স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করতেন সুব্রত বাইন!

২৭ মে, ২০২৫  
২৭ মে, ২০২৫  
স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করতেন সুব্রত বাইন!

সেনাবাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার হয়েছেন ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্ট জারি করা শীর্ষ দুই সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ। মঙ্গলবার (২৭ মে) কুষ্টিয়া শহরের কালিশংকরপুর এলাকার সোনার বাংলা সড়কের একটি ছাত্রাবাস থেকে অস্ত্রসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি এখন টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। তবে সেই খবর ছাপিয়ে আরো একটি বিষয় এবার সামনে এলো। 

যখন মঙ্গলবার সেনানিবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিআর পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সামি-উদ-দৌলা চৌধুরী জানালেন, আজ ভোর ৫টা থেকে শুরু হওয়া কুষ্টিয়া ও হাতিরঝিলে পরিচালিত সাঁড়াশি অভিযানে ৪৬ স্বতন্ত্র ইনফেন্ট্রি ব্রিগেডের একটি ইউনিট গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সফলভাবে দুই জন শীর্ষ সন্ত্রাসী এবং তাদের দুই জন সহযোগীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন— দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে ফতেহ আলী, আবু রাসেল মাসুদ ওরফে মোল্লা মাসুদ এবং দুইজন শ্যুটার আরাফাত ও শরীফ। এসময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ৫টি বিদেশি পিস্তল, ১০টি ম্যাগাজিন, ৫৩ রাউন্ড গুলি এবং ১ টি স্যাটেলাইট ফোন।

অর্থাৎ শীর্ষ সন্ত্রাসীরা এখন স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করেন! এরই মধ্যে গত ২০ মে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবাদাতা স্টারলিংক বাংলাদেশে বাণিজ্যিক সেবা চালু করেছে। এনজিএসও গাইডলাইন অনুযায়ী, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ইন্টারনেট সেবা পরিচালনার জন্য লাইসেন্সধারীর অবশ্যই ন্যূনতম একটি গেটওয়ে থাকার বাধ্যবাধকতা থাকলেও এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে স্টারলিংকের কোনো গেটওয়ে নেই। এমনকি কোনো গ্রাউন্ড স্টেশনও স্থাপন করা হয়নি। সেনা-পুলিশ সবাই মিলে যখন আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখতে ঘর্মাক্ত তখন এমনভাবে ব্যবসায় পরিচালনার সুযোগ নিয়ে এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে নিরাপত্তা বিশ্লষকদের কণ্ঠে। বিষয়টি আমলে নিয়েই হয়তো নিরাপত্তার স্বার্থে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের আওতাধীন ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারও (এনটিএমসি) শুধু বাংলাদেশে স্থাপিত গেটওয়ের মাধ্যমে স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে বলেছিল। বিটিআরসিকে দেওয়া এক চিঠিতে এনটিএমসি জানায়, স্টারলিংকের সেবা চালুর ক্ষেত্রে গ্রাহকরা যাতে শুধু বাংলাদেশে স্থাপিত গেটওয়ের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। 

তবে আশার কথা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করেও সেনা জালে ধরা পরেছেন তালিকাভুক্ত ২৩ জন শীর্ষ সন্ত্রাসী দলের অন্যতম নেতা এবং আলোচিত সেভেন স্টার চক্রের মূল পরিকল্পনাকারী সুব্রত বাইন ও মোল্লা মাসুদ। এই অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ সমন্বয়ে ও সহায়তা দিয়েছে সেনা সদরের সামরিক অপারেশন পরিদফতর, ৫৫ পদাতিক ডিভিশন, ১৪ স্বতন্ত্র ইঞ্জিনিয়ার বিগ্রেড, ৭১ মেকানাইজ বিগ্রেড ও এনএসআই।

এমন আরো সফলতা পেতে সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিআর পরিচালক বলেন, আজ আমি আপনাদের মাধ্যমে দেশের জনগণকে জানাতে চাই— যেকোনো ধরনের সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড কিংবা সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত তথ্য অনুগ্রহ করে নিকটস্থ সেনাক্যাম্প অথবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করুন। আমরা আবারও দৃঢ়ভাবে জানাতে চাই—সেনাবাহিনী প্রধানের সুস্পষ্ট নির্দেশনার আলোকে, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং জনগণের জানমালের সুরক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুত ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবসময় জনগণের পাশে আছে এবং থাকবে।