প্রকিউরমেন্টে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের সুযোগ সৃষ্টির পরামার্শ
পরনির্ভরশীলতা ও হীনমন্যতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে

প্রযুক্তি খাতের সরকারি ক্রয়নীতিতে দেশী প্রতিষ্ঠানগুলোর সুযোগ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। তিনি বলেছেন, প্রকিউরমেন্টে অনেকক্ষেত্রে ৬০ বছরের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়। কিন্তু আমাদের দেশের বয়সও তা নয়। ফলে এসব কাজ বিদেশের হাতে চলে যায়। এ অবস্থার অবসান হওয়া দরকার। আমাদের নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে হলে সরকারি কেনাকাটায় দেশেী প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতে হবে।
১৮ অক্টোবর, শনিবার ঢাকার ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি) ক্যাম্পাসে প্রথম ‘বাংলাদেশ আইসিটি অ্যান্ড ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ডস ২০২৫’ অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে সম্মাননা তুলে দেয়ার আগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটির স্কুল অব সোশ্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড সাইকোলজি এবং অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স ফোর্স অ্যাকাডেমি, ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলসের স্কুল অব বিজনেসে একযোগে অতিথি অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত অবস্থায় জুলাই অভ্যুত্থানের পর দেশে ফিরে অন্তর্বর্তী সরকারের যুক্ত হওয়া এই প্রবীন অধ্যাপক বেশ কিছু অপ্রিয় সত্য তুলে ধরেন তার বক্তব্যে।
বিভিন্ন দাতাগোষ্ঠি থেকে ঋণ সহায়তা নেয়ার বিষয়ে নিরুৎসাহিত করে আনুসুজ্জামান বলেন, পরনির্ভরশীলতা ও হীনমন্যতা আমাদের পিছিয়ে দিয়েছে। এসব কারণেই আমাদের দাতাদের প্রেসক্রিপশনে চলতে হয়। আমরা নিজেদের মতো চলতে পারি না।
‘উদ্ভাবন শুধু প্রযুক্তি নির্ভর নয়। এটা হচ্ছে একটা থট প্রসেস’- যোগ করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, আমাদের চিন্তা-চেতনার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। এই যেমন আমরা এখানে অনুষ্ঠানের নামাজের সময় একটু বিরতি দিতে পারি না। আবার আমরা আল্লাহু আকবর বলি। কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নামজ ঘরগুলো থাকে নিচে। আবার নাম করণের সময় আমরা আমেরিকান, ডাচ, লঙ্কা ব্যবহার করে তারপর বাংলাদেশ ব্যবহার করি। এটি আমাদের হীনমন্যতা এবং পরনির্ভরশীলতার পরিচয়। আমাদের এখান থেকে চিন্তা-চেতনা ও মননে বের হয়ে আসতে হবে। আমাদের ভবিষ্যতের মানুষ হতে হবে। তা না হলে কোনো উদ্ভাবন বা প্রযুক্তিই আমাদের উন্নতি ঘটাতে পারবে না। ডিন-ভিসি নির্বাচনে নির্বাচন নয়; যোগ্যাতার ভিত্তিতে দায়িত্ব অর্পন করতে হবে। তাহলেই একটি স্বাধীন সত্তার নাগরিক গড়ে ওঠবে। পৃথিবীর অনেক বিশ্বিবিদ্যালয়ে আমি পড়িয়েছি। কিন্তু কোথাও আমাদের দেশের মতো শিক্ষকদের নির্বাচন দেখিনি।