দুর্যোগকালীন আগাম সতর্কতা পেতে

সমন্বিত জাতীয় জরুরি টেলিযোগাযোগ কর্মপরিকল্পনা জরুরি

১৯ জুন, ২০২৫  
১৯ জুন, ২০২৫  
সমন্বিত জাতীয় জরুরি টেলিযোগাযোগ কর্মপরিকল্পনা জরুরি


বিশ্ব ঝুঁকি সূচক- ২০২৩ অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী দুর্যোগপ্রবণ শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। কেননা, দুর্যোগকালীন বিদ্যুৎ বিভ্রাট, চলাচল অনুপযোগী সড়ক ব্যবস্থা, প্রয়োজনীয় জ্বালানী শক্তি সঞ্চয় সক্ষমতার অভাবে ভেঙ্গে পড়ে। এমন আপদকালীন সময়ে জরুরী টেলিসেবা নিশ্চিত করতে দুর্যোগকালীন আগাম সতকর্তার জন্য টেকসই টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থাপনা ও শক্তিশালী ও সমন্বিত জাতীয় জরুরি টেলিযোগাযোগ কর্মপরিকল্পনা জরুরি বলে মনে করেন খাত সংশ্লিষ্টরা। 

রাজধানীর আগারগাঁওস্থ বিটিআরসি ভবনে দুর্যোগকালীন জাতীয় জরুরি টেলিযোগাযোগ পরিকল্পনা এবং সেল ব্রডকাস্ট প্রারম্ভিক সতর্কতা ব্যবস্থা (National Emergency Telecommunication Plan and Cell Broadcast Early Warning System) শীর্ষক দুইদিন ব্যাপী কর্মশালার শেষ দিন ১৯ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) এমন অভিব্যক্তি তুলে ধরেছেন অংশ গ্রহণকারীরা।


দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও পর্যবেক্ষণ, ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস এবং ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীসহ সকল অংশীদারদের কাছে আগাম সতর্কতা পৌঁছাতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কৌশল প্রণয়নের অংশ হিসেবে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, সশস্ত্রবাহিনী বিভাগ, রেডক্রস, ইউনিসেফ, বিশ্ব খাদ্য সংস্থা, এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক, বিশ্বব্যাংক, মোবাইল অপারেটরস, টেলিযোগাযোগ খাতসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, বিশেষজ্ঞ, একাডেমিয়া, দেশি-বিদেশি সংস্থাসমূহের প্রতিনিধিবৃন্দ, বিটিসিএল, বিটিআরসি এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সমপানী ওয়ার্কিং সেশসে উপস্থিত অর্ধশাধিক অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন সাইক্লোন প্রস্তুতি বিষয়ক প্রকল্পের (সিপিপি) পরিচালক আহমাদুল হক, আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মু শামীম হাসান ভূঁইয়া, আবহাওয়াবিদ কামরুল আহসান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুপারেন্টেন্ড ড, সাজ্জাদ হোসাইন, নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান, বাংলাদেশ বেতারের মুখ্য প্রকৌশলী মুনীর আহমেদ, বিটিভি’র মুখ্য প্রকৌশলী মো মাসুদ ভূইয়া, বুয়েটের শিক্ষক ড. সোনিয়া মোর্শেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. ফাতেমা আক্তার, ইউনিসেফ বাংলাদেশের এমার্জেন্সি অফিসার আব্দুল্লাহ আল রেজওয়ান, ইডব্লিউফরঅল ন্যাশননাল কো-অর্ডিনেটর শাহজাহান সাজু, আইটিইউ কনসালটেন্ট জুয়ান এম রোলডান প্রমুখ।

  

সূত্রমতে, জাতিসংঘের নেতৃত্বে বিশ্বজুড়ে সবার জন্য প্রাথমিক সতর্কীকরণ (Early Warning 4 All)  উদ্যোগের অংশ হিসেবে গৃহীত বহুমূখী চ্যানেল পদ্ধতি পিলার-৩ (সতর্কতা প্রচার এবং যোগাযোগ) টেলিকম নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আগাম সতর্কতার কার্যকারিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণে সচেতন করতে এই  এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। পিলার থ্রি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে দুই দিনের কর্মশালায় বাংলাদেশের জন্য জাতীয় জরুরি টেলিযোগাযোগ পরিকল্পনা ও সেল ব্রডকাস্ট আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম সংক্রান্ত মোট ৭ টি সেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মশালায় জাতীয় জরুরি টেলিযোগাযোগ পরিকল্পনার আওতায় টেলিযোগাযোগ কাঠামো মূল্যায়ন, দুর্যোগ সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহের ( দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, বিটিআরসি ও সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডার) সাথে সমন্বয় এবং জরুরি পরিস্থিতিতে টেকসই টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো নিশ্চিতকরণ। অন্যদিকে সেল ব্রডকাস্ট আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম এর আওতায় বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্পের জন্য সেল ব্রডকাস্টিং সতর্কতা সম্পর্কে প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ, মোবাইল অপারেটরদের সাথে সমন্বয় ও দেশব্যাপী বাস্তবায়ন করণীয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। 

প্রসঙ্গত, ২০২৭ সালের মধ্যে পৃথিবীর সকল মানুষ ত্রিভূজ সম্মিলনের মাধ্যমে সুরক্ষিত রাখতে ৪টি মূল স্তম্ভ শক্তিশালী করণের উদ্যোগ নিয়েছে জাতিসংঘ।  এর মধ্যে প্রথম স্তম্ভ দুর্যোগ ঝুঁকি জ্ঞান এবং ব্যবস্থাপনা, দ্বিতীয় স্তম্ভ পর্যবেক্ষণ ও পূর্বাভাস, তৃতীয় স্তম্ভ সতর্কতা প্রচার ও যোগাযোগ এবং পিলার- ৪ স্তম্ভ হচ্ছে দ্রুততার সঙ্গে রিসপন্স টিম সক্রিয় করা। 

বিটিআরসিতে চলছে দুই দিনব্যাপী ‘আর্লি ওয়ার্নিং ফর অল’ কর্মশালা