ফেসবুকের চেয়েও বেড়েছে ম্যাসেঞ্জার ব্যবহারকারী
জুলাই অভ্যুত্থানের পর ফেসবুক-ম্যাসেঞ্জার বেড়েছে অর্ধ কোটি
করোনা পরবর্তী সময়ের মতো জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়েও দেশে ফেসবুকের চেয়ে বেড়েছে ম্যাসেঞ্জারের ব্যবহার। একইভাবে ইনস্টাগ্রামের চেয়ে বেড়েছে লিংকডইন ব্যবহারকারী। গত আগস্ট পর্যন্ত দেশে নতুন ফেসবুক ও ম্যাসেঞ্জার ব্যবহারকারী বেড়েছে অর্ধ কোটির মতো। পর্যবেক্ষণ বলছে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ম্যাসেঞ্জার ও লিংকডইন—সবগুলো সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমে জেন-জিদের উপস্থিতি বেশি। ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী ব্যবহারকারী মোট ব্যবহারকারীর অর্ধেকের কাছাকাছি। কোথাও জেন-জিদের উপস্থিতি মোট ব্যবহারকারীর অর্ধেকের চেয়েও বেশি।
গত বছরের আগস্ট থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত এই সোশ্যাল হ্যান্ডেলে নতুন করে যুক্ত হয়েছে ৪৮ লাখ ৬০ হাজার ১০০টি নতুন অ্যাকাউন্ট। অবশ্য জুলাই থেকে হিসাব করলে এই সংখ্যাটা ৫১ লাখ ৯২ হাজার ৪০০।
তবে এই সময়ে ম্যাসেঞ্জার ব্যবহারকারী বেড়েছে আরো বেশি। জুলাই থেকে অক্টোবর সময়ে বেড়েছে ৫৮ লাখ ১৬ হাজার নতুন ম্যাসেঞ্জার ব্যবহারকারী। ১২ মাসে নতুন ম্যাসেঞ্জার ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে ৫৬ লাখ ৮৩ হাজার।
একইভাবে অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে মেটার মালিকানাধীন অপর সোশ্যাল হ্যান্ডেল, ফটো এবং ভিডিও শেয়ারিং সোশ্যাল নেটওয়ার্ক ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী ১৭ লাখ ২১ হাজার ৯০০ এবং পেশাদার সোশ্যাল নেটওয়ার্ক লিংকডইন ব্যবহারকারী ১৮ লাখ ৬৮ হাজার জন বেড়েছে ।
পোল্যান্ডভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবস্থাপনার প্ল্যাটফর্ম নেপোলিয়নক্যাটের পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সংস্থাটির আগস্ট মাসের হিসাব অনুযায়ী—ফেসবুকে বাংলাদেশি ব্যবহারকারী রয়েছে ৭ কোটি ৩৩ লাখ ৩৬ হাজারের বেশি, যা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪১ শতাংশ। একই মাসে ম্যাসেঞ্জার ব্যবহারকারী ৬ কোটি ৭৪ লাখ ৬৭ হাজার ৮০০; ইনস্টিগ্রাম ব্যবহারকারী ৯৩ লাখ ৩৭ হাজার ৯০০ জন এবং লিংকডইন ব্যবহারকারীর সংখ্যা পৌঁছেছে ১ কোটি ৯ লাখ ৬৪ হাজারে। ২০২৪ সালের আগস্টে ব্যবহারকারী ছিলেন মাত্র ৯০ লাখ ৯৬ হাজারের মতো।
ঠিক এক বছর আগে অর্থাৎ ২০২৪ সালের আগস্টে বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারকারী ছিলেন ৬ কোটি ৮৪ লাখ ৭৫ হাজারের কিছু বেশি। সে হিসাবে এক বছরে ফেসবুকে বাংলাদেশি ব্যবহারকারী বেড়েছে ৪৮ লাখ ৬১ হাজারেরও বেশি। দেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ। নারীদের হার ৩৬ দশমিক ৮ শতাংশ।
ইনস্টাগ্রাম ও ম্যাসেঞ্জারে অবশ্য ফেসবুকের চেয়ে নারী ব্যবহারকারী কিছুটা বেশি। তারপরও নারীদের চেয়ে পুরুষের উপস্থিতি প্রায় দ্বিগুণ। ২০২৪ সালের আগস্টে ম্যাসেঞ্জার ব্যবহারকারী ছিলেন ৬ কোটি ১৭ লাখ ৮৪ হাজারের মতো। ২০২৫ সালের আগস্টের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বাংলাদেশের ৬ কোটি ৬ কোটি ৭৪ লাখ ৬৮ হাজার মানুষ ম্যাসেঞ্জার ব্যবহার করছেন।
চলতি আগস্ট মাসের হিসাবমতে, ম্যাসেঞ্জারে বাংলাদেশি ব্যবহারকারীদের ৬৩ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ। আর নারী ব্যবহারকারী মাত্র ৩৬ দশমিক ৪ শতাংশ। একইভাবে ইনস্টাগ্রামে নারী মাত্র ৩৪ দশমিক ১ শতাংশ। আর পুরুষ ৬৫ দশমিক ৯ শতাংশ। তবে লিঙ্কডিনে নারী-পুরুষের হিসাব আলাদা করে দেখানো হয়নি।
পেছনে তাকালে দেখা যায়, করোনার পর ২০২১ সালের এপ্রিলে গিয়ে দেখা যায়, এক বছরে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছিলো প্রায় এক কোটি। তখন মোট জনসংখ্যার ২৮ শতাংশ হিসেবে মে মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছিলো ৪ কোটি ৮২ লাখ ৩০ হাজারে। ওইসময়ে ব্যবহারকারীর মধ্যে ৩০ দশমিক ৯ শতাংশ নারী এবং পুরুষ ৬৯ দশমিক ১ শতাংশ। ব্যবহারকারীদের মধ্যে ১৮ থেকে ২৪ বয়সীরাই সবচেয়ে বেশি। তাদের সংখ্যা ২ কোটি ১২ লাখ। তখন সাড়ে চার গুণ বেড়ে ম্যাসেঞ্জার ব্যবহারকারী হয়েছিলো ৪ কোটি ২১ লাখ ৫০ হাজার। ব্যবহারকারীদের মধ্যে পুরুষ ৬৯ দশমিক ৩ শতাংশ এবং নারী ৩০ দশমিক ৭ শতাংশ ছিলো। এছাড়াও ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪০ লাখ ৭১ হাজার এবং লিংকডইন ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছিলো ৪১ লাখ ১৭ হাজারে।







