ইসরায়েলকে ড. ইউনূসের ১ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার তথ্যটি ভুয়া

ইসরায়েলকে ১ হাজার কোটি টাকা সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সম্প্রতি মুফতি আলাউদ্দিন জিহাদী নামের এক বক্তা তার এক বয়ানে এ অভিযোগ করেছেন। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং দাবি করছে, ইসরায়েলকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের টাকা দেওয়ার তথ্যটি ভুয়া।
রবিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ফ্যাক্ট বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, ওই মুফতির ভুয়া বক্তব্য আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা প্রচার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। এ ধরনের মিথ্যা ও বানোয়াট প্রচারণা মূলত অধ্যাপক ইউনূস ও তার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে চলমান সংঘবদ্ধ ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের অংশ।
স্বতন্ত্র ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, প্রফেসর ইউনূসের প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ আমেরিকার ইসরায়েলকে ১ কোটি ডলারের সহায়তার বিষয়টি সর্বপ্রথম ২০২৩ সালের অক্টোবর বাংলা ইনসাইডার নামের একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত হয়। পরে তা আরো কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এ বিষয়ে অনুসন্ধান করে ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানার।
রিউমার স্ক্যানারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২৩ সালের অক্টোবরে যখন ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা শুরু হয়, সে সময় বাংলাদেশে প্রচার করা হয় যে, ইসরায়েলকে ১০০ কোটি টাকা সহায়তা দিয়েছেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অনুসন্ধানে জানা যায়, আওয়ামী লীগের প্রোপাগান্ডা সাইট হিসেবে পরিচিত অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ইনসাইডারের সে বছরের ১৩ অক্টোবরের একটি প্রতিবেদন থেকে আলোচিত অভিযোগটি ছড়িয়ে পড়ে। ওই প্রতিবেদনে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বিবৃতির বিষয়ে বলা হলেও ওই মন্ত্রণালয় থেকে সে সময়ে প্রকাশিত কোনো বিবৃতিতে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ওই বিষয়ে কোনো বিবৃতি প্রকাশিত হয়নি বলে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও রিউমার স্ক্যানারকে নিশ্চিত করা হয়। তাছাড়া, ইসরায়েলের সাংবাদিক এবং ফ্যাক্ট চেকারও এমন কোনো অর্থ সহায়তার বিষয়ে অবগত নন বলে রিউমার স্ক্যানারকে জানান। একই সঙ্গে ইউনূস সেন্টারও বিষয়টি ভুয়া বলে জানায়।
এ অবস্থায় দেশের সব আলেম-ওলামা ও দায়িত্বশীল নাগরিকদের বিভ্রান্ত না হয়ে শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্টের চেষ্টায় লিপ্ত থাকা ব্যক্তিদের অপপ্রচার রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।