শেখ হাসিনার মামলার রায়: ন্যায়বিচার ও স্বচ্ছতার দাবি ফখরুলের

১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১৯:১৯  
১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ২৩:২৩  
শেখ হাসিনার মামলার রায়: ন্যায়বিচার ও স্বচ্ছতার দাবি ফখরুলের

গত বছরের জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা একটি মামলার রায় ঘোষণা করা হবে সোমবার (১৭ নভেম্বর)। এ মামলায় ‌‌‌‘পূর্ণ ন্যায়বিচার ও স্বচ্ছতা'র দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

১৬ নভেম্বর, রবিবার বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এ দাবি জানিয়েছেন।

ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছে, ‍“আগামীকাল (১৭ নভেম্বর) বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার রায় ঘোষণা করতে যাচ্ছে, যেখানে গত বছরের ঢাকায় সংঘটিত প্রাণঘাতী সহিংসতা ও দমন-পীড়নের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। আমরা পূর্ণ ন্যায়বিচার এবং স্বচ্ছতা  দাবি জানাই।”

সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় ঘোষণা করবেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠনের অভিযোগে দায়ের করা ওই মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও আসামি করা হয়েছে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা সত্ত্বেও শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান আদালতে উপস্থিত হয়ে আত্মসমর্পণ না করায় তাদেরকে পলাতক ধরা হয়েছে। সাবেক আইজিপি আবদুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হিসাবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

রায়কে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিন রাজধানীতে ককটেল বিস্ফোরণ ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা বেড়েছে। যা জনমনে উদ্বেগ তৈরি করেছে। রায়ের আগের কয়েক দিনে নিউ ইস্কাটন, আগারগাঁও, বিমানবন্দর, রেলস্টেশন, মিরপুর-হাতিরঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক ককটেল বিস্ফোরণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রবিবার নিউ ইস্কাটন রোডে বিস্ফোরণে পথচারী আবদুল বাসির (৫০) আহত হন। একই সময়ে মিরপুর-হাতিরঝিল এলাকাজুড়ে চারটি বিস্ফোরণ এবং গত দুই দিনে রাজধানীতে ৯টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন প্রশ্ন তৈরি করেছে।

ডিএমপি জানায়, ১ থেকে ১১ নভেম্বর রাজধানীর ১৫টি স্থানে মোট ১৭টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। গত দুই দিনেই ৯টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও নথিভুক্ত হয়েছে। এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৭টি মামলা হয়েছে এবং ১১ নভেম্বর পর্যন্ত ৫০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যদিও বিস্ফোরণ বা অগ্নিসংযোগের কোনোটিতেই বড় ধরনের হতাহতের ঘটনা ঘটেনি, তবে ধারাবাহিক ঘটনার ফলে নগরবাসীর মধ্যে অস্থিরতা বাড়ছে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ঢাকা, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর ও মাদারীপুরের সার্বিক নিরাপত্তাসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। 

পুলিশ বলছে, এই রায়কে কেন্দ্র করে যেকোনও ধরনের নাশকতা বা সহিংসতা ঠেকাতে তারা ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করছে। পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘যারা নাশকতা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রায়কে কেন্দ্র করে কোনও ধরনের অস্থিতিশীলতা বরদাশত করা হবে না।’

ডিবিটেক/আরবি/ইক