বিএসসিএল এর হাত ধরে বিনিয়োগ সম্মেলনে স্টারলিংক ডেমো টেস্ট

এখনো দেশে চালু হয়নি কৃত্রিম উপগ্রহ ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা স্থান স্টারলিংক। গত রবিবার বিনিয়োগ বোর্ডের অনুমোদন পেয়েছে। সোমবার বাণিজ্যিক সেবা দেয়ার জন্য বিটিআরসির কাছে করেছে আবেদন। তবে সেই লাইসেন্স পাওয়ার আগেই ইলন মাস্কের এই নেটওয়ার্ক ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছেন কেউ কেউ। এই সুযোগটা করে দিয়েছে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় স্যাটেলাইট কোম্পানি বিএসসিএল।
তাদের ব্যানারে থাকা কিউআর কোড স্ক্যান করে সংযুক্ত হচ্ছেন স্টারলিংকে। এই সংযোগ নিয়ে কেউ ইউটিউব, কেউবা আবার ভিডিও কল করছেন। করছেন লাইভ সম্প্রচার। এতে গড় গতি পাওয়া গেল ১২০ এমবিপিএস। ল্যাটেন্সি ৮০-১২০ এমএস। একটি রাউটারে সংযুক্ত হতে পাচ্ছেন সর্বোচ্চ ১০০ জন।
এই গতিটি সাধারণ মানুষের জন্য উপযোগী হলেও গেমার অথবা উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য খুব একটা আকর্ষণীয় নয় বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিপল ই শিক্ষার্থী রাশেদ মুনা।
বিএসসিএল এর গণমাধ্যম ব্যবস্থা ওমর ফারুক জানালেন, বাংলাদেশে আর্থ স্টেশন স্থাপন করা হলে এই গতি আরো বাড়বে।
আনুষ্ঠানিক উন্মোচনের আগে ডেমো টেস্টে তরুণ উদ্যোক্তা বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে তারবিহীন উচ্চগতির উচ্চগতির এই ইন্টারনেট সেবার স্বাদ দিতে রাজধানী হোটেল ইন্টারকটে কন্টিনেন্টালের ছাদের উপর স্থাপন করা হয়েছে চারটি টার্মিনাল। টার্মিনালটি সংযুক্ত হয়েছে মালোয়েশিয়া থেকে। প্রধান উপদেষ্টার ৯০ কার্য দিবসের মধ্যে সেবাটি চালুর প্রতিশ্রুতি হিসেবে বাংলাদেশের বিনিয়োগ মেলায় প্রবেশপথে বসানো হয়েছে রাউটার। আরেকটি রাউটার ব্যবহার করা হয়েছে বলরুমে। তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার বর্গফুটের মধ্যেই এই সংযোগ পাচ্ছেন ব্যবহারকারীরা।
বুথে দায়িত্বরত প্রতিষ্ঠানটির সহকারী ব্যবস্থাপক তৌহিদুল ইসলাম জানান, বিনিয়োগ সম্মেলনে চারটি টার্মিনালের মাধ্যমে পাঁচটি ওয়াইফাই সংযুক্ত করে স্টারলিংকের ইন্টারনেট সেবা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি রাউটারের বিপরীতে একই সময়ে ৭০ থেকে ১০০ জন ব্যবহারকারী ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছেন।
তিনি আরও জানান, বিটিআরসির নিয়ম অনুসারে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্টারলিংক ইন্টারনেট চালু করতে হলে তার গেটওয়ে স্টেশন স্থাপন করতে হবে। আপাতত মালয়েশিয়ার গেটওয়ে ব্যবহার করে বিনিয়োগ সম্মেলনে ইন্টারনেট সেবা দেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) গত ২৯ মার্চ স্টারলিংককে বিনিয়োগ নিবন্ধন দেয়। যার ফলে প্রতিষ্ঠানটি ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি পেয়েছে। তবে বাণিজ্যিকভাবে ইন্টারনেট সেবা চালু করতে হলে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) থেকে এনজিএসও লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে। এ লাইসেন্সের অনুমোদন প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।
স্টারলিংকের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যানুযায়ী, স্টারলিংক কিটে একটি রিসিভার বা অ্যান্টেনা, কিকস্ট্যান্ড, রাউটার, ক্যাবল এবং পাওয়ার সাপ্লাই থাকে। এ কিটের দাম ৩৪৯-৫৯৯ মার্কিন ডলারের মধ্যে। বাংলাদেশে এর সম্ভাব্য দাম ৬০-৭০ হাজার টাকা হতে পারে। এরপর প্রতিমাসে সাবস্ক্রিপশন ফি দিতে হবে, যা ১২-১৭ হাজার টাকা হতে পারে।