বিনা অনুমতিতে এনআইডি সার্ভারে তথ্য খুঁজলে ব্যবস্থা

দেশের প্রায় ১২ কোটি ৩৭ লাখ ৩২ হাজার ভোটারের তথ্য সংরক্ষিত রয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সার্ভারে। তবে বিনা অনুমতিতে এই সার্ভারে প্রবেশ করে যদি কেউ তথ্য অনুসন্ধান করে তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এ নিয়ে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সচিবালয় ও মাঠপর্যায়ের সব কর্মচারী-কর্মকর্তাদের কড়া বার্তা দিয়ে চিঠি দিয়েছেন ইসির সিস্টেম এনালিস্ট প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম।
তার পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কিছু সিএমএস (কার্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) ব্যবহারকারী তাদের নির্ধারিত অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে নাগরিকদের তথ্য খুঁজে তা ব্যক্তিগত স্বার্থে অননুমোদিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করছেন। এটি সম্পূর্ণ বেআইনি। সিএমএস থেকে করা প্রতিটি অনুসন্ধানের তথ্য—যেমন কে, কখন, কোন অ্যাকাউন্ট থেকে তথ্য খুঁজেছে—তা সার্ভারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংরক্ষিত থাকে। ফলে অননুমোদিত বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অনুসন্ধান শনাক্ত করা সম্ভব। এমন কর্মকাণ্ড প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পিছপা হবে না কমিশন।
এ কারণে নির্বাচন কমিশন সকল সিএমএস অ্যাকাউন্ট হোল্ডারকে নির্দেশনাগুলো কঠোরভাবে অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছে।
বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের আবেদন নিষ্পত্তির প্রক্রিয়ায় এই তথ্য ব্যবহার করা হলেও, তা যেন একমাত্র দায়িত্বপ্রাপ্ত ও অনুমোদিত কর্মকর্তা-কর্মচারীর মাধ্যমেই হয়, সেটি নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছে ইসি।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছিলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা গ্রহণকারী পাঁচটি প্রতিষ্ঠান তৃতীয় পক্ষের কাছে তথ্য ফাঁস করেছে। প্রথমিক তদন্তে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ইউসিবি ব্যাংকের উপায়, চট্টগ্রাম পোর্ট অথরিটি, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের আইবাস এর বিরুদ্ধে তথ্য ফাঁসের প্রমাণ পেয়েছিলো অনুসন্ধান টিম। এরপরই জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সার্ভারের তথ্য ফাঁস ঠেকাতে যাচাই সেবা গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে ‘আকস্মিক অভিযান’ পরিচালানার কথা জানিয়েছিলেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবীর।
প্রসঙ্গত, ১৮২টি প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে এনআইডি'র তথ্য যাচাই করে। তবে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান থেকে আবার অন্য প্রতিষ্ঠানে সেবা নিচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কোন প্রতিষ্ঠানের কতটুকু তথ্য প্রয়োজন, যতোটুকু নিচ্ছে বা বেশি নিচ্ছে কিনা তা পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। এরপর এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন।