‘সয়াবিন আমদানির জন্য এক বিলিয়ন ডলারের চুক্তি'
বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন ২০ নভেম্বরম বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে অবস্থিত মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ (এমজিআই)–এর অঙ্গপ্রতিষ্ঠান সোনারগাঁ সিডস ক্রাশিং মিলস লিমিটেড পরিদর্শন করেছেন।সেখানে মেঘনা গ্রুপের সোনারগাঁ সিডস ক্রাশিং মিলের জেটিতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানীকৃত সয়াবিন দানা লোড–আনলোড কার্যক্রম পরিদর্শন করেন তিনি।
এ সময় তাকে স্বাগত জানান এমজিআই-এর পরিচালক তানজিমা মোস্তফা ও ব্যারিস্টার তাসনিম মোস্তফা। এছাড়া এমজিআইয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা এবং যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের প্রতিনিধি দলও উপস্থিত ছিলেন।
পরিদর্শনকালে রাষ্ট্রদূত জ্যাকবসন সয়াবিন ক্রাশিং সুবিধা ঘুরে দেখেন এবং বাংলাদেশ–যুক্তরাষ্ট্র কৃষি বাণিজ্যের দ্রুত সম্প্রসারণের বিষয়টি তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “আমরা মেঘনা গ্রুপ, সিটি গ্রুপ এবং ডেল্টা অ্যাগ্রোর সঙ্গে এক বিলিয়ন ডলারের মার্কিন সয়াবিন আমদানির জন্য চুক্তি করেছি। দেড় বছর আগে যেখানে আমদানি ছিল ৩৫০ মিলিয়ন ডলার, সেখান থেকে এ বছর ৫০০ মিলিয়ন এবং এখন তা এক বিলিয়ন ডলারের পথে। এটি সত্যিকার অর্থে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। এটি দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করছে।” তিনি আরও বলেন, “উচ্চমানের মার্কিন সয়াবিন আমেরিকান কৃষক এবং বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান—বিশেষত মেঘনার মতো কোম্পানির জন্যই লাভজনক।”
তিনি আরও জানান, এই বর্ধিত বাণিজ্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে এবং বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি তিনি মেঘনা গ্রুপকে তাদের আতিথেয়তার জন্য ধন্যবাদ জানান।
এমজিআই পরিচালক তানজিমা মোস্তফা বলেন, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে বিপুল পরিমাণ মার্কিন সয়াবিন আমদানির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সেই ধারাবাহিকতায় তারা ইতোমধ্যে ৭ লাখ মেট্রিক টনের বেশি সয়াবিন আমদানি করেছেন, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। তাদের লক্ষ্য এক মিলিয়ন টন আমদানি করা। এ বছর বাংলাদেশ যে পরিমাণ মার্কিন সয়াবিন আমদানি করেছে, তার অর্ধেকের বেশি আমদানি করেছে মেঘনা গ্রুপ।
তিনি জানান, বর্তমানে এমজিআইয়ের দুটি ক্রাশিং মিল যথাক্রমে মেঘনা সিডস ক্রাশিং মিলস ও সোনারগাঁও সিডস ক্রাশিং মিলস মোট দৈনিক ৭ হাজার ৫০০ টন সয়াবিন ক্রাশিং সক্ষমতা রয়েছে, যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।
গত ৩১ জুলাই বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক কমিয়ে আনতে অন্য পদক্ষেপের পাশাপাশি দেশটি থেকে আমদানি বাড়ানোর অঙ্গীকার করেছিলেন ব্যবসায়ীরা। গত মাস থেকে ব্যবসায়ীদের অঙ্গীকারের আমদানি পণ্য চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাতে শুরু করে।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জুলাই মাসের শেষে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায় চার লাখ টন সয়াবিনবীজ আমদানির তাৎক্ষণিক সমঝোতা হয়। এমজিআই চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ১৩ কোটি মার্কিন ডলারের তিন লাখ টন সয়াবিনবীজ আমদানির সমঝোতা করেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরার পর আরও দুই লাখ টন সয়াবিনবীজ আমদানির ঋণপত্র খুলেছে এমজিআই। সব মিলিয়ে গ্রুপটি পাঁচ লাখ টন সয়াবিনবীজ আমদানি করছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। সয়াবিন তেল ও প্রাণিখাদ্য তৈরির কাঁচামাল হলো সয়াবিনবীজ।
ডিবিটেক/এনডি/আইএইচ







