ই-রিটার্ন দিতে ‘সমর্থ না হলে’ জানাতে হবে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে

১০ লাখ ছাড়িয়েছে ই-রিটার্ন জমা

৩০ অক্টোবর, ২০২৫ ২১:০০  
১০ লাখ ছাড়িয়েছে ই-রিটার্ন জমা

চলতি ২০২৫-২৬ কর বছরেস্বাভাবিক ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের জন্য রিটার্ন অনলাইনে দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এরপর  দেশে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলকারীর সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়েছে।

এটি কর প্রশাসনের ডিজিটাল রূপান্তরের ধারায় “অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক সাফল্য” হিসেবে অভিহিত করেছে এনবিআর। একইসঙ্গে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের জন্য আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন অনলাইনে দাখিলের বাধ্যবাধকতা কিছুটা শিথিল করেছে। 

অনলাইনে কেউ যদি রিটার্ন দাখিল করতে ‘সমর্থ না হন’ তাহলে আবেদনের ভিত্তিতে আগের মত রিটার্ন দাখিলের সুযোগ চাইতে পারবেন। এজন্য ৩১ অক্টোবরের পারিবর্তে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা আগামী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত কর অঞ্চলে আবেদন করতে হবে।

 বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আল আমিন শেখ জানান, গত ৪ আগস্ট অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইট www.etaxnbr.gov.bd–এর মাধ্যমে ই-রিটার্ন দাখিল কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এরপর থেকে করদাতারা সহজেই অনলাইনে রিটার্ন পূরণ ও জমা দিতে পারছেন।

এ বছর এনবিআর এক বিশেষ আদেশের মাধ্যমে ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব প্রবীণ, শারীরিকভাবে অসমর্থ বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি, মৃত করদাতার আইনগত প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিক ছাড়া সব ব্যক্তিগত করদাতার জন্য ই-রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে। তবে যারা এই বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন, তারাও ইচ্ছা করলে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করতে পারেন।

ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধন সংক্রান্ত কোনও জটিলতা দেখা দিলে করদাতারা আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের নিকট আবেদন করতে পারবেন। যৌক্তিক কারণ উল্লেখপূর্বক অনুমোদন পেলে তারা পেপার রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।

এনবিআর জানায়, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতারা পাসপোর্ট নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও ই-মেইল ঠিকানা উল্লেখ করে [email protected] ঠিকানায় আবেদন করলে ই-মেইলের মাধ্যমে ওটিপি ও রেজিস্ট্রেশন লিংক পাচ্ছেন। এর মাধ্যমে তারা অনায়াসে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন।

ই-রিটার্ন সিস্টেমে কোনো কাগজপত্র আপলোডের প্রয়োজন নেই— শুধু আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়ের তথ্য দিলেই তাৎক্ষণিকভাবে ‘অ্যাকনলেজমেন্ট স্লিপ’ ও আয়কর সনদ প্রিন্ট করা সম্ভব হচ্ছে। এতে দেশে ও বিদেশে অবস্থানরত করদাতাদের মধ্যে অনলাইন রিটার্ন দাখিল পদ্ধতি দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

করদাতাদের সুবিধার্থে এনবিআর এ বছরও অনলাইন প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করেছে। এতে করদাতাদের পাশাপাশি আয়কর আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট এবং চার্টার্ড সেক্রেটারিজদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, ই-রিটার্ন সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যার দ্রুত সমাধানে এনবিআর কল সেন্টার ০৯৬৪৩৭১৭১৭১ চালু করেছে। পাশাপাশি ওয়েবসাইটের ‘ই-ট্যাক্স সার্ভিস’ অপশন ও প্রতিটি কর অঞ্চলে স্থাপিত হেল্প ডেস্ক থেকেও সরাসরি সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে।

আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে চলতি করবর্ষের আয়কর রিটার্ন ই-রিটার্ন সিস্টেমের মাধ্যমে দাখিল করার জন্য এনবিআর করদাতাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে।