স্টার সিনেপ্লেক্সেও ৭ নভেম্বর ‘প্রিডেটর: ব্যাডল্যান্ডস’
বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী নির্ভর ‘প্রিডেটর’ ফ্র্যাঞ্চাইজির যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৮৭ সালে। হলিউডের জনপ্রিয় অ্যাকশন তারকা আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার ছিলেন প্রথম কিস্তির নায়ক। দর্শকদের ব্যাপক সাড়ায় দারুণ সাফল্য পায় সিনেমাটি।
প্রায় চার দশকজুড়ে এই ফ্র্যাঞ্চাইজি দর্শকদের উপহার দিয়েছে আরও সাতটি সিনেমা; যার মধ্যে রয়েছে ‘প্রিডেটর ২’ (১৯৯০), ‘এলিয়েন ভার্সেস প্রিডেটর’ (২০০৪), ‘এভিপি: রিকুইয়েম’ (২০০৭), ‘প্রিডেটরস’ (২০১০), ‘দ্য প্রিডেটর’ (২০১৮) এবং ২০২২ সালে ‘প্রেই’।
চলতি বছরের শুরুতে মুক্তি পায় অ্যানিমেটেড স্পিন অফ ‘প্রিডেটর: কিলার অব কিলারস’। সবগুলো সিনেমাতেই ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে মানুষের সঙ্গে অচেনা শিকারির লড়াইকে নতুনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। যার ফলে দর্শকদের পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে এই ফ্র্যাঞ্চাইজিটি।
ভক্তদের জন্য সুখবর হলো, পর্দায় আসছে সিরিজের নতুন সিনেমা। ‘প্রিডেটর: ব্যাডল্যান্ডস’ নামের এই সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন ড্যান ট্রাখটেনবার্গ। এর কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন মার্কিন অভিনেত্রী ইলে ফ্যানিং এবং নিউজিল্যান্ডের অভিনেতা ডিমিট্রিয়াস শুস্টার কোলোমাটাঙ্গি।
৭ নভেম্বর, শুক্রবার আন্তর্জাতিকভাবে মুক্তি পেতে যাচ্ছে সিনেমাটি। একই দিনে বাংলাদেশের স্টার সিনেপ্লেক্সেও মুক্তি পাবে এটি।
প্রিডেটর হচ্ছে এক ধরনের ভয়ংঙ্কর মহাজাগতিক ভিনগ্রহী প্রাণী যারা প্রযুক্তিতে মানুষদের চেয়ে অনেক অনেক এগিয়ে। বিভিন্ন সময় তারা বিভিন্ন গ্রহে গিয়ে একটি প্রতিযোগিতামূলক শিকার করার খেলায় অংশ নেয়। শিকার করার এই খেলাটি মূলত প্রিডেটরদের যোদ্ধা হিসেবে সম্মাননার স্বীকৃতি পাওয়ার একটি অনুষ্ঠান। একটা নির্দিষ্ট সময় পরপর প্রিডেটরদের কোনো একজন সদস্য স্বীকৃতি পাওয়ার এই শিকার করার খেলায় নামে। তারা মানুষসহ অন্যান্য বিপজ্জনক প্রাণীকে শিকার করে। শিকার করা প্রাণীটিকে হত্যা করে তার শিরদাঁড়াসহ মাথার খুলিটি পুরস্কার হিসেবে নিজেদের কাছে রেখে দেয়।
এবারের গল্পের কেন্দ্রে থাকছে এক তরুণ যোদ্ধা, যে নিজের অস্তিত্ব ও সম্মান রক্ষায় ভয়ংকর এক অভিযানে নামবে। এখানে দেখা যাবে, এক তরুণ প্রিডেটর ডেক, যে নিজের দুর্বলতা ও কোমলতার কারণে তার গোত্রের কাছে তুচ্ছ হয়ে পড়েছে। ডেকের মুখে ভৌতিক দাঁতের সারি, ভয়ংকর ম্যান্ডিবল নখর। তবুও এর ভেতরকার মানবিক কোমলতা। এই ‘দুর্বলতা’র কারণেই তার কঠোর বাবা তাকে হত্যা করতে চায়, কিন্তু ডেক পালায় এক দূরের এক গ্রহে; যেখানে অপেক্ষা করছে ভয়ংকর দানব কালিস্ক, যাকে তার বাবাও ভয় পায়। নিজের বংশের সম্মান পুনরুদ্ধার করতে, ডেক কালিস্ককে হত্যা করার শপথ নেয়।
তবে এই মিশনে সে একা নয়। পথে তার দেখা হয় দুই রোবট-মানব বায়োক্লোন যমজ বা ‘সিন্থ’-এর সঙ্গে। একদিকে রয়েছে থিয়া, এক নির্ভার, হাসিখুশি, ভুলভ্রান্তিতে ভরা এক রোবট-মানব, যে ডেকের সঙ্গে গড়ে তোলে এক অদ্ভুত বন্ধুত্ব। অন্যদিকে এক নির্মম, নিখুঁত, অনুভূতিহীন শিকারি, যে কার্যত হয়ে ওঠে ফ্র্যাঞ্চাইজির নতুন ‘প্রিডেটর’।
ফলে এই সিনেমাটি আর সেই পুরোনো, সরল গল্প নয়; বরং এটি এমন এক মৃত্যুগ্রহে নিজের প্রজাতির হাতে তাড়া খাওয়া এক মহাজাগতিক প্রাণীর গল্প, যে নিজের ভেতরের ভয়, ভালোবাসা ও অস্তিত্বের অর্থ বুঝে নিতে চায়। এখানে ট্রাখটেনবার্গ তৈরি করেছেন এমন এক মিশ্র বাস্তবতা, যেখানে প্রযুক্তি, দর্শন ও আবেগ একসূত্রে গাঁথা। নিস্তদ্ধতার মাঝেও অনুভূত হয় মৃত্যুর গন্ধ। সব কিছুর মাঝেই জীবনের জন্য লড়াই করে যায় ডেক। এই লড়াইয়ে সে জিতবে কিনা সেটা সময় বলে দিবে, তবে এর মধ্য দিয়ে পরিচালক যে বার্তা দিচ্ছেন সেটাই মূল আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন বোদ্ধারা।
ডিবিটেক/বানি/ইক







