কর্মসংস্থান সঙ্কোচনে প্রযুক্তি ব্যবহারে সতর্ক করলেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান

১৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১৯:৪৪  
কর্মসংস্থান সঙ্কোচনে প্রযুক্তি ব্যবহারে সতর্ক করলেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান

কর্মসংস্থান কমায় এমন প্রযুক্তির ব্যবহার সতর্ক করলেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান এমদাদ উল বারী। তরুণ উদ্ভাবকদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, আমরা যাই ইনোভেট করি, যে টেকনোলজি তথা এআই ব্যবহার করি তা যেনো আমাদের কর্মসংস্থানকে সংহত করে। ডেমোগ্রাফিক ডেভিডেন্ট প্রিজার্ভ করতে হবে। এমপ্লয়মেন্টকে রিপ্লেস করা যাবে না। 

তিনি আরো বলেছন, আমরা একটি জনবহুল দেশ। আমাদের সমস্যা সমস্যা পশ্চিমের দেশের মতো নয়। সেখানে মানুষ না থাকায় যন্ত্র দিয়ে কাজ করায়। আমাদের অবস্থাটা তেমন নয়। তাই আমাদের উৎপাদনশীলতার দিতে হাঁটতে হবে। কেননা, ডেমোগ্রাফিক ডেভিডেন্ট আমাদের বড় একটা সুবিধা। কিন্তু এর যথাযথ ব্যবহার করতে না পারলে তা দায় হয়ে পড়ে। তাই উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে কর্মসংস্থান রিপ্লেস করা যাবে না।   

১৮ অক্টোবর রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিকে স্থাপিত ইনডিপেন্ডেন্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে  ‘বাংলাদেশ আইসিটি অ্যান্ড ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ডস ২০২৫’ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়ার আগে এমনটাই বলেছেন তিনি। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দেশের তিনটি খাতের কথা তুলে ধরে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেছেন, আমাদের কৃষি, শিল্প এবং সেবা খাতে একটি বৈষম্য রয়েছে। দেশের ৩৪-৩৫ শতাংশ কর্মসংস্থান রয়েছে কৃষি খাতে। অথচ এখান থেকে মাত্র ১০-১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি  দিচ্ছে। একই ভাবে ইন্ডাস্ট্রিতে ২০-২১ শতাংশ জব এমপ্লয়মেন্টের বিপরীতে ডেভিডেন্ট দিচ্ছে ৩৮-৩৯ শতাংশ। কিন্তু সেবা খাতে ৪৩-৪৪ শতাংশ এমপ্লয়মেন্ট হচ্ছে’ জিডিপি দিচ্ছে ৫০-৫১ শতাংশ। একসময় কৃষিতে ৭০ শতাংশ থাকলেও ধীরে ধীরে তা কমে আসছে। এখানে অনেক প্রযুক্তি দরকার। প্রয়োজনে এআই সহ ফ্রন্টিয়ার সব ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। বিশ্বজুড়ে অনেক স্থলেই মানুষ রোবটিক নিয়ে কথা বলছে। তবে আমাদের সবচেয়ে বড় রফতানি খাত পোশাক শিল্পে রোবটিক ব্যবহার প্রাথমিক চিন্তা হওয়া উচিত নয়। কেননা, এখানে আমাদের বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এখানে আমাদের দরকার প্রেডিকটিভ মেইটেন্যান্স; বিহেভিয়ার প্রেডিকশন, সাপ্লাচেইন ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি। আমাদের সবচেয়ে কমপ্লিকেটেড জায়গা হচ্ছে সেবা খাত। কাস্টমার কেয়ারে প্রযুক্তির রিপ্লেস করার দরকার নেই। তবে আমরা স্বাস্থ্য সেবায় এআই ভিত্তিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারি। কেননা, আমাদের রোগীর তুলনায় চিকিৎসক কম। ফলে এক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহারে আমাদের নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। 

বাংলাদেশের অনলাইন ফ্রিল্যান্সাররা সবচেয়ে ঝুঁকিতে উল্লেখ করে মেজর জেনারেল মো. এমদাদ উল বারী বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অনলাইন ফ্রিল্যান্সার সরবরাহকারী দেশ। ফ্রিল্যান্স মার্কেটের ৬০ শতাংশের মতো বাংলাদেশী। তাই এদের অনতিবিলম্বের দক্ষতার উন্নয়ন দরকার। তাদের যদি এআই ব্যবহার শেখানো না হয়; তবে তারা কাজ হারাবে। এছাড়াও ইনফরমাল খাতকে ফরমাল করতে হবে। কেননা, আগে যারা মাথায় মাথায় করে কাপড় বিক্রি করতেন তারা এখন অনলাইনে এসেছেন। ডমেস্টিক কোম্পানিগুলোকে ফরমালাইজ করতে হবে। এজন্য আমাদের সেবার ইন্টিগ্রেশন করতে হবে। কাস্টমাইজ হতে হবে।

‘আজ থেকে ১৫ বছর পরের কথা কল্পনা করুন। এআই চালিত অবতারগুলো আমার কাজ করে দিচ্ছে। তখন আমাদের ভূমিকা হবে? তখন কোনটাকে আমরা বলবো- এই হলো আমাদের জীবন। মূলত যে কাজগুলো আমরা করতে চাই না বা করতে পারি না তা টেকনোলজিকে ডেডিকেটেড করবো। যে কাজকে আমি আমার জীবন মনে করবো তা প্রযুক্তিকে দেবো না’- যোগ করেন তিনি।  

বাংলাদেশ আইসিটি অ্যান্ড ইনোভেশন নেটওয়ার্ক (বিন) এর সভাপতি সৈয়্যদ আলমাস কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন আইসিটি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। 

বক