শেখ হাসিনার মৃত্যুর খবর গুজব
সোশ্যাল হ্যান্ডেলে ভাইরাল হওয়া আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার মৃত্যুর ফটোকার্ড, ভেরিফায়েড দলীয় ফেসবুক পেজে শেয়ার করা ছবি, দলের পক্ষ থেকে দেয়া শোক বার্তা- সবই গুজব। রিউমার স্ক্যানার এবং ফ্যাক্ট ওয়াচ উভয় ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠানই এই খবরের কোনো ভিত্তি নেই বলে প্রমাণ দিয়েছে।
রিউমার স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেকে দেখা গেছে, ছবিটির উৎস সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্রযুক্তির অপব্যবহার ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সম্পাদনার মাধ্যমে ছবিটি শেখ হাসিনার নামে প্রচার করা হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও নিশ্চিত করেছে, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ভাইরাল হওয়া ছবিটি শেখ হাসিনার নয়, বরং ভিন্ন এক নারীর ছবি এডিট করে বানানো হয়েছে। ছবিটির উৎস সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্রযুক্তির অপব্যবহার ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সম্পাদনার মাধ্যমে ছবিটি শেখ হাসিনার নামে প্রচার করা হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও নিশ্চিত করেছে, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর।
রিভার্স ইমেজ সার্চ ও ছবির মেটাডানা অনুয়ায়ী, দিল্লি বিমানবন্দরে হেঁটে যেতে বাধ্য করার পর হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করা ৮২ বছর বয়সী এক নারীর ছবিকে বিকৃত করে শেখ হাসিনার মৃত্যুর গুজব ছড়ানো হয়েছে। ২০২৫ সালের ১২ মে আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার আগে ঘটে এই ঘটনাটি। তাই ফ্যাক্টওয়াচের বিবেচনায় ভাইরাল ফটোকার্ডটি বিকৃত।
ফ্যাক্টওয়াচ তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, যমুনা টিভির আদলে ছড়িয়ে পড়া ফটোকার্ডটি প্রকাশের তারিখ হিসেবে ১৩ মে ২০২৫ উল্লেখ করা হয়। কিন্তু এই তারিখে যমুনা টিভির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে প্রকাশিত এমন কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও ফটোকার্ডে শেখ হাসিনার হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকার ছবি দাবিতে যেই ছবিটি ব্যবহার করা হয়েছে তার উৎস খোঁজার জন্য রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হয়। এর ফলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফার্স্টপোস্ট এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ২০২৫ সালের ৮ মার্চ প্রকাশিত একটি রিপোর্টে ভাইরাল ছবির মতো। সেখানে শেখ হাসিনা নয় বরং, ভিন্ন এক নারীকে দেখতে পাওয়া যায়। এই নারীর মুখের শেখ হাসিনার ছবি যুক্ত করে বিকৃত করা হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফার্স্টপোস্ট থেকে নেয়া হয়েছে ছবিটি।
এদিকে হিন্দুস্তান টাইমসের প্রকাশিত আরেকটি রিপোর্ট থেকে জানা যায়, আলোচিত এই নারীর নাম রাজ পাসরিচা, যিনি ভারতীয় এক সেনা কর্মকর্তার বিধবা স্ত্রী। ৪ মার্চ এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটে বেঙ্গালুরু যাচ্ছিলেন রাজ পাসরিচা। তিনি একটি হুইলচেয়ার আগে থেকে বুক করেছিলেন, যা এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে। কিন্তু পরিবার বিমানবন্দরে পৌঁছালে, এয়ার ইন্ডিয়া অনুরোধকৃত হুইলচেয়ারটি সরবরাহ করেনি। এই তথ্যের সোর্স হিসেবে তার নাতনি পারুল কানওয়ারের এক্স-এ করা একটি পোস্টকে ব্যবহার করা হয়।
রাজ পাসরিচার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার অনেক পরে আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়। পাশাপাশি ভিন্ন এক নারীর স্থানে শেখ হাসিনার ছবি ব্যবহার করে বিকৃত করা হয়েছে। অন্যদিকে, মূলধারার কোনো সংবাদমাধ্যমেও শেখ হাসিনার মৃত্যু সম্পর্কিত নির্ভরযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।







