‘পোস্টাল ভোট বিডি’ উদ্বোধন; নিবন্ধনের সময়সীমা ঘোষণা
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ, ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ ছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ রাজনীতিবিদরা উদ্বোধনীতের উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ভার্চুয়ালি বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশি কূটনীতিক ও প্রবাসীরা অংশ নেন।
“তাদের ভোটের মাধ্যমে গণতন্ত্রের ভিত্তি হবে আরও বিস্তৃত, প্রতিনিধিত্বশীল এবং আরও শক্তিশালী।”
তিন মাসের কিছুটা বেশি সময়ে মোবাইল অ্যাপ বাস্তবায়নের দিকে যাচ্ছে তুলে ধরে তিনি ‘এটাকে দুঃসাহসী’ বলে দাবি করে তিনি আরো বলেন, বর্তমানে এক কোটি ৩০ লাখ মানুষ প্রবাসে বসবাস ও কর্মরত। এতদিন প্রবাসীরা ভোট দেওয়া থেকে বঞ্চিত হতেন। এই উদ্যোগ তাদের ভোটাধিকার বঞ্চনার অবসান করল। তিনি বলেন, প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার মাধ্যমে গণতন্ত্রের ভিত্তি আরও বিস্তৃত, আরও প্রতিনিধিত্বশীল হবে। সবার ভোটাধিকার নিশ্চিতে নির্বাচন কমিশন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটা কেবল একটি অ্যাপ নয়, এটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা।
সিইসি বলেন, এটা কেবল একটি অ্যাপ নয়, এটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা।
অনুষ্ঠানে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ বলেন, পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার পথে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। অ্যাপে নিবন্ধন করে ভোটাররা ডাকযোগে ব্যালট পাবেন এবং ভোট দিয়ে ফিরতি ডাকে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে পাঠাবেন। উদ্যোগটি শুধু প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন নয়, এটি বাংলাদেশের সার্বজনীন ও অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের জন্য মাইলফলক।
অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, প্রবাসীদের নিবন্ধনে আমাদের বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ আছে। প্রথমটি হলো, নিবন্ধনের হার। বিশ্বে প্রবাসী ভোটারদের গড় নিবন্ধনের হার ২ দশমিক ৭ শতাংশ। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হলো, ব্যালট ওয়েস্টেজ রেট। গ্লোবাল ওয়েস্টেজে রেট হলো ২৪ শতাংশ। প্রতি চারটিতে একটি ব্যালট নষ্ট হয়।
তিনি বলেন, আরেকটি চ্যালেঞ্জ হলো সাইবার নিরাপত্তা। বিশ্বে দেখা যায়, এ ধরনের ব্যবস্থার ক্ষেত্রে অন্তত পাঁচ বছর ট্রায়াল করা হয়। আমরা ট্রায়াল করেছি এক মাসও হয়নি। তবে আমরা নিশ্চতি করছি, এমন কোনো ত্রুটি যেন না থাকে যা ভোটকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।
সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে জানান, সৌদি আরবে প্রায় ৩৫ লাখ প্রবাসী বাংলাদেশি বসবাস করছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে অনেকেই নিবন্ধন করবেন এবং ভোট দেবেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে আউট অব কান্ট্রি ভোটিং সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন প্রজেক্টের প্রধান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) সালীম আহমাদ খান পুরো ভোটিং প্রক্রিয়া তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “তফসিল ঘোষণার পরে প্রবাসে ব্যালট পেপার চলে যাবে বাংলাদেশ থেকে। প্রবাসীদের কার্যক্রমের শেষের দিকে দেশের তিন ধরনের ব্যক্তির (অ্যাপে নিবন্ধিত) ঠিকানা ধরে পোস্টাল ব্যালট পাঠানোর কাজ শুরু হবে।”
তিনি বলেন, “তফসিল ঘোষণার পর এখান থেকে ব্যালট পাঠানো শুরু হয়ে যাবে, যাতে প্রতীক বরাদ্দের আগেই পোঁছে যায়। আর বরাদ্দের পর ভোটার নিজের ফোনের মোবাইল অ্যাপে প্রার্থী দেখে ভোটটা দিয়ে দেবেন। তারপর আবার ডাকযোগে পাঠাবেন।”
আয়োজকরা জানান, স্মার্টফোন অ্যাপ এবং ডাক ব্যালটের সমন্বয়ে তৈরি এই হাইব্রিড সমাধানের মাধ্যমে যোগ্য প্রবাসী, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত সরকারি কর্মকর্তা এবং সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।
ইসির মতে, অ্যাপটির লক্ষ্য অনাবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের জন্য দ্রুত, নিরাপদ এবং আরও ব্যবহারকারীবান্ধব প্রক্রিয়া নিশ্চিত করে ভোটদান ব্যবস্থার একটি নতুন পথ উন্মোচন করা। ইসির কর্মকর্তারা জানান, বিশ্বের ১৪৩টি দেশে ৪০ দিনব্যাপী ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়া চলবে।
ডিবিটেক/বিটিডিটি/মুইম







