ইউএনএইচসিআর’র মাধ্যমে বৈধভাবে বাংলাদেশী সিম পাবে রোহিঙ্গারা

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের রোষে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গার জন্য আসছে নতুন সু সংবাদ। এবার অবৈধ পথ ছেড়ে বৈধ পথেই মোবাইল সংযোগ ও ইন্টারনেট সুবিধা পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা।
সূত্রমতে, আগামী ২৫ আগস্ট প্রধান উপদেষ্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের রোহিঙ্গা শিবিরে যাওয়ার কথা রয়েছে। সব ঠিক থাকলে ওই দিনই তিনি এই সেবাটি উদ্বোধন করতে পারেন। সেবাটি চালু করতে প্রথম ধাপে জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনের (ইউএনএইচসিআর) মাধ্যমে বাংলাদেশের চারটি অপারেটরের ১০ হাজারটি সিম বরাদ্দ দেয়া হতে পারে। ‘প্রোগ্রেস আইডি’র মাধ্যমে সেই সিমগুলো কিনতে পারবেন রোহিঙ্গারা। অবশ্য এ জন্য সরকারের সঙ্গে ইউএনএইচসিআর’র চুক্তি হয়েছে কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে বিষয়টি লাইভ করতে দ্রুত কাজ চলছে বলে জানাগেছে।
সিম বিক্রির বিদম্যান নীতি অনুযায়ী, প্রত্যেক ক্রেতার জন্য শনাক্তকারী পরিচয়পত্র ও বায়োমেট্রিক প্রয়োজন হয়। যেহেতু রোহিঙ্গাদের সে ধরনের পরিচয়পত্র নেই, তাই তাদের সিম দেওয়ার জন্য বিকল্প উপায় হিসেবে ইউএনএইচসিআর’র ‘প্রোগ্রেস আইডি’র অ্যাকসেস পাওয়ার বিষয়ে গত ১১ অক্টোবর মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি)। বৈঠক সূত্রে প্রকাশ, সরকারের সঙ্গে চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে ইউএনএইচসিআরের এই ডেটাবেজ সংরক্ষিত থাকবে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) ডেটা সেন্টারে। কিন্তু এই ডেটাবেজ বাংলাদেশ সরকারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শেষ হতে আগামী নভেম্বর পর্যন্ত সময় লাগবে। এরপর সেখান থেকে মোবাইল অপারেটররা গ্রাহকের নাম নিবন্ধন করবেন। এরপর অপারেটররা তিন ধরনের প্যাকেজ অফার কররতে পারবে। এই প্যাকেজের খরচ ও সিমের দাম দেবে ইউএনএইচসিআর বা সরকার। ‘প্রোগ্রেস আইডি’র বিপরীতে ১৮ বছরের বেশি বয়সীরা সিম পাবেন। নতুন সিম দেওয়ার পর বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে যেসব অবৈধভাবে সিম চলছে, সেগুলো বন্ধ করে দেবে সরকার। এতে করে ওই এলকায় চালু থাকা প্রায় ৪ লাখ সিম বন্ধ হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে বিষয়টি এখনো আলোচনা পর্যায়ে রয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী।
রোহিঙ্গাদের জন্য সিমের নিবন্ধনের প্রক্রিয়াটিকে সহজ করার অনুরোধ জানিয়েছেন, বাংলালিংকের হেড অব করপোরেট অ্যাফেয়ার্স তাইমুর রহমান। তিনি বলেন, জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যুতে এটা জরুরী। তবে এজন্য নিবন্ধন প্রসেসটা সহজ হতে হবে।
প্রসঙ্গত, অবৈধভাবে দেশি অপারেটরের সিম এবং মিয়ানমারের সিম ব্যবহারের মাধ্যমে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরকেন্দ্রিক বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৩ সালে রোহিঙ্গাদের সিম দেওয়ার চিন্তা করে তৎকালীন সরকার। সে সময় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টেলিটক সিম ব্যবহারের আলোচনা হয়েছিল। তবে এবার সব অপারেটরকেই এই সেবার সুযোগ দিতে যাচ্ছে বিটিআরসি।