মাস্টারকার্ড ফাউন্ডেশনের সিইও রিতা রায়

“তরুণরাই সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার”

৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১৮:১৯  
৫ নভেম্বর, ২০২৫ ২১:২২  
“তরুণরাই সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার”

এটা সত্য যে শিক্ষা আমাদের জীবনে সুযোগের দরজা খুলে দেয়। কিন্তু সমাজে আসল পরিবর্তন আনেন তরুণরা। তাদের দৃঢ় সংকল্প, কল্পনাশক্তি আর নেতৃত্বের মাধ্যমে।” ৪ নভেম্বর, মঙ্গলবার  ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির মেরুল বাড্ডা ক্যাম্পাসে দেওয়া এক বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের এভাবেই অনুপ্রাণিত করেন মাস্টারকার্ড ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ও সিইও রিতা রায়।

 এদিন রিতা রায়ের নেতৃত্বে মাস্টারকার্ড ফাউন্ডেশনের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি সফরে এসেছিলেন। এই সফরে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তরুণ নেতৃত্ব, উদ্ভাবন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন বিষয়ে তিনি কথা বলেন। কীভাবে তরুণরা তাদের জীবনকে আরো ভালোভাবে গড়তে পারে সেই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন রিতা।

তিনি সবাইকে প্রচলিত চিন্তার বাইরে গিয়ে নতুন পথ খোঁজার পরামর্শ দেন। শিক্ষার্থীদের নিজেদের স্বপ্নকে নিজের মতো করে গড়ে তোলার অনুপ্রেরণা দেন তিনি। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “তোমরা কি নিজেদের কমফোর্ট জোন থেকে বের হয়ে নতুন পথে যাওয়ার মতো সাহসী পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত? 

রিতা রায় তার বক্তব্যে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি বৈশ্বিক নাগরিকত্ব, সামাজিক উন্নয়ন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তিনি বলেন, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও  মাস্টারকার্ড ফাউন্ডেশনের লক্ষ্য ও ভাবনার মধ্যে মিল রয়েছে। আমরা চাই তরুণদের ক্ষমতায়ন। 

মাস্টারকার্ড ফাউন্ডেশন একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা। প্রতিষ্ঠানটি তরুণদের উন্নয়নে কাজ করে থাকে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি আফ্রিকা এবং কানাডার আদিবাসী যুবকদের উন্নয়নে সহায়তা করছে। মাস্টারকার্ড ফাউন্ডেশনের উদ্দেশ্য হলো তরুণদের জন্য অর্থবহ, মর্যাদাপূর্ণ এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা- যোগ করেন তিনি। 

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে মাস্টারকার্ডের প্রতিনিধি দলটিকে স্বাগত জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন তামারা হাসান আবেদ। তিনি বলেন, এই সফরটি দুটি প্রতিষ্ঠানের যৌথ লক্ষ্য ও সহযোগিতার প্রতীক। তিনি আরও বলেন, “মাস্টারকার্ড ফাউন্ডেশন এবং ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির লক্ষ্য এক। আমরা শিক্ষা, উদ্ভাবন এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের মাধ্যমে তরুণদের শক্তিশালী করতে কাজ করছি। আমরা এমন নেতৃত্ব গড়ে তুলতে চাই, যারা সমাজে এবং বিশ্বে নতুন সম্ভাবনার পথ দেখাবে।” এ সময় উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর আরশাদ মাহমুদ চৌধুরী, ট্রেজারার আরিফুল ইসলাম এবং ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর শামেরান আবেদ।

মাস্টারকার্ডের এই প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার ডগ কাসামবালা, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ও গ্লোবাল কন্ট্রোলার লিটসা পপোভিচ, চিফ প্রোগ্রাম অফিসার পিটার মাতেরু এবং পিএএনএ প্রোগ্রামের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ড. সেগেনেট কেলেমু। 

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কার্যক্রম তুলে ধরেন সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মনজুর হাসান ওবিই, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ইমরান মতিন, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব এডুকেশনাল ডেভেলপমেন্টের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ড. ইরাম মরিয়াম, ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথের ডিন ড. লরা রাইখেনবাখ এবং অফিস অব কমিউনিকেশন্সের ডিরেক্টর খায়রুল বাশার।

প্রতিনিধি দলটি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির নতুন, পরিবেশবান্ধব ইনার সিটি ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেন। ক্যাম্পাসটিতে টেকসই ও জ্বালানি সাশ্রয়ী অবকাঠামো ব্যবহৃত হয়েছে। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির এই ক্যাম্পাস পরিবেশ সংরক্ষণে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি পয়েন্ট অফ রেফারেন্স।

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং মানসম্মত শিক্ষার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক কোলাবোরেশনের বিষয়েও অত্যন্ত যত্নশীল। ব্র্যাক ইউনির্ভাসিটি শিক্ষার্থীদের এমন জ্ঞান, দক্ষতা এবং নেতৃত্বের গুণসম্পন্ন করে গড়ে তুলছে যাতে তারা উদ্ভাবন এবং টেকসই উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে পারে। 

মাস্টারকার্ড ফাউন্ডেশনের সঙ্গে এই সহযোগিতা ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের প্রতি অঙ্গীকারকে আরও শক্তিশালী করেছে। বিশেষ করে এসডিজি-৪ (মানসম্মত শিক্ষা), এসডিজি-৮ (সম্মানজনক কাজ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি), এসডিজি-১০ (বৈষম্য হ্রাস) এবং এসডিজি-১৭ (লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অংশীদারিত্ব) অর্জনের ক্ষেত্রে এই উদ্যোগ ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অগ্রযাত্রাকে আরও এগিয়ে নেবে।

ডিবিটেক/এফএফ/মুইম