প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে আলিফ ওয়ার্ল্ড ই-কমার্স ও আলিফ ওয়ার্ল্ড মার্কেটিং লিমিটেডচেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট ১৭ ডিসেম্বর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ১৮ ডিসেম্বর এই খবর নিশ্চিত করে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসিম উদ্দিন খান জানান, প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. আয়নাল হক (৬৮) এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আলিফ ওয়ার্ল্ড ডট কম-এর স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম রয়ন (৩০) পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণার মাধ্যমে মোট ২ কোটি ৮৭ লাখ ২৮ হাজার ৬৭০ টাকা আত্মসাৎ করে মানিলন্ডারিং কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন এমন অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা তদন্তে পাওয়া গেছে।
তদন্তে উঠে আসে, অভিযুক্তরা আলিফ ওয়ার্ল্ড মার্কেটিং লিমিটেডের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রির আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন প্রচার করতেন। প্রচারণায় বলা হতো, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ১ লাখ ০৮ হাজার ৫৪০ টাকা ফস্টার পেমেন্ট নামক পেমেন্ট গেটওয়ে অথবা কোম্পানির ব্যাংক হিসাবে জমা দিলে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে পালসার ডাবল ডিস্ক মোটরসাইকেল সরবরাহ করা হবে।
এ প্রচারণায় বিশ্বাস করে অসংখ্য গ্রাহক ফস্টার পেমেন্ট গেটওয়ে ও কোম্পানির বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে অর্থ দেন। তবে অল্প কয়েকজন গ্রাহক পণ্য পেলেও অধিকাংশ গ্রাহক নির্ধারিত সময় পার হওয়ার পরও কোনও পণ্য পাননি। পরে অভিযুক্তরা পণ্য সরবরাহ কিংবা অর্থ ফেরত না দিয়ে অফিস বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যান।
প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে সিআইডি বাদী হয়ে মানিলন্ডারিং মামলা করে তদন্ত শুরু করে। তদন্তকালে ব্যাংক হিসাব বিবরণী, গ্রাহকদের অর্ডার ও ইনভয়েস, ভিকটিমদের জবানবন্দিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নথি পর্যালোচনা করে দেখা যায়— আত্মসাৎ করা অর্থ নগদ উত্তোলন, নিজস্ব ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর এবং ভোগ-বিলাসে ব্যয়ের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং করা হয়েছে।
সিআইডির তদন্তে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) অনুযায়ী প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎকে সম্পৃক্ত অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট ধারায় অপরাধ সংঘটনের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়।
সিআইডি জানায়, অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অজ্ঞাত সহযোগীদের শনাক্তকরণ এবং অন্যান্য আইনানুগ প্রক্রিয়ার স্বার্থে তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।