ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে ৫০০ টাকায় দ্বিগুণ গতির ঘোষণা

১৯ এপ্রিল, ২০২৫  
১৯ এপ্রিল, ২০২৫  
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে ৫০০ টাকায় দ্বিগুণ গতির ঘোষণা

ইন্টারনেটের দাম নিয়ে গ্রাহক পর্যায়ে ব্যাপক অসন্তোষ রয়েছে। মোবাইলে কথা বলতে গিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্নতায় বিরক্তি প্রকাশ করেন গ্রাহকরা। এমন পরিপ্রেক্ষিতে বাধ্য হয়েই ৫০০ টাকায় দেশজুড়ে ইন্টারনেট দেয় আইএসপিরা। তবে এই সীমা ৫ এমবিপিএস থেকে দ্বিগুণ করে ১০ এমবিপিএস ইন্টারনেট সেবা দেবে তারা। আজ থেকেই গতি ২০ এমবিপিএস হবে।

শনিবার দেশে প্রান্তিক পর্যায়ে ইন্টারনেট সেবার সমস্যা, সম্ভাবনা ও করণীয় নিয়ে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে এই ঘোষণা দেন ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সংগঠন আইএপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হক।

তিনি জানান, এজন্য আ্যাক্টিভ শেয়ারিং চালু, লাইসেন্স মেয়াদ ১০ বছর করা; আইআইজি; এনটিটিএন ক্যাপাসিটি এবং সরকারি অবকাঠামো ব্যবহারের সুযোগ এবং ৫ বছরের জন্য লভ্যাংশ শেয়ার থেকে বাইরে রাখলে এই গতি ২০ এমবিপিএস করা যাবে।

আইএসপিএবি সভাপতি বলেন, ধানমন্ডিতে পপ স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে ছয় হাজার গ্রাহক সেবা নিচ্ছেন। এর মাধ্যমে চাইলে কোনো গ্রাহক ৫ মিনিটের মধ্যে অপারেটর পরিবর্তন করতে পারবেন। এর ফলে প্রত্যেক ব্যবহারকারী হ্যাপি এবং অপারেটররাও হ্যাপি। বিদ্যুৎ, জনবল সাশ্রয় হচ্ছে। সব দিক থেকে সাশ্রয় হলে আমরা ভালো সেবাটা দিতে পারবো। আইআইজিদের প্রাইজ ১২০ টাকা হওয়া উচিত। ব্রডব্যান্ডে আইআইজি থেকে প্রাইজ কমানোর সুবিধা পাচ্ছি না। আর সে কারণে জনগণের দোরগড়ায় পৌঁছাতে পারছি না। এনটিটিএনদের ট্রান্সমিশন কষ্ট ৫ টাকায় নিয়ে আসা সম্ভব। তারপরও আজ থেকে আমরা ৫০০ টাকায় বিদ্যমান ৫এমবিপিএস গতিকে ১০ এমবিপিএস করছি। 

বিগত সময়ের দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ইনফো সরকারসহ গত সরকারের নেওয়া প্রজেক্টগুলোতে আইএসপিগুলো ঢুকতে পারেনি। ঢাকা এবং ঢাকার বাইরের দামের ফারাক রয়েছে কারণ ট্রান্সমিশন কষ্ট। আইএসপি, আইআইজি এবং আইএসপি মিলে প্রাইজিং মডেল নতুন করে ঠিক করা দরকার।  এসওএফ ফান্ড নিয়ে বিটিআরসি এবং আইএসপি অপারেটরদের মধ্যে সমস্যা হচ্ছে। আরও তিন বছর আমাদের এই ফান্ডের বাইরে রাখা হলে আমরা কাঙ্খিত লক্ষ্যে যেতে পারবো। একইসঙ্গে নতুন লাইসেন্স দেওয়া উচিত। যারা সেবা দিতে চায় তারা যেন কাঙ্খিত সেবা সারাদেশে পৌঁছাতে পারে। লাইসেন্সের মেয়াদ ১০ বছর হওয়া উচিত।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিটিআরসি ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে টেলিকম খাতের বিভিন্ন লেয়ারের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় ট্রান্সমিশন খরচ, ইন্টারনেটের কাঁচামাল- ব্যান্ড‌উইথের মূল্য এবং ইন্টারনেটের গতির পেছনের নানা সমীকরণ উঠে আসে বক্তাদের কণ্ঠে। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান এমদাদ উল বারী। 

পেশাজীবি সংগঠন টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশের (টিআরএনবি) আয়োজনে সভায় সূচনা বক্তব্য দেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মাসুদুজ্জামান রবিন। মূল আলোচনার ওপর একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন টিআরএনবি সাংগঠনিক সম্পাদকআল-আমীন দেওয়ান। 

 টিআরএনবি সভাপতি সমীর কুমার দে’র সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে আলোচনা করেন মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন এমটব মহাসচিব মোহাম্মদ জুলফিকার, সেক্রেটারি জেনারেল এবং আইএসপিএবি সাধারণ সম্পাদক নাজমুল করিম ভূঞা। 

আলোচনায় অংশ নেন ইন্টারনেট সঞ্চালন প্রতিষ্ঠান ফাইবার অ্যাট হোম চেয়ারম্যান মঈনুল হক সিদ্দিকী। টেলিটক বাংলাদেশের এটিএম সাইফুর রহমান খান, বাংলালিংক এর  চীফ কর্পোরেট ও রেগুলেটরি অফিসার তাইমুর রহমান, রবি’র  কোম্পানি সেক্রেটারি ও চীফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বক্তব্য রাখেন। বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মোস্তফা মামুন হোসেন এবং সুমন আহমেদ সাবির।