তিন দিন ব্যাপী মোজো প্রশিক্ষণ নিলেন ডিআরইউ সদস্যরা

পিআইবিতে হচ্ছে মাল্টিমিডিয়া ল্যাব ও পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল লাইব্রেরি

Feb 12, 2025 - 19:34
Feb 13, 2025 - 19:38
পিআইবিতে হচ্ছে মাল্টিমিডিয়া ল্যাব ও পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল লাইব্রেরি

ডিজিটাল মিডিয়া স্বাধীন সাংবাদিকতাতে ক্ষমতায়িত করবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব মোর্শেদ। আর সাংবাদিকদের ডিজিটাল দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণের জন্য এক মাসের মধ্যে একটি মাল্টিমিডিয়া ল্যাব চালু ও তাদের সুরক্ষায় ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের (পিআইবি)।

বুধবার পেশাদার সাংবাদিকদের সংগঠন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্যদের মোবাইল সাংবাদিকতা বিষয়ক প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানের আলোচনায় এসব কথা উঠে আসে। রাজধানীর সার্কিট হাউজ রোডে অবস্থিত বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের (পিআইবি) প্রশিক্ষণ হলে গত ১০ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) থেকে শুরু হওয়া তিনদিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণে ডিআরইউর ৩৫ জন সদস্য অংশ নেন। পিআইবি’র ব্যবস্থাপনায় এই কর্মশালায় মোবাইল জার্নালিজম নিয়ে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা, মিডিয়া এবং যোগাযোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক  ড. জামিল খান, গাজী টিভির নির্বাহী প্রযোজক ও পিআইবি প্রশিক্ষক শাহাব উদ্দিন এবং ফ্যাক্ট ওয়াচ নির্বাহী সম্পাদক শুভাশীষ দাস রায় দীপ প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। 

প্রশিক্ষণ শেষে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষণার্থীদের হাতে সনদ তুলে দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব মোর্শেদ।

পিআইবির সহকারী প্রশিক্ষক জিলহাজ উদ্দিনের সঞ্চালনায় সংস্থার অধ্যয়ন ও প্রশিক্ষণ বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) পারভীন সুলতানা রাব্বী,  ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) তথ্য, প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক বোরহান উদ্দিন এবং দুই জন প্রশিক্ষণার্থী বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহবুব মোর্শেদ বলেন, মূল ধারার গণমাধ্যমগুলোর এখন পড়ন্ত অবস্থা। বিপরীতে ফেসবুক, ইউটিউব ও অনলাইন মাধ্যমগুলো বিকল্প মাধ্যম হিসেবে গড়ে উঠছে। বেশির ভাগ পাঠকই এসব মাধ্যমে সংবাদ পড়ছেন। মূলত রাষ্ট্র ও কর্পোরেট বা ব্যবসায়িক হিসাব-নিকাশের কারণে মূলধারার গণমাধ্যমগুলো পাঠকদের আস্থায় আনতে ব্যর্থ হয়েছে। বিপরীতে একটি মোবাইল ফোন দিয়ে সরাসরি খবর সম্প্রচার করে এবং মুহূর্তের ঘটনার প্রকাশ করে এগিয়ে গেছে অনলাইন মাধ্যম। এক্ষেত্রে স্বাধীন সাংবাদিকতার দ্বারও উন্মোচিত হয়েছে। এই সুযোগটা গ্রহণ করলে সাংবাদিকরা আর্থিক স্বচ্ছলতার পাশাপাশি নিজেকেও মেলে ধরার সুযোগ পাচ্ছেন। 

অপরদিকে ফারুক ওয়াসিফ বলেন, পিআইডি আগে ৪টি গণমাধ্যম ডিজিটালি সংরক্ষণ করতো। এখন সেটি ৬টিতে উন্নীত করা হয়েছে। গবেষণা ও রেফান্সের জন্য আগামীতে আমরা সব প্রতিকারই ডিজিটাল আর্কাইভ তৈরি করছি। এই আর্কাইভ থেকে অতীত সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাবেন আগামীর গবেষক ও সাংবাদ কর্মীরা। এছাড়াও সাংবাদিকদের হাতে কলমে ডিজিটাল সাংবাদিকতা আত্মস্থ করতে এক মাসের মধ্যে একটি মাল্টিমিডিয়া ল্যাব স্থাপন করা হবে। এখানে প্রশিক্ষণ নেয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় কাজও করতে পারবেন গণমাধ্যম কর্মীরা। পাশাপাশি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা ও গবেষণার কাজে সাংবাদিকদের আর্থিক সহযোগিতার বিষয়টি নিয়েও কাজ শুরু হয়েছে। সব কিছু মিলিয়ে পিআইবিতে গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য একটি ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার খোলা হবে। 

এর আগে সোমবার প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল। তিনদিনের এই কর্মসূচিতে সাংবাদিকদের তথ্য প্রযুক্তির উকৎর্ষতার যুগে মোবাইল সাংবাদিকতা করার নানা দিক নিয়ে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।

কর্মশালায় প্রশিক্ষক ও বক্তারা বলেন, আগামী দিনে সাংবাদিকতায় যারা টিকে থাকতে হলে তথ্যপ্রযুক্তির ওপর দক্ষ হতে হবে। সেক্ষেত্রে মোবাইল সাংবাদিকতার ওপর প্রশিক্ষণ থেকে পাওয়া জ্ঞান যারা বাস্তব অর্থে কাজে লাগাতে পারবেন তারা ভালো করবেন। 
তারা বলেন, অন্য পেশার মানুষ কিংবা সাধারণ মোবাইল ব্যবহারকারীদের মধ্যে এবং সাংবাদিকদের মধ্যে পার্থক্য আছে। তারা চাইলেই যে কোনো তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা গণমাধ্যমে প্রকাশ করতে পারেন না। বর্তমানে লেখা, ছবি এবং ভিডিওর সত্যতা যাচাই করার নানা ধরণের উপায় আছে। সাংবাদিকদের সেসব জায়গা থেকে পরীক্ষা করে সংবাদ পরিবেশন করতে হবে। অন্যথায় গ্রহণযোগ্যতা হারাবে গণমাধ্যম।