এমএফএস সেবা চালু করতেই ডেপুটি সিইও : ইওহান বুসে

২৯ এপ্রিল, ২০২৫  
২৯ এপ্রিল, ২০২৫  
এমএফএস সেবা চালু করতেই ডেপুটি  সিইও : ইওহান বুসে

আনুষ্ঠানিক ভাব কাজে যোগ দিয়েছেন মোবাইল অপারেটর বাংলালিংকের নতুন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইওহান বুসে। ওরেদো ওমানের চিফ কমার্শিয়াল অফিসার এবং ডয়েশ্চ টেলিকম ক্রোয়েশিয়া, এক্সিস ও সিংটেলের উচ্চ পদে দায়িত্ব পালন শেষে গত ৬ এপ্রিল প্রথম ঢাকায় এসে নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করেন তিনি। এরপর প্রথম বারের মতো সোমবার রাতে মুখোমুখি হলেন টেলকম ও প্রযুক্তি খাতের গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন  বাংলালিংক-এর চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান।

প্রথম মিট দ্য প্রেসের শুরুতেই টেলিযোগাযোগ ও প্রযুক্তি বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের (টিআরএনবি) সভাপতি সমীর কুমার দে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের নিয়ে তাকে ফুল দিয়ে বরণ করেন। এরপর টেকনোলজি মিডিয়া গিল্ড বাংলাদেশের (টিএমজিবি) সভাপতি মোঃ কাউছার উদ্দীন সংগঠনের কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্যদের নিয়ে শুভেচ্ছা জানান। সবশেষ ফুলেল শুভেচ্ছা জানান বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি হিটলার এ হালিম ও সাধারণ সম্পাদক সাব্বিন হাসান। এসমই তিনটি সংগঠনের পক্ষ থেকেই ইওহান বুসের নতুন পথচলার জন্য শুভকামনা করেন। 

বক্তব্যের শুরুতেই নিজের ক্যারিয়ারের দীর্ঘ সময়ের উল্লেখযোগ্য বিষয় তুলে ধরেন  ইওহান বুসে। এরপর একটি উপস্থাপনার মাধ্যমে নিজের পথচলার চ্যালেঞ্জ ও প্রত্যাশার পেখম মেলে ধরেন তিনি। জানালেন, উচ্চ করচাপ আর তরঙ্গ মূল্য নিয়ে বাংলাদেশের টেলিকম খাতের স্থিতি এবং নতুন বিনিয়োগের ঝুঁকির বিষয়। ১০০ টাকার মধ্যে সাড়ে ৫৪ টাকাই যায় ট্যাক্সে। বাকি সাড়ে ৪৫ টাকা দিয়ে পুরো ব্যবসায় পরিচালনা অনেকটাই দূরুহ। চ্যাটজিপিটির হিসাবে বাংলাদেশের আরকু টু জিডিপি প্রবৃদ্ধি ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে পেছনে। মাত্র দশমিক ৬৯। ভারতের ১ শতাংশ এবং পাকিস্তানের ৯ শতাংশ। ফলে বর্তমান সময়ে শিক্ষা-বিনোদন-চাকরি- সবকিছুতেই ব্যবহৃত মোবাইল ফোনকে এখন আর কথা বলার চেয়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির হাতিয়ার হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে। তাই ভয়েস নয় এখন ডেটায় বিশি নজর দেবে বাংলালিংক। একটি টেকসই ডিজিটাল সমাজ গড়ে তুলতে ডিজিটাল সেবার পরিধি বাড়াবে। কিন্তু এখানে ব্যবসায় পরিবেশ খুবই চ্যালেঞ্জিং। তারপরও আমরা ভালো দিনের প্রত্যাশায় এখানে ডিজিটাল সেবার একটি টেকসই ইকো সিস্টেম গড়ে তুলতে চাই।  গত তিন বছরে বাংলালিংক খুব দ্রুততার সঙ্গে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করেছে। কেউ যেন পিছিয়ে না থাকে সেদিকটাতেই আমরা নজর দিচ্ছি। কিন্তু পরিবেশ প্রতিবেশের কারণে আমরা অনেক সময়ই ভোক্তাদের পূর্ণ তুষ্টি দিতে পারছি না। তাই রেগুলেটরি এবং ইনভেস্ট পয়েন্টে অপারেটররা আগামী দিনে সুবিধা জনক অবস্থায় থাকবে বলেও প্রত্যাশা করি।  

এক প্রশ্নের জবাবে এরিকের ফিরে যাওয়ার পর প্রথম বারের মতো বাংলালিংক বাংলাদেশে কোম্পানির আইন বিভাগের প্রধানকে ডেপুটি সিইও হিসেবে নিয়োগ দেয়া হলো। এটা কি কোনো আইনি জটিলতার মুখোমুখি হওয়া কিংবা বাজার থেকে পুঁজি গুটিয়ে নেয়ার আশঙ্কা তৈরি হয় না? জবাবে, বাংলালিংক বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা গুটাচ্ছে না নিশ্চয়তা দিয়ে ওহান বললেন, ব্যবসায় সম্প্রসারণে আমাদের সুদৃঢ় একটি লক্ষ্য রয়েছে। এর মধ্যে মবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে একটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল ওয়ালেট উপহার দেয়া। এটাই ডেপুটি সিইও এর প্রধান ম্যান্ডেট। আমরা এখানে আমাদের সক্ষমতা আরো বাড়িয়ে এই খাতের ইনক্লুসিভ উন্নয়ন নিয়ে কাজ করবো। আমার বিশ্বাস বাংলালিংকের জন্য সামনে আরো ভালো সুযোগ আসছে।  নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং নতুন নতুন ডিজিটাল সেবা দিয়ে আমরা দ্রুত এগিয়ে যাবো।   

অপর প্রশ্নের জবাবে এখনই সেবা মূল্য কমানোর চেয়ে সেবার মানের দিকে বেশি নজর দেবে বলে জানান বাংলাংকের নতুন প্রধান কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আমরা পৃথিবীর অন্যান্য দেশের চেয়ে কম দামেই সেবা দেই। এখানে ব্যবসায় ব্যয় অনেক। মুদ্রস্ফীতি ৯ শতাংশ। টাকার মান ক্রমেই কমছে। তাই আমাদের এখন দামের চেয়ে মানের দিকেই বেশি নজর দেয়া দরকার। 

ভিওন এর সঙ্গে স্টারলিংক এর চুক্তি থাকলেও সমতলের দেশ হিসেবে বাংলাদেশে মোবাইল নেটওয়ার্কে সবাইকে সংযুক্ত থাকাই সাশ্রয়ী হবে বলে মনে করেন ইওহান।