দেশে ব্যবহৃত স্মার্টফোনে ৪১ শতাংশই অবৈধ?

২৮ সাল নাগাদ বন্ধ হতে পারে টুজি, ৭ মাস পর এনইআইআর

২৪ এপ্রিল, ২০২৫  
২৪ এপ্রিল, ২০২৫  
২৮ সাল নাগাদ বন্ধ হতে পারে টুজি, ৭ মাস পর এনইআইআর

নেটওয়ার্ক জঞ্জাল কমাতে আগামী ২০০৮-২৯ সাল দেশে টুজি বন্ধ করার কথা ভাবছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন। সংস্থাটির পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪ সালে দেশের ৯৮ শতাংশ অঞ্চলে পৌঁছে গেছে ৪জি নেটওয়ার্ক। তবে এখনো ৪০ শতাংশ ব্যবহারকারী আছেন ২জি’র ফিচার ফোনে। আর বৈধভাবে বিক্রিত ৯৯% মোবাইল হ্যান্ডসেট এখন দেশেই উৎপাদিত হয়।  কিন্তু দেশে ব্যবাহৃত স্মার্টেফোনের মাত্র ৩৪ শতাংশ স্থানীয় ভাবে তৈরি। অথচ দেশের মোবাইল অপারেটদের নেটওয়ার্কে যুক্ত আছে ৪০ শতাংশ স্মার্টফোন।  অথচ ৪১ শতাংশ হ্যান্ডসেটই দেশে প্রবেশ করে অবৈধ পথে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের হিসাবে, অবৈধ পথে দেশে আসা মুঠোফোনের কারণে বছরে দুই হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারায় সরকার।

এই ধূসর বাজার গুড়িয়ে দিয়ে স্মার্টফোন নাগরিকের হাতের নাগালে আনতে কিস্তি সুবিধাসহ স্মার্টফোনের ব্যবহার বাড়াতে চায় বিটিআরসি। এজন্য দেশে ব্যবহৃত সব ফোন নিবন্ধনের আওতায় আনতে চায় সংস্থাটি। বিটিআরসি’র পর্যবেক্ষণ বলছে, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে স্মার্টফোনের ক্রয়ক্ষমতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বাধা হিসেবে রয়ে গেছে। কিস্তিতে ফোন কেনা সহজতর  করতে তাই সিম বা ডিভাইস লকিং সিস্টেম চালু করা দরকার। অর্থাৎ এক্ষেত্রে এনইআই চালুর বিকল্প নেই। 

ধারণা করা যাচ্ছে, চলতি মাসের তৃতীয় প্রান্তিকে দীর্ঘ তিন বছর ধরে চর্চিত এনইআইআর বাস্তবায়ন হতে পারে। দেশের স্থানীয় মেবাইল ফোন শিল্পখাতের সুরক্ষা এবং জাতীয় ও সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবার এনইআইআর এ ডিরেজিস্ট্রশন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। 

তবে আগামী ৭ মাস পর জানা যাবে কবে নাগাদ চালু হবে এনইআইআর। এজন্য এরইমধ্যে উন্মুক্ত টেন্ডার করা হয়েছে। আগামী ২৭ এপ্রিল খোলা হবে দরপত্র। এর ৯০ দিনের মধ্যে দেয়া হবে নোয়া। 

জানাগেছে, এবার মোবাইলের আইএমইআই নম্বর; এমএসআই তথা সিম নম্বর  এবং ডক আইডি অর্থাৎ জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদ এই তিনটি পরিচয় নম্বর যাচাই করে নিবন্ধিত হবে এনইআইআর। 

এনইআইআর চালু হলে মোবাইল ফোনের প্রকৃত ব্যবহারকারীর নামে হ্যান্ডসেট নিবন্ধন নিশ্চিত করা; মোবাইল ফোনের চুরি ও ক্লোনিং প্রতিরোধ করা; স্থানীয় হ্যান্ডসেট উৎপাদন শিল্পকে রক্ষা করা; অবৈধ হ্যান্ডসেটের অনুপ্রবেশ প্রতিরোধের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব নিশ্চিত করা; সংস্কারকৃত/ পুনঃব্যবহৃত হ্যান্ডসেট দিয়ে গ্রাহকদের কাছে প্রতারণামূলক বিপণন বন্ধ করা; মোবাইল ফোনের প্রকৃত ব্যবহারকারীর তথ্য প্রদানের মাধ্যমে আইন-প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহকে সহায়তা প্রদান সম্ভব হবে বলে মনে করেন  বিটিআরসি’র   মহাপরিচালক (স্পেকট্রাম) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিনুল হক। 

প্রসঙ্গত, দেশে মোবাাইল সিম পেনিট্রেশনের হার ১০৩ শতাংশ হলেও এশিয়া-প্যাসিফিক (এপিএসি) অঞ্চলের সমকক্ষ অর্থনীতির তুলনায় দেশে স্মার্টফোন ব্যবহারের হার ৬০ শতাংশের কম। এই ব্যবধানটি মূল নাগরিকদের প্রয়োজনীয় ডিজিটাল পরিষেবা গ্রহণে বাধা সৃষ্টি করে দেশে ডিজিটাল বৈষম্য সৃষ্টি করছে।