সেমিকন্ডাক্টর খাতে ১০ বছরের কর অব্যাহতি ও শুল্কছাড়ের সুপারিশ

৩ জুলাই, ২০২৫ ১৬:১০  
৩ জুলাই, ২০২৫ ২৩:৪৬  
সেমিকন্ডাক্টর খাতে ১০ বছরের কর অব্যাহতি ও শুল্কছাড়ের সুপারিশ

সেমিকন্ডাক্টর খাতে বর্তমানে বাংলাদেশের বছরে প্রায় ৬০ লাখ মার্কিন ডলারের (৬ মিলিয়ন) রপ্তানি আয় আসছে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এই রপ্তানি আয় এক বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। এ জন্য খাতটিতে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ বছর কর অব্যাহতি, নির্দিষ্ট যন্ত্রাংশে শুল্কছাড় ও বিশেষ তহবিল সুবিধা দেওয়া প্রয়োজন।

২ জুন, বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় বাংলাদেশের সেমিকন্ডাক্টরশিল্পের উন্নয়নে গঠিত জাতীয় টাস্কফোর্স কমিটি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সেমিকন্ডাক্টর টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন (আশিক চৌধুরী), বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের অধ্যাপক এ বি এম হারুন-উর-রশিদ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ ও সেমিকন্ডাক্টর প্রতিষ্ঠান উল্কাসেমির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ এনায়েতুর রহমান। 

বাংলাদেশের সেমিকন্ডাক্টরশিল্পের চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও ভবিষ্যতে করণীয় সম্পর্কে সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে গত ১ জানুয়ারি ১৩ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। ওই সময় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, এক মাসের মধ্যে এই টাস্কফোর্স প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রতিবেদন জমা দেবে।

বৈঠক শেষে দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে  সংবাদ সম্মেলনে  বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিডার চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন জানান, সেমিকন্ডাক্টর খাতের বিশ্ববাজার ধরতে বাড়তি নজর দিচ্ছে বাংলাদেশ। আর তাই আগামী পাঁচ বছরে দেশের সেমিকন্ডাক্টর খাতে কয়েকশো মিলিয়ন থেকে বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগ হতে পারে।

আশিক চৌধুরী বলেন, এই খাতে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে। সারাবিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এ শিল্পকে এগিয়ে নিতে কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছে। এরমধ্যে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার সুপারিশ দেয়া হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দক্ষ সসফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার তৈরিতে কাজ করবে টাস্কফোর্স। পাশাপাশি প্রবাসে থাকা বাংলাদেশি ও সিলিকন ভ্যালিতে দক্ষ রাষ্ট্রের সাথেও কাজ করবে। 

সরকার দক্ষ জনবল তৈরি করে এই খাতে বিলিয়ন ডলার উপার্জন করার টার্গেট নিচ্ছে উল্লেখ করে বিডা চেয়ারম্যান বলেন, প্রতিবছর কয়েক হাজার দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার তৈরি করার টার্গেট নেয়া হচ্ছে। এই খাতের বিকাশে যেই ধরনের সহায়তা দরকার সরকার সেটা করবে৷ যেটার ঘাটতি রয়েছে সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এজন্য স্বল্প ও মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেয়া হবে।

এ নিয়ে সেমিকন্ডাক্টর টাস্কফোর্সের সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা এরই মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।  

সংবাদ সম্মেলনে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী জানান, সেমিকন্ডাক্টর খাতের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে ২০২৫-২৬ সালের মধ্যেই স্পষ্ট ও লক্ষ্যভিত্তিক কিছু উদ্যোগ নিতে হবে। যেমন চিপ অ্যাসেম্বলিং ও প্যাকেজিং কারখানার জন্য গবেষণাকাজে যুক্ত প্রতিষ্ঠানকে নির্দিষ্ট শর্ত সাপেক্ষে ১০ বছর পর্যন্ত কর অব্যাহতি দেওয়া যেতে পারে।