চিকিৎসক ও মেডিকেল টেকনিশয়ানদের রোবটিক সার্জারি প্রশিক্ষণে গুরুত্বারোপ

১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ২২:৫৭  
চিকিৎসক ও মেডিকেল টেকনিশয়ানদের রোবটিক সার্জারি প্রশিক্ষণে গুরুত্বারোপ

প্রযুক্তির যুগে  উন্নত চিকিৎসাসেবায় বিরাট অবদান রাখতে সক্ষম রোবটিক সার্জারি। তবে রোবটের মাধ্যমে সেবা পেতে চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট জনবলের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা জরুরি। তাহলেই রোবট থেকে রোগীরা কাঙ্খিত সুফল পাবেন।

১৭ নভেম্বর সোমবার বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) এ ব্লক অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘দ্য রোল অব রোবটিকস ইন সার্জারি’ বিষয়ক ইউনিভার্সিটি সেন্ট্রাল সেমিনারের এসব কথা তুলে ধরা হয়।

এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কি কি উপায়ে দেশের মানুষের চিকিৎসা সেবা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা যায়, এই প্রযুক্তির সুবিধা, অসুবিধা, দেশে এর বাস্তবতা ইত্যাদির নিরিখে সেমিনারটির আয়োজন করে সেন্ট্রাল সেমিনার সাব কমিটি।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএমইউর ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেছেন, ‘বাংলাদেশে রোবটিক সার্জারি চালু করা একটি স্বপ্ন। আর শিক্ষক, চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এর সফল বাস্তবায়ন সম্ভব। তবে এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের আগে নিজেদেরকে বিশেষ করে সার্জারি সেবার বিষয়ে দক্ষতাসহ সার্জারি সেবা কি অবস্থায় রয়েছে, আমরা কি অবস্থায় আছি, তার সঠিক অবস্থা জানা, মূল্যায়ন, সঠিক বিবেচনার মাধ্যমেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। এই সময়ের চিকিৎসা পেশার একাডেমিক লিডারগণ তাদের সঠিক নেতৃত্বের মাধ্যমে বিএমইউতে রোবটিক সার্জারি চালু করতে সক্ষম হবেন এমন প্রত্যাশা করি।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. ইব্রাহীম সিদ্দিক।

দেশের রোবোটিক সার্জারি নতুন হলেও বিশ্বে নয় জানিয়ে সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা বলেন, বিশ্বের তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের চিকিৎসাসেবাকে এগিয়ে নিতে হলে রোবটিক সার্জারি চালু সময়ের দাবি।

তারা বলেন, প্রযুক্তির বিকাশের এই যুগে রোবটিক সার্জারিকে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। উন্নত চিকিৎসাসেবায় রোবটিক সার্জারি বিরাট অবদান রাখতে পারে। তবে এ জন্য সবচাইতে বেশি প্রয়োজন যথাযথ প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। তবে রোবটের মাধ্যমে যতই উন্নত সেবা নিশ্চিত করা যাক, চিকিৎসককে এবং সংশ্লিষ্ট জনবলকে প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও জ্ঞান অবশ্যই অর্জন করতে হবে। তবেই রোবট থেকে কাক্ষিত সুফল রোগীরা পাবেন।

সেমিনারে বিএমইউর জেনারেল সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ ফারুক ইশতিয়াক ‘রোবটিক সার্জারি: আওয়ার পারসপেক্টিভ’ বিষয়ে এবং কলোরেক্টাল সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. কৃষ্ণ পদ সাহা ‘দি রোল অব রোবটিকস ইন সার্জারি’ বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

তারা জানান, রোবোটিক সার্জারির সুবিধা হলো, ছোট ছিদ্র দিয়ে অপারেশন সম্পন্ন করা, জটিলতা কম হয়, রোগী দ্রুত তার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারে, রক্তপাত কম হয়, অপারেশন পরবর্তী ব্যথা কম ইত্যাদি। সার্জনের সুবিধাসমূহ হলো প্রতি মুহূর্তের ত্রিমাত্রিক ছবি দেখে জটিল সার্জারির পদক্ষেপ নেয়া সহজতর হয়, মানুষের হাতের থেকে রোবটের সাহায্যে নড়াচড়া সহজ এবং বেশি নিরাপদ, হাত কাঁপা সম্পূর্ণ পরিহার করা যায়, আরামদায়ক চেয়ারে বসেই সার্জন দীর্ঘ সময় অপারেশন করতে পারেন, অন্য স্থান থেকে একজন অভিজ্ঞ সার্জন শিক্ষানবিশ সার্জনকে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিতে পারেন বা সার্জারি সম্পন্ন করতে পারেন। রোবোটিক যন্ত্র ভেঙে যাওয়া বা নষ্ট হবার সম্ভাবনা খুবই কম, সার্জন যদি কোনো ধরনের অর্থোপেডিক সমস্যায় পড়েন, প্রেগন্যান্ট হন,  আবার অতি ওজনের রোগীদের জন্যও রোবোটিক সার্জারি খুবই সাহায্যকারী।

ডিবিটেক/এমভি/ইক