অনুমতি ছাড়া গান ব্যবহারে
গ্রামীণফোনকে আইনি নোটিশ, দাবি ২০ কোটি
বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের কপিরাইটকৃত গান অনুমতি ছাড়াই বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করেছে দেশের শীর্ষ মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন। এমন অভিযোগে গায়কের ছেলে ছেলে শাহ নূরজালালের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটিকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাজিন আহমেদ।
এ বিষয়ে শাহ আবদুল করিমের ছেলে শাহ নূরজালাল গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমরা গ্রামের মানুষ আইন খুব একটা বুঝি না। কিন্তু এটা বুঝি, বাবার গান কেউ ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করলে আমাদের অনুমতি নেওয়া উচিত ছিল। সেই গান থেকে আয় হলে, আমাদেরও তো একটা প্রাপ্য থাকে।’
গত ২৭ আগস্ট গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমানের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে এ নোটিশ প্রদান করেন আইনজীবি। গ্রামীণফোনকে সাতদিনের সময় দিয়ে নোটিশে দাবি পূরণ ব্যাতিরেকে কপিরাইট আইন, ২০২৩ অনুযায়ী দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা করার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আইনজীবি ব্যারিস্টার রাজিন আহমেদবলেছেন, ‘‘শাহ আবদুল করিমের গান কেবল সংগীত নয়—এগুলো বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের অংশ। ‘রঙিলা বাড়ৈ’, ‘কোন মিস্তরি নাও বানাইছে’ দুটি গান ব্যবহার করেছে গ্রামীণফোন। অনুমতি ছাড়া বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার কেবল অবৈধ নয়, বরং চরম অসম্মানজনক। আমরা তার উত্তরাধিকার রক্ষায় আইনের সর্বোচ্চ ব্যবস্থাই গ্রহণ করবো।’’
আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, গ্রামীণফোন অনুমতি, লাইসেন্স বা স্বীকৃতি ছাড়া শাহ আবদুল করিমের কপিরাইটকৃত গান টেলিভিশন বিজ্ঞাপন ও ডিজিটাল বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করেছে—এর মধ্যে রয়েছে ২০১৬ সালের একটি টিভিসি (ইউটিউবে আপলোডকৃত) এবং ২০২২ সালের একটি বিজ্ঞাপন (ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রচারিত)। এতে আরও উল্লেখ করা হয়, এ ধরনের ব্যবহার কপিরাইট আইন এবং শিল্পীর নৈতিক অধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
নোটিশে গ্রামীণফোনকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সব অনলাইন ও অফলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে ওই গানসম্বলিত কনটেন্ট সরিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে শাহ আবদুল করিমকে যথাযথভাবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। ক্ষতিপূরণ হিসেবে চাওয়া হয়েছে ২০ কোটি টাকা। প্রতিটি গানের জন্য ১০ কোটি করে এই ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, কপিরাইটকৃত সংগীতকর্ম অনুমতি ছাড়া পুনরুৎপাদন ও সম্প্রচার। শাহ আবদুল করিমকে কৃতিত্ব না দিয়ে তার নৈতিক অধিকারের লঙ্ঘন। জিপির ফোরজি প্রচারণায় ব্যাপক বাণিজ্যিক লাভসহ সংগীতকর্মের অতিরিক্ত বাণিজ্যিক ব্যবহার। প্রকৃত কপিরাইটধারীর ক্ষতির বিনিময়ে অন্যায়ভাবে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ।
এতে আরও বলা হয়েছে, যদি গ্রামীণফোন ৭ দিনের মধ্যে উল্লিখিত দাবি পূরণে ব্যর্থ হয়, তবে শাহ আবদুল করিমের পরিবার কপিরাইট আইন, ২০২৩ অনুযায়ী দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা করবে। এর মধ্যে ক্ষতিপূরণ দাবি, অবৈধ কনটেন্ট ধ্বংস, আদালতের নিষেধাজ্ঞা এবং গ্রামীণফোনের পরিচালক ও কর্মকর্তাদের ফৌজদারি দায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
তবে গ্রামীণ ফোন তাৎক্ষণিক ভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে ২ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার জানাবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।







