আইইউটি ৩৭তম সমাবর্তনে
তরুণদের উদ্ভাবক, উদ্যোক্তা হওয়ার তাগিদ শিক্ষা উপদেষ্টার
গাজীপুরের বোর্ড বাজার ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশে ২৬ অক্টোবর, রবিবার অনুষ্ঠিত হলো গাজীপুরে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি) এর ৩৭তম সমাবর্তন। বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইইউটির প্রো-উপাচার্য ড. হিসেইন আরাবি নুর।
প্রধান অতিথি স্নাতকদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আইইউটি হচ্ছে ওআইসি কর্তৃক বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত একমাত্র আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়। এটি দেশের জন্য গর্বের বিষয়। সরকার সবসময় আইইউটির পাশে থাকবে এবং এর উন্নয়ন ও সাফল্যে পূর্ণ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
ভবিষ্যতের জন্য দক্ষ তরুণ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ সরকার সমতা, মানোন্নয়ন ও ডিজিটাল রূপান্তরকে অগ্রাধিকার দিয়ে শিক্ষা সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এমন এক শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই, যা শিক্ষার্থীদের বিশ্বমানের দক্ষ, সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী নাগরিক হিসেবে তৈরি করবে। যদি সবাই চাকরির অপেক্ষা করে, তবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে কে? ওআইসি দেশগুলোর এখন প্রয়োজন চাকরিপ্রার্থী নয়, চাকরিদাতা তরুণদের।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তোমাদের জন্য শিক্ষা একটি আমানত। এটি মানবকল্যাণে, নৈতিকতা ও উদ্ভাবনের পথে ব্যবহার করো। বিশ্বাস হোক তোমার দিকনির্দেশনা, জ্ঞান হোক তোমার আলো, সহমর্মিতা হোক তোমার শক্তি।’
বাংলাদেশ সরকার সবসময় আইইউটির পাশে থাকবে উল্লেখ করে শিক্ষা উপদেষ্টা আরও বলেন, উন্নয়ন ও সাফল্যে পূর্ণ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। শিক্ষা কোনো ব্যয় নয়; এটি হলো শান্তি, সমৃদ্ধি ও মানবসম্পদে বিনিয়োগ।
ওআইসি মহাসচিব ও আইইউটির চ্যান্সেলর হিসেইন ইব্রাহিম তাহা তার বার্তায় বলেন, আইইউটি ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে কারিগরি শিক্ষা ও নৈতিক নেতৃত্বের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তিনি বাংলাদেশের সরকারকে অব্যাহত সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সিঙ্গাপুরের সাবেক অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ওআইসির রাষ্ট্রদূত ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদ আল্লাহ আহমদ খোকার।
আইইউটি গভর্নিং বোর্ডের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রদূত আদম বাগুদু জাকারি (বেনিন), মোহামুদ মোহামেদ আবদুল্লে (সোমালিয়া), মাহামাত সালেহ আলজাজুলি (চাদ), এবং ওআইসির মিসেস আইদা তুমি (তিউনিসিয়া)।
ঢাকাস্থ বিভিন্ন দূতাবাসের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন: পাকিস্তানের উপ-হাইকমিশনার মুহাম্মদ ওয়াসিফ; ফিলিস্তিনের উপ-রাষ্ট্রদূত জিয়াদ আল হাসাল; ইন্দোনেশিয়ার সাহিদ নুরকারিম ও মিস ধাউরানা আতিকাহ দেবী; লিবিয়ার গাসসান এম. এ. মিসউরি।
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম স্নাতকদের তাদের কৃতিত্বের জন্য প্রশংসা করেন এবং শিক্ষা, গবেষণা এবং উদ্ভাবনে উৎকর্ষতার প্রতি আইইউটির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আউটকাম-ভিত্তিক শিক্ষা (ওবিই) এর সফল বাস্তবায়ন এবং কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র্যাঙ্কিং ২০২৬-এ এর অন্তর্ভুক্তির কথা তুলে ধরেন।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে কূটনীতিক, অনুষদ সদস্য এবং অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ১৬টি ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রের ৫২২ জন স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। অসামান্য শিক্ষাগত উৎকর্ষতার জন্য ইউসুফ ইবনে কামাল নিলয়কে ওআইসি স্বর্ণপদক এবং মো. রহিব-বিন-হোসেন, নাবা উদ্দিন, মো. মাহমুদুল হাসান ভূঁইয়া, মিসেস রামিশা সালসাবিল, মিসেস মোস্তফা নোসিন নাহার স্মিতা, মিসেস সামিয়া নওশীন এবং সাজিদুর রহমান চৌধুরীকে আইইউটি স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়েছে। তাদের অসাধারণ একাডেমিক কৃতিত্বের জন্য এই পদক প্রদান করা হয়।







