এবার প্রশাসনিক কাজে বিরত থাকার ঘোষণা কুয়েট শিক্ষকদের

১৮ মে, ২০২৫  
১৮ মে, ২০২৫  
এবার প্রশাসনিক কাজে বিরত থাকার ঘোষণা কুয়েট শিক্ষকদের

একাডেমিক কার্যক্রমের পর খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষকেরা প্রশাসনিক কাজে সহযোগিতা থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংঘর্ষ ও শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় দোষীদের বিচার কার্যক্রম আগামীকাল সোমবার (১৯ মে) দুপুর ১২টার মধ্যে শেষ না হলে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমের পাশাপাশি সব ধরনের প্রশাসনিক কার্যক্রম বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষক সমিতি।

এর আগে শিক্ষকরা তাদের দাবির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক করেন।

পরে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে ড. মো. ফারুক হোসেন বলেন, আইনের বাইরে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন দোষীদের বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত করে রেখেছে। যার কারণে কুয়েটের শিক্ষা কার্যক্রম সংকটের মধ্যে পড়েছে। মাত্র কয়েকজন শিক্ষার্থীর স্বার্থ রক্ষায় ও উপর মহল নামক অদৃশ্য শক্তিকে তুষ্ট করছে বর্তমান প্রশাসন। সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে প্রশাসন কোনো সন্তোষজনক সিদ্ধান্ত না নিলে উপাচার্যের কার্যালয়ে অবস্থান ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষক সমিতি।

অপর দিকে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু, নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠনসহ পাঁচ দফা বাস্তবায়নের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আবারও আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন।

আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দায় স্থাপিত সংগ্রাম মঞ্চে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। কাল রোববার শিক্ষার্থীরা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. রাহাতুল ইসলাম বলেন, দ্রুত একাডেমিক কার্যক্রম শুরু, আগে গঠিত তদন্ত কমিটি বাতিল করে নতুন নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন এবং তাদের পাঁচ দফা বাস্তবায়নের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

তথ্যমতে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলায় কুয়েটের দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। টানা প্রায় তিন মাস ধরে বন্ধ থাকে সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম। শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। পরে তাঁরা ওই দাবি থেকে সরে উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সরকার উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাসুদকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়।

সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৪ মে থেকে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত একাডেমিক কার্যক্রমে না ফেরার ঘোষণা দেন শিক্ষক সমিতির নেতারা। ৫ মে ব্রিফিং করে লাঞ্ছনার ঘটনায় জড়িতদের বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে সাত কার্যদিবসের আলটিমেটাম দেন শিক্ষক নেতারা।

তদন্ত কমিটি ৩৭ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে। পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবারও ওই ৩৭ শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেয়।

এরপর শিক্ষার্থীরা আবার ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ ছাড়া আগের তদন্ত কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের দাবিতে ১৩ মে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।