আগামী দুই-তিনমাসের মধ্যে ইন্টারনেট দাম কমবে: আসিফ মাহমুদ

ইন্টারনেটের দাম কমিয়ে জনগণের ব্যবহার উপযোগী করার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
শনিবার (১৭ মে) রাজধানীর বিটিআরসি ভবনে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবসের উদ্বোধনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এই আহ্বানা জািনিয়েছেন তিনি। অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিটিআরসি বিটিআরসি চেয়ারম্যান অব. মেজর জেনারেল এমদাদ উল বারী। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন আইসিটি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব জহিরুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ইন্টারনেট দাম কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আইআইজি ও এনটিটিএন পর্যায়ে দাম কমানো হয়েছে। আগামী দুই এক মাসের মধ্যে গ্রাহক তার সুফল পাবে। তবে ইন্টারনেটের দাম কিভাবে আরও কমানো যায়, জনগণের ব্যবহার উপযোগী করা যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষায় ইন্টারনেট ব্যবহারে আমরা অনেক এগিয়ে গেছি, তবে কৃষি ও স্বাস্থ্যে অনেক পিছিয়ে রয়েছি। এই দুই খাতে ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, দেশে বন্যা ও ঝড়ের সময় মোবাইল ইন্টারনেট ব্যহত হয়। বন্যা ও ঝড় আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। তবে সেই সময়ে ইন্টারনেট সেবা কিভাবে নিশ্চিত করা যায় তা ভাবতে হবে।দুর্যোগের সময় কিভাবে টেলিযোগাযোগ যেন নির্বিঘ্ন থাকে, সেই উদ্যোগ নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট করে দিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা চালানো হয়েছিলো। আমরা তখন জানতে পারিনি তখন কি হয়েছিলো। পরে ইন্টারনেট আসার পরে আমরা জেনেছে। ইন্টারনেটকে নাগরিক অধিকার হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা করে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া করা হয়েছে। এটি এই সরকারের একটি বড় অর্জন।
আসিফ মাহমুদ ভূঁইয়া বলেন, তথ্য প্রযুক্তি খাতে অনেক দেশি উদ্ভাবক সুযোগ সুবিধার অভাবে দেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনই এই খাতের নতুন নতুন ইনোভেশনের খবর শুনি৷ সেখানে আমরা কতোটুকু কন্ট্রিবিউট করছি সেটা প্রশ্ন সাপেক্ষ। থ্রি জি, ফোরজি ও ফাইভ জির ক্ষেত্রেও একই। প্রযুক্তি ইনোভেশনের ক্ষেত্রে তরুণ প্রজন্মকে আরও বেশি সম্পৃক্ত হতে হবে। তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তি ও ইন্টারনেটের নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। সাইবার স্পেসে নারীদের নিরাপত্তা দিতে আমরা ব্যর্থ হচ্ছি, সেটি স্বীকার করতে আমাদের দ্বিধা নেই। সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ আইনটি পাস হলে সাইবার স্পেস নারীদের জন্য আরও বেশি সুরক্ষিত হবে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, দেশের আইসিটি খাতে নারীদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করতে সরকার কাজ করছে। সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ আইনটি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পাস হবে। তখন সাইবার স্পেসে নারীদের সুরক্ষা দিতে সক্ষম হবো।
তিনি বলেন, ন্যাশনাল ইনোভেশন চ্যালেঞ্জে নারী উদ্যোক্তা ও কর্মীদের প্রাধান্য দেওয়া হবো। সবুজ পাতা নামের যে উদ্যোগ সেখানেও নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, 'ডিজিটাল রূপান্তরে নারী-পুরুষ সমতায়ন’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ১৭ মে দেশে পালিত হচ্ছে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস। দিবসটি উপলক্ষ্যে সভা সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া বিটিআরসি প্রাঙ্গণে মেলা, ডাক টিকেট অবমুক্তকরণ ও হ্যাকাথন প্রতিযোগিতার আয়োজন রয়েছ।
এদিকে, দিবসটি উপলক্ষ্যে বিটিআরসি ভবন নানা ব্যানার ও ফেস্টুনে সেজেছে৷ দিনব্যাপী আয়োজনে রয়েছে মেলার আয়োজনও।