স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করতে চায় চীন: রাষ্ট্রদূত
ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, চীন স্বাস্থ্যসেবা খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা গভীর করতে ইচ্ছুক— এটি দুই দেশের মধ্যে সমন্বিত কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারত্বের ক্ষেত্রে একটি নতুন আলোচ্য বিষয় করে তুলবে এবং উভয় দেশের জনগণের জন্য আরও সুবিধা বয়ে আনবে।
৩১ আগস্ট, রবিবার চীনের সহায়তায় বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, জাতীয় উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে স্বাস্থ্যসেবা অত্যাবশ্যক। রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার চালু করা দুই দেশের নেতাদের মধ্যে অর্জিত গুরুত্বপূর্ণ ঐকমত্য বাস্তবায়নে একটি দৃঢ় পদক্ষেপ এবং এটি চীন-বাংলাদেশ চিকিৎসা সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চীন সরকারের সহায়তায় নির্মিত এই পূর্ণাঙ্গ রোবোটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারকে দক্ষিণ এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম সেন্টার, যা বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং স্নায়ুবিক জটিলতায় ভোগা অসংখ্য মানুষের জীবনে আশার আলো হয়ে উঠবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম রোগীদের পুনর্বাসন ও বাংলাদেশের চিকিৎসার মান উন্নয়নে রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারের অপরিহার্য ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বাংলাদেশের সবচেয়ে সংকটময় সময়ে সবসময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য চীনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করতে আরও সহযোগিতার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নূরজাহান বেগম বলেন, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা যখন চীন সফরে গিয়েছিলেন, তখন বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে এক হাজার শয্যার হাসপাতাল রংপুরে নির্মাণের বিষয়ও রয়েছে। সেই সফরে জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসার জন্য মাত্র ১০-১২টি রোবট চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু চীন আমাদের ৫৭টি রোবট উপহার দিয়েছে, যা সত্যিই অপ্রত্যাশিত। একইসঙ্গে ২৯ জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীকে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণও দিয়েছে তারা। এটি প্রমাণ করে-বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্ক কতটা গভীর ও সহযোগিতামূলক।
তিনি আরও বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানসহ দেশের বড় বড় দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসায় চীনের এই সহায়তা আমাদের জন্য মাইলফলক হয়ে থাকবে। এই রোবোটিক সেন্টার যেন শুধু ঢাকায় সীমাবদ্ধ না থাকে, বরং সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া যায়-এ বিষয়ে আমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।







