ডিজিটাল সেন্টার মানবকেন্দ্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক: ফরাসি রাষ্ট্রদূত
ফ্রান্সের বাংলাদেশস্থ রাষ্ট্রদূত জ্যাঁ-মার্ক সেরে-শারলে রংপুর সদরের `সদ্য পুষ্করনী ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার' পরিদর্শন করে এটুআই এর ডিজিটাল সেন্টারগুলোকে “মানবকেন্দ্রিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও দক্ষ” বলে প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, “গ্রামীণ জনগণের কাছে সরকারি ও বেসরকারি সেবা পৌঁছে দেওয়া শুধু দারুণ একটি ব্যবস্থা নয়, এটি সামাজিক ন্যায়ের বাস্তব চর্চা। ফ্রান্স এমন উদ্যোগকে সমর্থন করে এবং ভবিষ্যতেও করবে।”
২৭ জুন, সোমবার এটাই জানিয়েছে, ইউএনডিপি বাংলাদেশ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) যৌথভাবে পরিদর্শন কর্মসূচিটি আয়োজন করে। আর এটি বাস্তবায়ন করেছে এটুআই, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। এতে শহরের ওয়ার্ড থেকে দূরবর্তী ইউনিয়ন সবখানেই কীভাবে ডিজিটাল সেন্টার সেবাপ্রাপ্তি বদলে দিচ্ছে, তার উদাহরণ উপস্থাপন করা হয়।
ইউএনডিপি বাংলাদেশের রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ স্টেফান লিলার বলেন, “ডিজিটাল সেন্টার নাগরিককে শাসনব্যবস্থার কেন্দ্রে এনেছে। প্রক্রিয়া সহজিকরণ, সারাদেশে ডিজিটাল প্রবেশগম্যতা ও স্থানীয় উদ্যোক্তা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সময়, ব্যয় সাশ্রয় হচ্ছে, জনসেবায় আস্থা বাড়ছে।
উচ্চপর্যায়ের এই প্রতিনিধিদলে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের ইউনিট প্রধান (অতিরিক্ত সচিব) এ কে এম সোহেল; ইউএনডিপি বাংলাদেশের অ্যাসিস্ট্যান্ট রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ আনোয়ারুল হক; এটুআই হেড অব কমিউনিকেশনস মোহাম্মদ সফিউল আযম; ডিজিটাল সেন্টার লিড অশোক বিশ্বাস এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের হেড অব কমিউনিকেশনস মো. আবদুল কাইউম সহ অন্যান্যরা।
পরিদর্শনকালে ডিজিটাল সেন্টার ম্যানেজমেন্ট প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক সেবা প্রদর্শন করা হয় এজেন্ট ব্যাংকিং, হজ নিবন্ধন, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, ভূমিসংক্রান্ত সেবা ও বিএমইটি (BMET) কার্ড প্রদান। সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে গয়না বালা যিনি একজন প্রতিবন্ধী নাগরিক, বলেন, “আগে ছোটখাটো ব্যাংকিংয়ের জন্যও অন্যের ওপর নির্ভর করতে হতো। এখানে সেবাদাতারা সম্মানের সঙ্গে দিকনির্দেশনা দেন, কয়েক মিনিটেই কাজ হয়ে যায়। শহরে যেতে হয় না। মর্যাদা ও স্বনির্ভরতা দুটোই পেয়েছি।”
আরেক সেবাগ্রহীতা মো. রফিকুল ইসলাম সেদিনই হজ নিবন্ধন সম্পন্ন করেন, মো. কিবরিয়া একাধিক সেবা একসাথে নেন। অনুষ্ঠানে সেন্টারের অগ্রগতির উপস্থাপনা, সেবাগ্রহীতা–জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার আয়োজন করা হয়।
এটুআইয়ের ডিজিটাল সেন্টার উদ্যোগটি ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র হিসেবে শুরু হয়ে পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন ওয়ার্ডে সম্প্রসারিত হয়েছে। বর্তমানে দেশজুড়ে ৯,৫০০টির বেশি সেন্টার কার্যকর আছে এবং নিয়মিত নতুন সেবা যুক্ত হচ্ছে। আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে ৪,৮০০-এর বেশি সেন্টারে এজেন্ট ও মোবাইল ব্যাংকিং চালু রয়েছে। একসেবা (ekSheba) উদ্যোক্তা প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে স্থানীয় উদ্যোক্তারা ৩৯০-এর বেশি সেবা যেমন ভূমি, জাতীয় পরিচয়পত্র, ইউটিলিটি, লাইসেন্সিং, ভ্রমণ ও নিবন্ধন সেবা দিচ্ছেন। প্রবাসী কর্মীদের জন্য প্রবাসী হেল্প ডেস্ক সক্রিয় রয়েছে। পাশাপাশি স্কিলস ফিউশন সেন্টারে কম্পিউটার, আইসিটি ও ট্রেড কোর্সে তরুণদের দক্ষতা ও কর্মসংযোগ তৈরি হচ্ছে। এ সাফল্যের ভিত্তিতে সম্প্রতি ফিলিপাইনের বঙ্গসামোরো অঞ্চলে ডিজিটাল সেন্টার মডেলটি অনুকরণ করা হয়েছে।







