লাইসেন্স শর্তে যুক্ত হতে যাচ্ছে কিউআরকোড

দেশে কিউআর কোডে পেমেন্টসহ অন্যান্য ডিজিটাল লেনদেনে সর্বসাধারণকে উদ্বুদ্ধকরণের কার্যক্রম জোরদার করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এজন্য ব্যাংক ও মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এছাড়াও ২০২৭ সালের মধ্যে দেশের ৭৫ শতাংশ লেনদেন ডিজিটাল করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যবসায়ীদের কিউআর কোড ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে ট্রেড লাইসেন্সের সঙ্গে শর্ত জুড়ে দেয়ার পরিকল্পনাউ নেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান জানিয়েছেন, ক্যাশলেস ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার লক্ষ্যে দুই বছর মেয়াদি একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ট্রেড লাইসেন্সের সঙ্গে কিউআর কোড গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা এবং বিভাগীয় শহরের নিউমার্কেটগুলোর দোকানগুলোতে পস মেশিন (পিওএস) স্থাপন ও কিউআর কোর্ড গ্রহণে সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশনকে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সূত্রমতে, গত জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভায় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। ওই সভায় বলেন, মার্চেন্ট পর্যায়ে কিউআর কোড ব্যবহারে কিছু মৌলিক সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরেন বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগের পরিচালক নওশাদ মোস্তাফা। তিনি জানান, গ্রাহকরা মার্চেন্টকে কিউআর কোডে পেমেন্ট করতে পারলেও মার্চেন্টরা যখন হোলসেলারদের কাছ থেকে পণ্য কিনতে চান, তখন তারা কিউআর কোডে পেমেন্ট করতে পারছেন না। ফলে ব্যাংক থেকে নগদ তুলতে হচ্ছে, যা পুরো প্রক্রিয়াটিকে জটিল করে তুলছে এবং কিউআর কোড ব্যবহার প্রসারে বাধা সৃষ্টি করছে। ফলে বাজারভিত্তিক প্রণোদনা প্রদানের মাধ্যমে সভায় হোলসেলারদের কিউআর কোড গ্রহণে উৎসাহিত করার প্রস্তাব দেন নওশাদ মোস্তাফা।
উদ্যোগ বাস্তবায়নে ইতিমধ্যেই ব্যবসার লাইসেন্স নবায়ন ও নতুন লাইসেন্স নিতে কিউআর কোড গ্রহণের শর্তারোপ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে স্থানীয় সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আরিফ হোসেন খান। সেই চিঠিতে ইতিবাচক জবাব পেয়ে ব্যাংকার্স সভায় নেওয়া অন্য সিদ্ধান্তগুলোও বাস্তবায়ন পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছন তিনি।
প্রসঙ্গত, ডিজিটাল লেনদেনে কিউআর (কুইক রেসপন্স) কোড হলো এক ধরনের বারকোড যা স্ক্যান করে দ্রুত ও সহজে পেমেন্ট করা যায়। এটি একটি পেমেন্ট পদ্ধতিতে, যেখানে গ্রাহকের স্মার্টফোনের একটি পেমেন্ট অ্যাপ দিয়ে কিউআর কোড স্ক্যান করে অর্থ পরিশোধ করা হয়। এই পদ্ধতিতে ঐতিহ্যবাহী পেমেন্ট কার্ড ও অন্যান্য পরিকাঠামো এড়িয়ে যাওয়া যায়, যা লেনদেনকে সহজ, নিরাপদ ও দ্রুত করে তোলে। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রবর্তিত বাংলাকিউআর (Bangla QR) কোড হলো এই ধরনের একটি সর্বজনীন ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থা।