এলজিইডি প্রকৌশলীকে কৃষি উপদেষ্টা

আপনারেই রিপেয়ার কইরা দিমু

১০ এপ্রিল, ২০২৫  
১১ এপ্রিল, ২০২৫  
আপনারেই রিপেয়ার কইরা দিমু

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল (এলজিইডি) অধিদফতরের এক নির্বাহী প্রকৌশলীকে ফোন করে কড়া ঝাড়ি দিয়েছেন কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।  সুনামগঞ্জ গজারিয়ার রাবার ড্যামের ত্রুটি নিয়ে কৃষকদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এলজিইডির সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলীকে ফোন করে তিনি বলেছেন, ‘ও আপনে খোঁজ রাখেন নাই।গজারিয়ায় র‌্যাবার ড্যামের কাজ শেষ হতে কতদিন লাগবে? শুনেন, সাত দিনের মধ্যে ড্যাম রিপেয়ার করবেন, না হলে আপনাকে কিন্তু রিপেয়ার কইরা দিমু।'

প্রকৌশলীর ওপর রেগে গিয়ে তিনি আরো বলেন,পয়সা খাইবেন, পকেটে ঢুকাইবেন খালি, কাম করবেন না! আপনি এই মুহূর্তে দেখার হাওরে আসেন’ সাত দিনের মধ্যে এটা করবেন। না করলে বুঝতে পারছেন তো, আপনারেই রিপেয়ার কইরা দিমু।’

 বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকালে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার দেখার হাওরের গোবিন্দপুর এলাকায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। অনুষ্ঠানে কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে একজন কৃষকের ধান কাটেন কৃষি উপদেষ্টা। এর মাধ্যমেই হাওরে বোরো ধান কাটার উদ্বোধন করেন তিনি। এরপর কৃষকদের সঙ্গে ফসল, হাওরের ফসল রক্ষাবাঁধ, ধানের দামসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।

উপদেষ্টা প্রতীকী ধান কেটে কর্মসূচির উদ্বোধনের পর কৃষকদের সঙ্গে হাওরের ফসল, ধানের দাম, হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন। এ সময় কয়েকজন কৃষক জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ভাদেরটেক এলাকার গজারিয়া রাবার ড্যামের সমস্যার কথা জানান। এটি এখনও সংস্কার না হওয়ায় তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তখন উপদেষ্টা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলীর খোঁজ করেন। কিন্তু নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন তখন সেখানে ছিলেন না। পরে উপদেষ্টা তাকে ফোন করে ওই রাবার ড্যামের বিষয়ে জানতে চান। 

এ সময় উপদেষ্টা ফোন করে প্রকৌশলীকে রাবার ড্যামটির কাজ সাত দিনের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেন। প্রকৌশলী কেন এখানে আসেননি, সেটিও জানতে চান উপদেষ্টা। একপর্যায়ে তাকে সেখানে আসতে বলেন। ফসল রক্ষা বাঁধের কাজে কোনও ঝামেলা হলে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী ঝামেলায় পড়বেন বলেও জানান উপদেষ্টা। তিনি তখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদারকে ডেকে বাঁধের বিষয়ে খোঁজ নেন। সেইসঙ্গে বাঁধের কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেন।

এ সময় উপদেষ্টার পাশে ছিলেন সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা উন নবী। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) মো. জাকির হোসেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক সাইফুল ইসলাম, পুলিশের সিলেট রেঞ্জের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. মুশফিকুর রহমান, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া, পুলিশ সুপার মো. তোফায়েল আহাম্মেদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সিলেট অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘কৃষি ও কৃষকরাই দেশটাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। এজন্য কৃষকদের সব সময় ধন্যবাদ দিতে হবে। কৃষকের ধানের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করা হবে। সরকার ধান কিনবে। ধান কেনায় সিন্ডিকেট হলে সেটি আমরা সোজা করে দেবো।’