শতাধিক সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে 'গ্রেপ্তারি পরোয়ানা' গুজব: প্রেস সচিব
আরও শতাধিক সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ‘গ্রেফতারি পরোয়ানা’ জারি করা হচ্ছে দাবি করে যে খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে, সেটিকে ‘সম্পূর্ণ বানোয়াট ও গুজব’ বলে তুলে ধরেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
১১ সেপ্টেম্বর, শনিবার রাতে ফেইসবুক পোস্টে এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) আরও শত শত সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে যাচ্ছে বলে ভিত্তিহীন গুজব ছড়ানো হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
“ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটরের কার্যালয় থেকে আমাদের জানানো হয়েছে যে বর্তমানে সশস্ত্র বাহিনীর আর কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করার কোনও পরিকল্পনা নেই।”
শনিবার এক বিফ্রিংয়ে সেনা সদর ‘গুম ও মানবতাবিরোধী অপরাধে’ জড়ানোর অভিযোগে সেনাবাহিনীর যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ১৫ জনকে হেফাজতে নেওয়ার তথ্য দেয়। এ খবরের মধ্যে প্রেস সচিবের এমন বক্তব্য এল।
শফিকুল আলম জনসাধারণকে এই ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্যে বিশ্বাস না করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “এই ধরনের মিথ্যাচার সাধারণ জনগণের মধ্যে এবং বিশেষ করে সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির প্রচেষ্টার অংশ।
“এই বিদ্বেষপূর্ণ গুজবের উদ্দেশ্য হল আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্ধারিত সাধারণ নির্বাচনের আগে দেশকে অস্থিতিশীল করা।”
প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই ভেঙে দেওয়ার কোনও পরিকল্পনাও সরকারের নেই তুলে ধরে তিনি বলেন, “সরকার আন্তসীমান্ত ও বিদেশি গোয়েন্দা কার্যক্রমের উপর এ সংস্থার ফোকাস বাড়াতে সংস্কারের কথা বিবেচনা করছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিরোধী মতের লোকদের গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় প্রসিকিউশনের দেওয়া আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়ে গত বুধবার ৩০ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
এদিকে বিগত সময়ে গুম-খুনে জড়িত হিসেবে অভিযুক্ত সেনাকর্মতর্তাদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবির মধ্যে শনিবার সেনা সদরে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অ্যাডজুটেন্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান জানিয়েছেন, ১৫ জনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৪ জন বর্তমানে কর্মরত ও একজন এলপিআরে (অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটি) রয়েছেন।
অভিযুক্ত সেনাসদস্যদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে কি না প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইনানুগভাবে বিষয়টি সমাধান হবে। আপাতত তারা সেনা হেফাজতে আছে। পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
ট্রাইব্যুনালে দুই মামলায় চার্জশিটভূক্ত এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরতরা হলেন- মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, কর্নেল কে এম আজাদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন।







