ক্যানসার স্ক্রিনিং কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করার দাবি
ক্যানসার স্ক্রিনিং কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করার দাবি জানিয়েছেন ক্যানসার বিশেষজ্ঞরা। ৩১ অক্টোবর, শুক্রবার রাজধানীর একটি হোটেলে অনকোলোজি ক্লাব আয়োজিত দুদিনব্যাপী ‘বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল ক্যানসার কংগ্রেস’ কনফারেন্সের সমাপনী দিনে বক্তারা এ কথা বলেন।
আয়োজনের দ্বিতীয় দিনে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. এ এফ এম কামাল উদ্দিন। তার গবেষণায় বিশ্বের ক্যানসার পরিস্থিতি ছাড়াও উঠে এসেছে দেশের ক্যানসার চিকিৎসার অপ্রতুলতা সব দিক। এখনই সতর্ক না হলে আগামী দিনে ক্যানসার কতটা ভয়াবহ আকার ধারণ করবে তাও তুলে ধরেন তিনি।
এসময় ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. এ এফ এম কামাল উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশে ক্যানসার রোগীর তুলনায় রেডিও থেরাপি মেশিন খুবই কম। সারা দেশে ১ লাখ ৮৪ হাজার ক্যানসার রোগীর জন্য ২০৯টা রেডিও থেরাপি মেশিন লাগবে। সেখানে দেশে আছে মাত্র ২৯টি। যা দিয়ে বিপুলসংখ্যক রোগীর চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়। ফলে সঠিক চিকিৎসা ও অপ্রতুল রেডিও থেরাপি মেশিনের অভাবে মৃত্যুর হার বেশি। ফলে ক্যান্সারে মৃত্যুর হার কমাতে প্রয়োজনীয় মেশিনের পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও সিলেটের মতো বিভাগীয় শহরেও মেশিন স্থাপন জরুরি।
ব্রিফিং এ ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. এম সাইফুল হক বলেন, ক্যানসার রোগীর মৃত্যু হার কমাতে সবার আগে প্রয়োজন সরকারের সঠিক পলিসি ও পরিকল্পনা। ক্যানসার চিকিৎসা যেহেতু ব্যয়বহুল সেক্ষেত্রে সরকারের উচিত হবে ইনিশিয়াল ইনভেস্টের কথা চিন্তা না করে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা। ক্যান্সারের জন্য সবার আগে জরুরি জনসচেতনতা।
এসময় এবারের আয়োজনের সদস্য সচিব ডা. মোস্তফা আজিজ সুমন বলেন, ক্যানসার যুদ্ধ জয় করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে, বিশেষ করে সাংবাদিকদের সামনে থেকে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
সম্মেলনের অনুষ্ঠানে অনকোলজি ক্লাব বাংলাদেশ ও ক্যানসার কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. এম এ হাই বলেন, বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল বিশ্বে ক্যানসার রোগীর ক্রমবর্ধমান সংখ্যা আশঙ্কাজনক। দেশে বর্তমানে বিপুল জনগোষ্ঠী এই রোগে আক্রান্ত, যার অধিকাংশই চিকিৎসার আওতার বাইরে।
দেশে ক্যানসার চিকিৎসার আধুনিকায়নে মানসম্পন্ন ও দক্ষ জনবল তৈরি করাই ক্লাবের মূল উদ্দেশ্য জানিয়ে ডা. হাই বলেন, ক্যানসার জয় করতে এবং দেশের ক্রমবর্ধমান ক্যানসার রোগী ও তাদের পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
অ্যাকাডেমিক পার্টনার হিসেবে যুক্ত রয়েছে—ইতালির বলোনিয়া ইউনিভার্সিটি, সিংহেলথ সিঙ্গাপুর এবং গ্লোবাল হেলথ ক্যাটালিস্ট।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্যের রয়েল মডার্ন হাসপাতাল, সেন্টবার্থোলোমিউ’স হাসপাতাল, কেএইচসিসি এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং অ্যাকাডেমি, হুইপস ক্রস ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাষ্ট্রের ইউপিএমসি হিলম্যান ক্যানসার সেন্টার, ইউনিভার্সিটি অব পিটসবার্গ স্কুল অব মেডিসিন, পেনসিলভানিয়াইউনিভার্সিটিসহ বিশ্বের অন্যান্য খ্যাতনামা ক্যানসার হাসপাতালের চিকিৎসকও গবেষকরা।
অনকোলজি ক্লাব বাংলাদেশ ও ক্যানসার কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. এম এ হাই এবং জেনারেল সেক্রেটারি ডা. এ এম এম শরীফুল আলমের নেতৃত্বে দেশের ক্যানসার বিশেষজ্ঞ, বিজ্ঞানী ও গবেষকরা অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক সেশনে।
এবারের কনফারেন্সে বিশ্বের ১৬টি দেশের ৩১ জন খ্যাতনামা ক্যানসার বিশেষজ্ঞসহ মোট ১ হাজার ২০০ জন ক্যানসার বিশেষজ্ঞ, ক্যানসার সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী ও গবেষক অংশগ্রহণ করেন।







