‘মস্তিষ্ক হ্যাক’ এর দাবি কুতুবদিয়ার হারুনুর রশিদের

মস্তিষ্কে ক্ষুদ্র ইলেকট্রনিক ডিভাইস বসিয়ে ‘হ্যাক’ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কক্সবাজারের কুতুবদিয়ার আলী আকবার ডেইল ইউনিয়নের সিকদারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য হারুনুর রশিদ (৩৪)। তার মতো আরো অনেকেই এরকম ‘সাইকোট্রনিক উইপন’- এ আক্রান্ত বলে দাবি করেছেন তিনি। তাই জনস্বার্থে বিষয়টি নিয়ে সরকারের কাছে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে তার মাথার পেছনে স্থাপিত এমন একটি ‘চিপ’ অপসারণে সরকারে সহযোগিতাও প্রত্যাশা করেছেন তিনি।
৫ সেপ্টেম্বর, রবিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি হলে সংবাদ সম্মেলন করে এই সহায়তা চেয়েছেন তিনি। এসময় তার আইনজীবি শাহরিয়ার তুহিন উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে হারুন জানান, কয়েক বছর আগে শ্বশুরবাড়িতে থাকার সময় বিদেশি এক ‘ব্রেন হ্যাকার’ চক্র দেশীয় সহযোগীদের সহায়তায় তাকে অজান্তে ইনজেকশন পুশ করে মাথায় ক্ষুদ্র ইলেকট্রনিক ডিভাইস বা নিউরোচিপ বসিয়ে দেয়। চা পান করার পর তিনি কয়েক ঘণ্টা অচেতন হয়ে পড়েন। জেগে ওঠার পর মাথায় ব্যথা ও হালকা রক্তপিণ্ডের মতো কিছু লক্ষ্য করেন। এরপর থেকেই তিনি কানে অচেনা কণ্ঠের ‘গায়েবি আওয়াজ’ শুনতে পান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এলোমেলো হয়ে যায় এবং ব্যবহৃত স্মার্টফোনে অজানা অ্যাপস স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডাউনলোড হতে থাকে। কয়েক দফায় তার ব্যাংক হিসাব থেকেও অর্থ গায়েব হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
হারুনুর রশিদ বলেন, কোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোন হাতে নিলেই আমার শরীর হালকা কেঁপে ওঠে। আমার স্পর্শ করা ফোন মুহূর্তেই অন্য কারও নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। এতে হ্যাকাররা আমার সব তথ্য ও অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। আমি শুধু নিজের জন্য নয়, এই অদৃশ্য সাইবার অপরাধ চক্রের হাত থেকে অসংখ্য মানুষকে রক্ষা করার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সাংবাদিকরা চাইলে গভীরভাবে তদন্ত করে সত্য উদঘাটন করতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, ঘটনাটির পর তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন। তার মাথার অক্সিপেটাল হাড়ের কাছ থেকে একটি ক্ষুদ্র ‘ফরেইন বডি’ও পাওয়া গেছে বলে দাবি জানান তিনি। বলেন, ডিভাইসটির আকৃতি কয়েকটি চালের দানার মতো, ওপরের অংশ স্টেইনলেস স্টিলের মতো চকচকে এবং তাতে চৌম্বকীয় শক্তি রয়েছে।
তার আইনজীবী শাহরিয়ার তুহিন সংবাদ সম্মেলনে জানান, দুটি পৃথক অস্ত্রোপচারের সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন এবং দ্বিতীয় অপারেশনে ক্ষুদ্র ওই ডিভাইসটি উদ্ধার করা হয়। এর ভিডিও ফুটেজও সংরক্ষিত রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
আইনজীবী বলেন, উন্নত দেশগুলোতে গুপ্তচরবৃত্তির পর্যায়ে এ ধরনের প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা চলছে। শুরুতে বিশ্বাস করা কঠিন হলেও ইন্টারনেটে খুঁজে এ বিষয়ে অনেক তথ্য পাওয়া গেছে।
বর্তমানে বিষয়টি চট্টগ্রামের বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন এবং তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিআইডিকে।
সংবাদ সম্মেলনে হারুনুর রশিদ দাবি করেন, আমি শুধু নিজের জন্য নয়, এ অদৃশ্য সাইবার অপরাধচক্রের হাত থেকে অসংখ্য মানুষকে রক্ষা করার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সাংবাদিকরা চাইলে গভীরভাবে তদন্ত করে সত্য উদঘাটন করতে পারেন।