এমএফএস অপব্যবহার প্রতিরোধে শাস্তি কার্যকরের বিকল্প নেই: সিআইডি
মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) অপব্যবহার প্রতিরোধে প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় আইনগত ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, তথ্য বিনিময় এবং পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহ।
রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে ২৬ নভেম্বর, বুধবার অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এমন মন্তব্য করেন তিনি।
এমএফএস ব্যবহারের মাধ্যমে অনলাইন ও অফলাইনে সংঘটিত বিভিন্ন অপরাধের ধরণ, প্রতিরোধ পদ্ধতি এবং প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ বিষয়ে মতবিনিময় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
সভকরেন সিআইডি প্রধান। এসময় সিআইডির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সিআইডি প্রধান তার বক্তব্যে বলেন, “এমএফএস অপব্যবহার প্রতিরোধে আমাদের সামনে থাকা প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় আইনগত ও প্রশাসনিক পদক্ষেপ, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, তথ্য বিনিময় এবং পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে হবে। সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি করা অপরিহার্য এবং প্রয়োজনীয় নিয়মকানুন ও নির্দেশনা কঠোরভাবে অনুসরণ নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষভাবে, রেগুলেটরি সংস্থার বিধিমালা এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কার্যকর প্রয়োগের কোনও বিকল্প নেই।”
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, সভাটি অত্যন্ত সাবলীল ও অংশগ্রহণমূলক ছিল। অংশগ্রহণকারী আলোচকদের মধ্যে এমএফএস ব্যবহারের মাধ্যমে সংঘটিত বিভিন্ন অপরাধ, যেমন প্রতারণা, মানবপাচার, চোরাচালান, হুন্ডি, অর্থপাচার এবং অনলাইন জুয়া ও বেআইনি গেমিং সংক্রান্ত কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
সভায় ১৬টি ভিন্ন ভিন্ন সংস্থার (বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএফআইইউ, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, মিডল্যান্ড ব্যাংক, বিকাশ লিমিটেড, নগদ, রকেট, উপায়, স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি) এবং সিটিটিসি (ডিএমপি)) পেশাদার বিশেষজ্ঞগণ এ বিষয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা, ধারণা এবং পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।
তাদের বক্তব্যের মূল বিষয় ছিল- কীভাবে সীমিত পরিচয় নির্ভর এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে অস্বাভাবিক অর্থপ্রবাহ করা হয়, অপরিচিত বা গোপন পরিচয় ব্যবহার করে লেনদেন করা হয় এবং অপরাধলব্ধ অর্থ স্থানান্তরের নানা কৌশল প্রয়োগ করা হয়।
জসীম উদ্দিন খান জানান, সিআইডির কর্মকর্তারা তাদের স্ব স্ব উপস্থাপনায় ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইমের তদন্ত এবং আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে বাস্তবে যে ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হন তা তুলে ধরেন। তারা মত প্রকাশ করেন যে, ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ, বিটিআরসি, বিএফআইইউ ও পিএসডি তাদের নিজ নিজ কার্যক্রম যথাযথভাবে সম্পন্ন করলে ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইমের মতো অত্যন্ত জটিল এ অপরাধ প্রবণতাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এ সংক্রান্তে সিআইডির সংশ্লিষ্ট ইউনিটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ তাদের অভিজ্ঞতা প্রসূত গুরত্বপূর্ণ মতামত তুলে ধরেন।
তিনি জানান, সভার আলোচ্য বিষয় এবং উপস্থাপিত মতামতের ভিত্তিতে এমএফএস অপব্যবহার প্রতিরোধে দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় ও পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা আরও জোরদার করার জন্য ফোকাল পয়েন্ট ব্যক্তিদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। ভবিষ্যতে সিআইডির নেতৃত্বে এ ধরনের সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা, মতবিনিময় ও কর্মশালার আয়োজন করা হবে।
ডিবিটেক/ওটি/ইকে/ওআর







