বি-টপএসই সেমিনারে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প ও দক্ষতায় বৈশ্বিক বাজার সম্প্রসারণের প্রতিশ্রুতি

২৬ অক্টোবর, ২০২৫ ২০:২২  
বি-টপএসই সেমিনারে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প ও দক্ষতায় বৈশ্বিক বাজার সম্প্রসারণের প্রতিশ্রুতি

বাংলাদেশের সফটওয়্যার প্রকৌশলদের জাপানে জব রিপ্লেসমেন্টের চেয়ে স্থানীয় বাজার সম্প্রসারণে বৈশ্বিক মানে মানবসম্পদ উন্নয়নে গুরুত্ব দিচ্ছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) এজন্য বেসিএর মাধ্যমে জাপানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেটিক্স (এনআইআই) এর শীর্ষ সফটওয়্যার প্রকৌশল (টপএসই) প্রোগ্রামের বাংলাদেশী সংস্করণ বিটপএসই (Bangladesh Top Software Engineer) প্রশিক্ষণ পরিচালনা করছে মাধ্যমে ২০২৩ সাল থেকে। ২০২৭ সাল মেয়াদী এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে ইমিধ্যে সফটওয়্যার আর্কিটেকচার, ক্লাউড ও অ্যাজাইল মেথেডোলজিতে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন বাংলাদেশের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের ১৯০ জন   প্রকৌশলী। বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া-সরকারে নিয়োজিত প্রকৌশলীদের দক্ষতা উন্নয়নে “প্রজেক্ট ফর আইসিটি ইঞ্জিনিয়ার্স ডেভেলপমেন্ট ফর দ্য প্রমোশন অব দ্য আইসিটি ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড নিউ ইনোভেশনস (JICA-BCC-BASIS TCP)” প্রকল্পের আওতায় নেয়া সমন্বিত উদ্যোগটি আরো ব্যাপক ভিত্তিক করতে চায় জাপান।  

সে লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই প্রশিক্ষণগ্রহণকারীদের নিয়ে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারের বিসিসি সম্মেলন কক্ষে ২৬ অক্টোবর, রবিবার অনুষ্ঠিত হলো “বি-টপএসই সেমিনার”। সেমিনারে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার ভবিষ্যৎ ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন বক্তারা। 

এসময় ‎বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে সহযোগিতা আরও দৃঢ় করার প্রতিশ্রুতি দিলেন  জাইকা-বিসিসি-বেসিস টিসিপি প্রোগ্রামের প্রধান উপদেষ্টা শোজি আকিহিরো। তিনি বলেন, “বি-টপএসই উদ্যোগ বাংলাদেশ ও জাপানের আইসিটি খাতে একটি নতুন অধ্যায় সূচনা করেছে। এটি উচ্চ দক্ষ প্রকৌশলী তৈরি করে সফটওয়্যার শিল্পকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলবে।”।

ভ্রাতৃপ্রতিম দেশটি যেন বিশ্বমানের আইটি কর্মী তৈরি করে বাংলাদেশের আইটি প্রতিষ্ঠান এবং প্রশিক্ষত প্রকৌশলীরা যেন জাপানের বাইরেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সফটয়্যার প্রকৌশল খাতে মুন্সিয়ানা দেখাতে পারে এবং বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমানতালে কিংবা যৌথ অংশীদারিত্বে কাজ করতে পারে সেজন্য জাপান প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বলে জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত ‎জাপানের ডেপুটি চিফ অব মিশন মি. তাকাহাশি নাওকি। তাদের এই প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদশের তরুণদের জনশক্তিতে রূপান্তরে জাইকার দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্বকে কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন আইসিটি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। 

বক্তব্যে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে টেকসই সহযোগিতা এবং আইসিটি পেশাজীবীদের দক্ষতা বৃদ্ধির গুরুত্বের ওপর জোর দেন তিনি। তিনি বলেন, আজকের অনুষ্ঠানে টপএসই প্রতিষ্ঠাতা এবং বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের উপস্থিতি বাংলাদেশ ও জাপানের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়নে নতুন মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।  বাংলাদেশ-জাপান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক অটুট রেখে দেশের বিপুল সংখ্যক তরুণদের দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি বাড়ানের ওপর  গুরুত্বোরোপ করেন আইসিটি সচিব।

সেমিনারে সফটওয়্যার প্রকৌশল শিক্ষার ভবিষ্যৎ এবং বি-টপএসই প্রোগ্রামের ধারাবাহিক উন্নয়ন চিত্র উপস্থাপন করেন জাপানের টপএসই প্রোগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা ও শিক্ষাবিদ ড. হোনিডেন শিনইচি এবং জাপানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেটিক্স (NII)এর অধ্যাপক  ড. তেই কেনজি, ও ড. দই তাকুও। তারা বলেন, ‎এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশে উচ্চমানের আইসিটি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিস্তৃত হবে। ‎এটি দেশের প্রযুক্তি শিল্পে উদ্ভাবন, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। 

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের পরিচালক গোলাম সারোয়ার বলেন, ‎বি-টপএসই প্রোগ্রামটি জাপানের টপএসই প্রোগ্রামের আদলে তৈরি, যার লক্ষ্য উচ্চ দক্ষ সফটওয়্যার প্রকৌশলী তৈরি করা, যারা বৃহৎ ও জটিল প্রকল্প পরিচালনায় “সুপার আর্কিটেক্ট” হিসেবে কাজ করতে পারবেন। এই উদ্যোগ বাংলাদেশের আইসিটি শিল্পে উদ্ভাবন ও প্রতিযোগিতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সেমিনারে প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী সফটওয়্যার প্রকৌশলী, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, আইটি ব্যবসায়ী এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের কর্মকর্তা ও প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সহ মোট ১৩০ জন অংশ নেন। সেমিনারে জানানো হয়, ২৭ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে বিটপএসই’র ৫ম ব্যাচের প্রশিক্ষণ। এই প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাত শিল্পের বৈশ্বিক বিকাশ এবং প্রকৌশলীদের আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করণের মধ্যে দিয়ে মেধা ও দক্ষতা সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে বলে মনে করেন অংশগ্রহণকারীরা।