বলেন, আসামিরা এজাহারনামীয়। ভিকটিম শাহজাহান বনানী থানাধীন মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচে শান্তিপূর্ণ মিছিলে অংশ নেন।
এসময় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিলে দেশীয় অস্ত্রসহ আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলিবর্ষণ করে। সেসময়ে ভিকটিম শাহজাহান বুকে ও পেটে দুটি গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে। চার দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ওইদিন ১২০ জন জুলাই আন্দোলনকারীদের হত্যা করা হয়। আসামিদের নির্দেশের তাদের হত্যা করা হয়েছে। মামলার তদন্ত স্বার্থে তাদের এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো প্রার্থনা করছি।
শুনানি শেষে আদালত তাদের এই মামলায় গ্রেফতার দেখানো আবেদন মঞ্জুর করেন। এরপর আবারও তাদের তাদের মাথায় হেলমেট, বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পড়িয়ে এজলাসে থেকে হাজতখানায় নেওয়া হয়।
মামলার অভিযোগে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৯ জুলাই ঢাকার এক কারখানার কর্মী মো. শাহজাহান বনানী থানাধীন মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচে শান্তিপূর্ণ মিছিলে অংশ নেন। এসময় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিলে দেশীয় অস্ত্রসহ আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলিবর্ষণ করে। এসময় ভিকটিম শাহজাহান বুকে ও পেটে দুইটি গুলিবিদ্ধ হন। চার দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় গত ১৮ ডিসেম্বর ভিকটিমের মা সাজেদা বনানী থানায় ৯৭ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।







