প্রস্তাবিত নেটওয়ার্ক টপোলজি নিয়ে জরুরী সভায় ইন্টারনেট ব্যবসায়ীদের ঘোরতর আপত্তি

লাইসেন্স নীতিমালা সংশোধন করছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়নন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। প্রস্তাবিত নতুন নীতিমালার ন্যাশনাল কানেক্টিভিটি সার্ভিস লাইসেন্সের অধীনে থাকছে ছয়টি ধাপ। এগুলো হলো- আন্তর্জাতিক সংযোগ, জাতীয় সংযোগ সেবা. জাতীয় অবকাঠামো সেবাকে উন্মুক্ত লাইসেন্সের অধীনে আনা হয়েছে। তবে জাতীয় অবকাঠামোকে অপর লাইসেন্সধারীদের অধীনে তালিকাভুক্ত হয়ে সেবা দেয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।
এতে করে মোবাইল সেবা দেয়ার লাইসেন্সপ্রাপ্তরা আগামীতে ফিক্সড কানেক্টিভিটিতেও ভাগ বসাবে। এতে শতভাগ দেশীয় উদ্যোক্তাদের তিল তিল করে গড়ে তোলা এবং সবচেয়ে কম দামে দেশজুড়ে এক দেশ এক রেটে ইন্টারনেট সেবা দেয়া ব্রডব্যান্ড ফিক্স ইন্টারনেট সেবাদাতারা বিদেশী বহুজাতিক টেলিকম সেবাদাতা মোবাইল অপারেটরদের পেটে চলে যাবে বলে শঙ্কা করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
প্রস্তাবিত লাইসেন্স রেজিমে একীভূত অ্যাক্সেস সেবা/বা সেলুলার মোবাইল সেবা নামে রাখা হয়েছে মোবাইল অপারেটরদের। এর পরেই ফিক্সড টেলিকম সেবার অধীনে দুইটি ধাপে সেবা দেয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। জাতীয় পর্যায়ে লাইসেন্সধারী আইএসপি এবং উপজেলা ও থানা পর্যায়ে লাইসেন্সধারীদের অধীনে তালিকাভুক্তি হয়ে ব্রডব্যান্ড সেবা দিতে পারবেন বিদ্যমান ক্যাটাগরি, ডিস্ট্রিক এবং জোনাল লাইসেন্সধারীরা। একই নিয়মে চলবে টিভিএস সেবা।
এই সুপারিশ বিদ্যমান আইএসপিদের অবস্থান ও বিনিয়োগ এর কি হবে তা স্পষ্ট নয় উল্লেখ করে এই নেটওয়ার্ক টপোলজির বিরুদ্ধে ঘোরতর আপত্তি করেছেন দেশের ইন্টারনেট ব্যবসায়ীরা। সোমবার বিটিআরসি’তে এ নিয়ে অনুষ্ঠিত কনসাল্টেশন বৈঠক শেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিয়ে জরুরী বৈঠক করেছেন ইন্টারনেট ব্যবসায়ীরা। রাজধানীর বনানীতে আইএসপিএবি কার্যালয়ে দুই ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত এই জরুরী সাধারণ সভায় প্রস্তাবিত লাইনেন্স সুপারিশে নিজেদের অবস্থান সুস্পষ্ট করতে বিটিআরসি’র কাছে দাবি জানানো হয়। দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে সেবা দেয়া ২০০০ এর মতো ইন্টারনেট সেবাদাতাদের মধ্যে ৭০ জনের মতো এই সাধারণ সভা অংশ নেন।
বৈঠকে আইএসপিএবি’র বর্তমান ও সাবেক কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্যরা বক্তব্য রাখেন। প্রস্তাবিত লাইসেন্স নীতিমালার বিভিন্ন দুর্বলতা ও অস্পষ্টতা তুলে ধরে আনোয়ার আহমেদ মিঠু, তালাত মাহমুদ তোশান, রাইসুল ইসলাম তুহিন, নাসির উদ্দিন, শরফুদ্দিন ফুয়াদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বৈঠকে দ্রুতসময়ের মধ্যে নিজেদের আপত্তিগুলো লিখিত আকারে বিটিআরসি-তে জমা দিতে একটি টেকনিক্যাল কিমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। একইসঙ্গে প্রস্তাবনায় নিজেদের মত না এলে বিটিআরসি’র সামনে অবস্থান ধর্মঘটসহ কঠোর কর্মসূচির আগাম প্রস্তুতি নিতে ইন্টারনেট ব্যবসায়ীদের একতাবদ্ধ হওয়ার ডাক দেয়া হয়েছে।
ওদিকে ফিক্সড ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসায় মোবাইল অপারেটরদের প্রবেশের সুযোগ করে দেয়া হলে তা দেশের জন্য আত্মঘাতি এবং ইন্টারনেট সেবা খাতে বিদেশীদের একচেটিয়া বাজারে পরিণত করার সামিল হবে বলে সরকারকে সতর্ক করেছেন এই খাতের সাড়ে তিন হাজার নিবন্ধিত উদ্যোক্তা।