বেটিং-পর্নোগ্রাফি সাইট বন্ধে বিটিআরসি-ডট ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ব্যর্থ?

২৩ মার্চ, ২০২৫  
২৩ মার্চ, ২০২৫  
বেটিং-পর্নোগ্রাফি সাইট বন্ধে বিটিআরসি-ডট ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ব্যর্থ?

২০১৮-২০১৯ সালে পর্নোগ্রাফি ও জুয়ার সাইট-লিংক বন্ধের দাবি নিয়ে আমরা আহ্বান জানালে তৎকালীন সরকার ২০১৯ সালে দুই দফায় ১৭৮ টি ও ৩৩১ টি জুয়ার সাইট-লিংক বন্ধ করে। যদিও শনাক্তকরণ করা হয় প্রায় ২২৩৫টি জুয়ার সাইট। ২০২২ ও ২৩ এর জুন পর্যন্ত বিটিআরসি ১২ হাজার তিনটি অনলাইন জুয়ার বেটিং সাইট-লিংক বন্ধ করেছিল বলে দাবি করে। তবে গত ৫ আগস্টের পর দেশে পর্নোগ্রাফির অনেক ওয়েবসাইট খুলে দেওয়া হয়। পর্নোগ্রাফির সঙ্গে ধর্ষণের একটা সম্পর্ক থাকায় এই ওয়েবসাইটগুলো বন্ধ করতে ১৪ মার্চ থেকে ফের এসব ওয়েব সাইট বন্ধ করার নির্দেশনা দেয়ার কথা জানান আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। 

তবে এরপরও এখন পর্যন্ত প্রকৃত পক্ষে ৬৫ শতাংশ সাইট-লিংক বন্ধ করা সম্ভব হয়নি দাবি করে এ জন্য বিটিআরসি এবং ডটের ব্যর্থতা-কে দাবি করেছে গ্রাহক অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। 

অপরদিকে আইপিএল শুরুর আগেই দেশ সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান সরাসরি  জুয়ার প্রমোশনের বিষয়টি এখন ওপেন সিক্রেট হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিজেরে ভেরিফায়েড ফেসবু পেজ ও ইনস্ট্যাগ্রাম পোস্টেই এমন অফার করেছেন তিনি। করছেন বাজিকর সাইট ওয়ান এক্স বেট এর প্রমোশন। এই বিজ্ঞাপনটি অনলাইনের পাশাপাশি অফলাইনেও বিজ্ঞাপন প্রদর্শনীর বিভিন্ন ডিসপ্লে বোর্ডে দেখা যায়। মাঝে মাঝে কাওরান বাজারের সফটওয়্যার পার্কের ডিসপ্লে বোর্ডেও এমন বিজ্ঞাপন দেখার অভিযোগ মিলেছে সচেতন নাগরিকদের কাছ থেকে। এমন পরিস্থিতিতে খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন. অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে শতকোটি টাকা লেনদেন এবং ডিজিটাল মানি লন্ডারিং হবে। এ বিষয়ে ক্রিড়া সাংবাদিক নট আউট নোমান জানিয়েছেন, টাকায় বিক্রি হওয়া সাকিব রাখঢাক ছাড়াই জুয়া খেলার লোভ দেখাচ্ছেন সবাইকে। প্রোমোকোড ব্যবহার করলে বোনাস হবে ডাবল! সেটি বাংলাদেশের আইনে নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও। সংসদ সদস্য হিসেবে দেশের আইনপ্রণেতা ছিলেন যিনি, তিনি কি আর তা জানেন না? জানেন। কিন্তু সেটিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে টাকা কামানোই সাকিবের অগ্রাধিকার। এখন বিসিবি ও সরকারের কি কিছুই করার নেই? অবশ্যই আছে।

এ নিয়ে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বর্তমান সরকার দায়িত্বে আসার পর প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী নির্দেশ প্রদান করেছিলেন জুয়া এবং পর্নো সাইট-লিংক বন্ধ করার জন্য বলে আমরা জানতে পারি। বিটিআরসি এই সাইট সাইট-লিংক করতে গিয়ে উল্টো অনেক ই-কমার্স এবং ফ্রিল্যান্সারদের আইপি ব্লক করেছিল। ফলে তারা কাজ করতে ব্যাপক অসুবিধায় পড়ে। গ্রাহকদের অসুবিধার খোঁজ নিতে গিয়েই আমরা লক্ষ্য করি বিটিআরসি আইএসপিদের নির্দেশ প্রদান করে জুয়া এবং পণ্যের সাইট-লিংক ব্লক করার জন্য।

সংগঠনের সভাপতি বলেন, কিন্তু কথা হচ্ছে আইএসপি কি চাইলেই ব্লক করতে পারে? এই ব্লক করার সক্ষমতা রয়েছে একমাত্র বিটিআরসি এবং ডটের। মূলত কাজটি করছে ডট। কিন্তু কথা হলো ডটের সক্ষমতা মাত্র ৪৫ শতাংশ। তাহলে বাকি ৫৫ শতাংশ ব্যান্ডউইথ বাইপাস হয়ে গ্রাহকের ডিভাইজে প্রবেশ করছে। এই যে ৫৫ শতাংশ দেখভালের সামর্থ্য নেই ডটের তার দায় দায়িত্ব নিবে কে? 

তিনি বলেন, তার নেই ডিভাইস এবং লোকবল। পবিত্র এই রমজানেও দেদারসে চলছে পর্নোগ্রাফি সাইট। পবিত্র রমজানের মধ্যেও যে ধর্ষণ এবং বিকৃত মানসিকতা আমরা লক্ষ্য করছি এর অন্যতম কারণ এই সকল বিকৃত পর্নোগ্রাফি। সেই সাথে চলছে জুয়া, ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে আইপিএল। দেশের স্বনামধন্য ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকেও দেখা গেছে জুয়ার সাইটের বিজ্ঞাপন প্রচার করার। আরো রয়েছে স্বনামধন্য তারকা সেলিব্রেটিরাও জোয়ার সাইটের বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। এভাবে চলতে থাকলে দেশের তরুণ প্রজন্ম যেমন ধ্বংস হবে। ঠিক একইভাবে ধর্ষণ ছিনতাই রাহাজানি বাড়তে থাকবে। সরকারের উচিত হবে বিটিআরসি এবং ডটকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনা।  এদের ব্যর্থতার দায়ভার জনগণ কেন নেবে?