ডিটারজেন্ট দূষণ কমাবে আবীর-সায়েমের উদ্ভাবন

১২ নভেম্বর, ২০২৫ ১০:৪৬  
ডিটারজেন্ট দূষণ কমাবে আবীর-সায়েমের উদ্ভাবন

কাপড় ধোয়ার জন্য প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ পানি ডিটারজেন্ট দিয়ে দূষিত হচ্ছে। এই পানি সরাসরি নদী, খাল ও বিলকে দূষিত করছে। এ সমস্যা সামনে রেখে আমরা সল্টিং আউট নামে একটি প্রোটিন পৃথক্‌করণ প্রক্রিয়া ও বালি ব্যবহার করে ডিটারজেন্ট পানিকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করার একটি পরিকল্পনা এঁটেছে  দুই ক্ষুদে বিজ্ঞানী। ওরা দুজনেই ঢাকা বিএএফ শাহীন কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র। এদের একজন আরীব বিন ফারুক। অন্যজন সায়েম ইবনে সারোয়ার। 

রাজধানী ঢাকার সেন্ট জোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিজ্ঞান উৎসবে নিজেদের এই বৈজ্ঞানিক পরিকল্পনা ‘দ্য সল্টিং আউট সিস্টেম ২.০’ তুলে ধরে সেরাদের সেরা হয়েছে সায়েম-আরীব। 

সেখানে তারা দেখিয়েছে, কিভাবে  বিশেষ ধরনের লবণ পানিতে দ্রবীভূত করে দূষণকারী উপাদান, যেমন তেল ও ডিটারজেন্টকে কার্যকরভাবে পৃথক করা হয়। এই কৌশলটি কাজে লাগিয়েই উচ্চমাত্রায় আয়নিত লবণ পানিতে নিষ্ক্রিয় গ্যাসের মতো কাজ করে ডিটারজেন্ট, তেল ও প্রোটিনের মতো পদার্থকে অদ্রবণীয় করে তোলে। এর ফলে পানি অধঃক্ষিপ্ত হতে বাধ্য হয়। এই প্রক্রিয়া ব্যবহার করে দূষিত পানি থেকে ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত ডিটারজেন্ট পরিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছে আরীব ও সায়েম। ফলে তাদের এই উদ্ভাবনের মাধ্যমে তারা দেখিয়েছেন, ডিটারজেন্ট ও তেলের কারণে দূষিত পানিকে লবণাক্ত হলেও পরিষ্কার পানিতে পরিণত করা যায়। একইসঙ্গে এই পানি পরে শিল্প ও কৃষি খাতে ব্যবহার করা সম্ভব।

এখন এই ‘সল্টিং আউট সিস্টেম ২.০’ কৌশল ব্যবহার করে দেশে পানির পুনর্ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিপ্লব আনতে চায় তারা। টেক্সটাইল, ডাইং এবং অন্য শিল্পগুলোতে যেখানে প্রচুর পরিমাণে ডিটারজেন্ট ও রাসায়নিক মিশ্রিত পানি ব্যবহার করা হয়, সেখানে এই সিস্টেমটি বসানো যেতে পারে। পরিশোধিত লবণাক্ত পানিকে সহজেই আবার ঠান্ডা করার প্রক্রিয়া, বয়লারে ব্যবহার অথবা অন্যান্য শিল্পকারখানায় কাজে লাগানো সম্ভব। 

আর যেহেতু এই পদ্ধতিতে পানি থেকে ডিটারজেন্ট এবং ক্ষতিকর তেল প্রায় ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত অপসারিত হয়, তাই পরিশোধিত লবণাক্ত পানিকে লবণ-সহনশীল ফসল বা নির্দিষ্ট সেচব্যবস্থায় ব্যবহার করা যেতে পারে, যা স্বাদু পানির ওপর চাপ কমাবে বলে আশাবাদী এই খুদে বিজ্ঞানীরা। 

ডিবিটেক/জেএইচএ/মুইম