আইওটি-তে বদলে যাবে বাংলাদেশ!

সালেহ মোবিন
২৮ অক্টোবর, ২০২৫ ০৭:৩৫  
আইওটি-তে বদলে যাবে বাংলাদেশ!

বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেটের বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে নতুন এক বিপ্লব- ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি)। এই বিপ্লবে এরই মধ্যে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশও। আজকের দিনে যে কোনো সচেতন শিল্প মালিক বুঝে গেছেন—শুধু সফটওয়্যার নয়, বরং আইওটি ইন্টিগ্রেশন-ই হচ্ছে ভবিষ্যতের উৎপানশীলতার মডেল। তাই তারা ধীরে ধীরে তাদের ফ্যাক্টরি ও প্রডাকশন সিস্টেমে আইওটি ডিভাইস সংযুক্ত করছেন।

এতে করে 
ক. কমেছে খরচ
খ. বাঁচছে সময়,
গ. বহুগুণে বাড়ছে—কাজের দক্ষতা

এখনকার দিনে বিদেশি বায়াররাও (Buyers) আইওটি-ভিত্তিক প্রডাকশন সিস্টেমকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন, কারণ তারা চান একদম পারফেক্ট ও কনসিস্টেন্ট কোয়ালিটির প্রডাক্ট। ফলে, যেসব প্রতিষ্ঠান নিজেদের প্রডাকশনে আইওটি, এআই ও অটোমেশন টেকনোলজি ব্যবহার করছে, তারা বাজারে বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে এবং বিদেশি অর্ডারও বেশি পাচ্ছে।

আমি সম্প্রতি কিছু আইওটি ভিত্তিক কোম্পানি ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে বুঝেছি, আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই বাংলাদেশের প্রায় সব তৈরি পোশাক শিল্প (Ready Made Garments) এবং ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পিানি আইওটি ভিত্তিতে সিস্টেমে রূপান্তরিত হবে।

এর অন্যতম কারণ হচ্ছে—
এখন দেশের অনেক কোম্পানি দ্বিতীয় প্রজন্মের উদ্যোক্তারা (Second Generation Entrepreneurs) পরিচালনা করছেন। এদের বড় একটি অংশ বিদেশে AI, IOT, Big Data, Machine Learning বিষয়ে পড়াশোনা করে এসে বাবার কোম্পানির দায়িত্ব নিয়েছেন। ফলে তারা নতুন চিন্তাধারার মাধ্যমে কোম্পানিগুলোকে অটোমেশনের পথে নিয়ে যাচ্ছেন।

এর ফলাফল দুই দিকেই ইতিবাচক—
একদিকে বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রি আরও স্মার্ট ও প্রতিযোগিতামূলক হচ্ছে। অন্যদিকে দেশের আইটি সেক্টরও দ্রুত ডিজিটালাইজড হয়ে উঠছে।

এই যেমন- 
আইওটি শেখার মাধ্যমে তরুণরা প্রযুক্তি, প্রোগ্রামিং, সেন্সর ডিজাইন, ও ডেটা অ্যানালাইসিসে দক্ষ হয়। এর মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি তৈরি হয়।

আইওটি ব্যবহারে নতুন স্টার্টআপ, সার্ভিস, ও ইনোভেশন তৈরির সুযোগ তৈরি হয়। এতে বেকারত্ব কমবে। 

কৃষি, স্বাস্থ্য, শিল্প, শিক্ষা  পরিবহনসহ নানা ক্ষেত্রে আইওটি ভিত্তিক নতুন কাজের সুযোগ তৈরি হয়।

আইওটি প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎপাদন খরচ কমে ও সময় বাঁচে, ফলে শিল্পের কার্যক্ষমতা বাড়ে।

গার্মেন্টস, পরিবহন, এবং শক্তি খাতে আইওটি ব্যবহারে দেশের জিডিপি ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি করে। 

  •  আইওটি দক্ষ তরুণ তৈরি করে → কর্মসংস্থান বাড়ায় → উৎপাদনশীলতা উন্নত করে → অর্থনীতি শক্তিশালী করে।

এভাবেই আইওটির ব্যবহারে দ্বিতীয় প্রজন্মের তরুণ উদ্যোক্তাদের হাত ধরেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বস্তুত  ‘স্মার্ট বাংলাদেশ” গড়ে তুলতে হলে IOT, AI, Big Data, Machine  learning,  Automation—এর মাধ্যমে বাংলাদেশের শিল্প ও অর্থনীতি কে এগিয়ে নিতে হবে। তবেই আমাদের আইটি সেক্টর তথা বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। 


লেখক: ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ আইটি প্রফেশনাল ফ্রেন্ডস ক্লাব।


দ্রষ্টব্য: অভিমত-এ প্রকাশিত পুরো মতামত লেখকের নিজের। এর সঙ্গে ডিজিটাল বাংলা মিডিয়া কর্তৃপক্ষের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। বহুমতের প্রতিফলন গণমাধ্যমের অন্যতম সূচক হিসেবে নীতিগত কোনো সম্পাদনা ছাড়াই এই লেখা প্রকাশ করা হয়। এতে কেউ সংক্ষুব্ধ বা উত্তেজিত হলে তা তার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়।