এআই স্যাটেলাইট আনছে গুগল!

ভার্চুয়াল স্যাটেলাইটের মতো কাজ করবে এমন এআই মডেল আনতে যাচ্ছে গুগল। এজন্য তৈরি করছে অপটিক্যাল স্যাটেলাইট, রেডার এবং ক্লাইমেট সিমুলেশনের মত বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত উন্মুক্ত তথ্য সংগ্রহ ও সমন্বয় করে একটি এআই ‘এমবেডিং’ সিস্টেম।
এই সিস্টেমে আলফাআর্থ ফাউন্ডেশন নামের এই মডেল ব্যবহার করা হচ্ছে যা পৃথিবী পর্যবেক্ষণের খরচ অনেকাংশে কমানো সম্ভব হবে বলে দাবি করেছে টেক জায়েন্টটি।
গুগল বলেছে, আলফাআর্থ ফাউন্ডেশন মডেলটি বিভিন্ন সময়সীমায় বিস্তৃত পরিসরের কাজ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছে। এতে গুগল আর্থ ইঞ্জিনের তথ্য ব্যবহার করে স্থলভাগ ও উপকূলীয় অঞ্চলের পরিবেশগত পরিবর্তন দ্রুত ও সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে।
গুগলের এক প্রতিনিধি প্রযুক্তি বিষয়ক সাইট এনগ্যাজেটকে বলেছেন, “আলফাআর্থ ফাউন্ডেশন আমাদের পরিবর্তনশীল পৃথিবীর অবস্থা ও বিভিন্ন পরিবর্তন বোঝার ক্ষেত্রে এক বড় অগ্রগতি। এটি পরিবেশ সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা এবং ভূগোলভিত্তিক গবেষণায় নতুন দিগন্ত উন্মোচনে সহায়ক হবে।”
গত এক বছরে গুগল তাদের ‘স্যাটেলাইট এমবেডিং ডেটাসেট’ পরীক্ষামূলকভাবে বিশ্বের ৫০টিরও বেশি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাকে ব্যবহারের সুযোগ দেয়। উদ্দেশ্য ছিল—এই উন্নত উপগ্রহচিত্রভিত্তিক ডেটা বাস্তবে কীভাবে কাজ করে, তা যাচাই করা।
এখন গুগল এই ডেটাসেট উন্মুক্ত করেছে গুগল আর্থ ইঞ্জিনে, এর ফলে, যে কেউ বিশেষ করে, পরিবেশবিজ্ঞানী, জলবায়ু গবেষক ও নগর পরিকল্পনাবিদরা—তাদের নিজস্ব গবেষণা ও প্রকল্পে এটি ব্যবহার করতে পারেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এত বৃহৎ ও সহজে ব্যবহারযোগ্য স্যাটেলাইট ডেটা উন্মুক্ত হওয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিশ্লেষণ, বনাঞ্চল ধ্বংস শনাক্তকরণ, কৃষি ব্যবস্থাপনা ও দুর্যোগ পূর্বাভাস আরও বাস্তবসম্মত ও সময়োপযোগীভাবে করা যাবে।
খবরে প্রকাশ, উদ্ভাবিত মডেলে উন্মুক্ত উৎস থেকে সংগ্রহ করা তথ্যগুলো স্থলভাগ এবং উপকূলীয় জলভাগকে ১০x১০ মিটার বর্গাকার অংশে ভাগ করে এবং সময়ের সাঙ্গে সঙ্গে সেগুলো বিশ্লেষণ ও অনুসরণ করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রযুক্তি প্রকাশনা ওয়্যার্ড লিখেছে, এই ছোট ছোট বর্গাকার অংশগুলোকে আলাদা বৈশিষ্ট্য বোঝাতে বিভিন্ন রঙে দেখানো হয়। যেমন কোন এলাকায় কী ধরনের গাছপালা আছে বা মাটির ধরন কেমন তা বোঝাতে ভিন্ন ভিন্ন রং ব্যবহার করা হয়।
গুগল বলছে, আলফাআর্থ ফাউন্ডেশন ডেটা ব্যবহার করা অনেক সহজ হয়েছে। কারণ, এটি প্রতিটি স্থলভাগ ও উপকূলীয় এলাকার জন্য ছোট এবং সহজবোধ্য সারসংক্ষেপ তৈরি করে, যা অন্য এআই সিস্টেমের তুলনায় মাত্র ১/১৬ ভাগ জায়গা নেয়। এর ফলে, পৃথিবী পর্যবেক্ষণের খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে।
প্রযুক্তি জায়ান্ট কোম্পানিটি এক ব্যাখ্যায় বলেছে, বিজ্ঞানীরা এই মডেল ব্যবহার করে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে প্রয়োজনমতো বিস্তারিত মানচিত্র তৈরি করতে পারবেন। যেমন ফসলের স্বাস্থ্যের ওপর নজরদারি রাখা বা বন উজাড়ের গতিবিধি ট্র্যাক করা।