মানুষের কবজি কেটে টিকটক-রিল বানাতো ‘কবজি কাটা গ্রুপ’!

২০২৪ সালে মানুষের কবজি কেটে ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে নিজেকে কবজি কাটা গ্রুপের প্রধান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে ‘শ্যুটার, আনোয়ার। কবজি কাটার ভিডিওটি টিকটক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করতো তার গড়া ‘কব্জি কাটা’ গ্রুপটি। কবজি কাটা ভিডিও টিকটকে ছড়িয়ে পড়লে আনোয়ার ও তার সহযোগীদের কুখ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে ।
সেই কুখ্যাতির ভয়ে মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান, চাঁদ উদ্যান, নবীনগর হাউজিং, চন্দ্রিমা হাউজিং ও আদাবরের শ্যামলী হাউজিং, শেখেরটেক, নবোদয় হাউজিং এলাকায় হত্যা, অস্ত্র-গুলি, মাদক কেনাবেচা, চাঁদাবাজি ও ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে কবজি কাটা আনোয়ার গ্রুপ বাহিনী।
পরবর্তীতে বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরে এলে ধারাবাহিক অভিযানের মুখে বাহিনীর অন্যতম সদস্য ভাগ্নে বিল্লালসহ আরও অনেকে গ্রেফতার হয়। এরপর আনোয়ার নিজের পূর্বের লেবাস পরিবর্তন করে আত্মগোপনে থেকে কবজি কাটা গ্রুপের নামে দুর্ধর্ষ এক বাহিনী গড়ে তোলে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আলোচিত সন্ত্রাসী কবজি কাটা গ্রুপের প্রধান মো. আনোয়ার ওরফে শুটার আনোয়ার ওরফে কবজি কাটা আনোয়ারকে (৩৬) গ্রেফতার করেছে র্যাব। তাকে ছাড়াও আদাবর থেকেগ্রেফতার করা হয় তার দুই সহযোগী মো. ইমন (২০) এবং মো. ফরিদকে (২৭)।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানান র্যাব-২ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি খালিদুল হক হাওলাদার।
তিনি বলেন, র্যাবের হাতে গ্রেফতারের পর আনোয়ার স্বীকার করেছে তিনজনের কবজি কেটেছে। কিন্তু র্যাবের তদন্তে বেরিয়ে আসে আনোয়ার ৭ জনের কবজি কেটেছে। টার্গেট ব্যক্তির ওপর হামলা ও ছিনতাইয়ের সময়ে আনোয়ারের স্টাইল হলো, যে ব্যক্তির ওপর হামলা করা হবে তার আশেপাশের রাস্তায় কৃত্রিম যানজট সৃষ্টি করে। এরপর তারা যানজট কমাতে সহযোগিতা করার নামে কৃত্রিম ব্লক সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে আনোয়ার এসে টার্গেট ব্যক্তির ওপর হামলা করে। পাশাপাশি সে আসার আগে সামনে ও পেছনে একাধিক টিম থাকে।
এক প্রশ্নের জবাবে র্যাব-২ এর অধিনায়ক বলেন, গত ৫ আগস্টের পর যৌথ বাহিনীর অভিযানে পাঁচ শতাধিক ছিনতাইকারী গ্রেফতার করেছি।মোহাম্মদপুরে অপরাধের সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনা হবে। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়- দেশীয় অস্ত্র সামুরাই একটি, ছুরি দুইটি, গাঁজা ৮ কেজি, একটি প্রাইভেটকার ও একটি হাতঘড়ি।