নির্বাচনের আগে বড় সাইবার হামলার শঙ্কা

১৯ আগষ্ট, ২০২৫ ১৮:৪৮  
২০ আগষ্ট, ২০২৫ ০০:১৮  
নির্বাচনের আগে বড় সাইবার হামলার শঙ্কা

নির্বাচনের আগে বড় ধরনের সাইবার হামলা হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়ব। ১৯ আগস্ট, মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক সেমিনারে তিনি এমন শঙ্কার কথা জানান।

ফয়েজ আহমেদ তৈয়ব বলেন, তিনি বলেন,“নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যাংকিং সেক্টরে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। দেশের মাত্র ১৭-২০টি ব্যাংকের সাইবার স্পেস রেটিং সন্তোষজনক। জনগণের ডেটা অনেক ক্ষেত্রে অনিরাপদভাবে উন্মুক্ত থাকে এবং কিছু ব্যাংক কর্মকর্তা সাইবার অপরাধের সাথেও জড়িত।” এ অবস্থায় তিনি সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে সবাইকে নতুন করে ভাববার আহ্বান জানান।

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আরও বলেন, আর্থিক অপরাধ, জুয়া, সফটওয়্যার আপডেটের ঘাটতি, ফাইল ট্রান্সফার প্রটোকলের দুর্বলতা, ডিডস আক্রমণ এবং ডেটা সেন্টারের ঝুঁকি এখন ব্যাংকিং সেক্টরের বড় হুমকি।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বিদ্যমান সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে হবে এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সচেতনতা বাড়াতে হবে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে প্রশিক্ষণ জোরদার এবং আইটি ও ব্যবসায়িক ইউনিটের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান মোঃ আবদুর রহমান খান ব্যাংকের সাথে ডেটা বিনিময়ের মাধ্যমে কর আদায় সহজ করার প্রস্তাব করেন।

সিআইডি প্রধান মোঃ ছিবগাত উল্লাহ জানান, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ৮৮৪টি সাইবার অপরাধের অভিযোগ এসেছে এবং ব্যাংকগুলোর মামলা করতে অনীহা তদন্তে বাধা তৈরি করছে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, সিটি ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিনিধিরা প্রযুক্তিগত জটিলতা সমাধানে করণীয় বিষয়ে মতামত উপস্থাপন করেন।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী এনডিসি। তিনি বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা শুধু ডিজিটাল ভবিষ্যত সুরক্ষাই নয়, বরং জনগণের আস্থা ও আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে সেমিনারে বক্তারা মতামত দেন। সেমিনারে আইসিটি বিভাগের বিভিন্ন দপ্তর সংস্থা প্রধান সহ স্টেক হোল্ডাররা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে গত মাসে বাংলাদেশের ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ডিজিটাল পেমেন্ট সেবাদাতাদের ওপর সাইবার হামলার আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশনস টেকনোলজি (আইসিটি) বিভাগ থেকে এক চিঠিতে এমন সতর্কতার কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, আগামী দিনে দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো (সিআইআই), ব্যাংক, আর্থিক খাত, স্বাস্থ্যসেবা, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সাইবার হামলার ঝুঁকিতে রয়েছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে এমন আশঙ্কার কথা উঠে এসেছে।

চিঠিতে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারদের জরুরি ভিত্তিতে ছোট ও মাঝারি ধরনের সাইবার হামলা ঠেকাতে প্রয়োজনীয় সাইবার সুরক্ষা ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়।