ভিওওয়াইফাই চালু করে প্রশংসিত বাংলালিংক

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ভয়েস ওভার ওয়াই-ফাই (ভিওওয়াইফাই) সেবা চালু করে প্রসংশিত হচ্ছে মোবাইল থেকে উদ্ভাবনী ডিজিটাল অপারেটর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা টেলকো প্রতিষ্ঠান বাংলালিংক। সেবাটি চালুর ফলে বেজমেন্ট, উঁচু ভবন কিংবা গ্রামীণ এলাকায় যেখানে মোবাইল সিগন্যাল দুর্বল সেখানে বাংলালিংক গ্রাহকরা ভালো ইনডোর কাভারেজ পাবেন। সেলুলার টাওয়ার থেকে ভয়েস ট্রাফিক অফলোড হওয়া সামগ্রিক সেবার মান উন্নত হবে। এছাড়াও কল ড্রপ কমে স্পষ্ট এইচডি মানের ভয়েস কল সেবা পাওয়া যাবে এবং আন্তর্জাতিক রোমিংয়ের ক্ষেত্রে স্থানীয় রেটে ওয়াই-ফাই ব্যবহার করে কল করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সবার আগে সেবাটি চালু করায় বাংলালিংককে সাধুবাদ বাংলঅদেশে ভিওওয়াইফাই সেবাটিকে ‘টেলিযোগাযোগ খাতে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
তার ভাষায়, সরকার দৃঢ়ভাবে প্রত্যাশা করছে, সকল মোবাইল অপারেটর দ্রুত সারাদেশে VoWiFi চালু করবে, যাতে নগর ও গ্রামীণ সব ব্যবহারকারী সমানভাবে উপকৃত হন। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য আগস্ট মাসের শুরুতে আমরা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)-কে প্রয়োজনীয় নীতি ও নির্দেশনা প্রণয়নের জন্য চিঠি পাঠিয়েছি। সরকার টেলিকম সেবা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এবং VoWiFi, VoLTE, 5G সহ আধুনিক প্রযুক্তির সফল বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান অব্যাহত থাকবে। আমরা বিশ্বাস করি, এই যৌথ প্রচেষ্টা গ্রাহকসেবার মান বাড়াবে এবং বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ ভবিষ্যৎকে আরও মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাবে।
সেবাটির ব্যাবহারিক ও প্রযুক্তি বিষয়ক আলোচনায় এই প্রকৌশলী জানান, ভয়েস ওভার ওয়াই-ফাই এমন একটি প্রযুক্তি, যা মোবাইল ব্যবহারকারীদেরকে শুধুমাত্র মোবাইল নেটওয়ার্ক (2G/3G/4G/5G)-এর উপর নির্ভর না করে, এরেঞ্জড এভেইলেবল ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে সাধারণ ভয়েস কল করার সুযোগ দেয়। ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা একই থাকে, তবে কলটি সেলুলার নেটওয়ার্কের পরিবর্তে ওয়াই-ফাইয়ের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। যখন কোনো মোবাইলে VoWiFi চালু থাকে এবং সেটি ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হয়, তখন ফোনটি প্রথমে একটি বিশেষ ধরণের পরিচয় যাচাই (EAP-SIM/EAP-AKA অথেন্টিকেশন রিকোয়েস্ট) পাঠায়। এই রিকোয়েস্টটি একটি গেটওয়ের (ePDG ইভল্ভড প্যাকেট ডেটা গেইটওয়ে) মাধ্যমে মোবাইল অপারেটরের সার্ভারে পৌঁছায়। সেখানে থাকে AAA সার্ভার (Authentication, Authorization, Accounting), যা আবার অপারেটরের গ্রাহক তথ্যভাণ্ডার HLR/HSS (Home Subscriber Server)-এর সঙ্গে যোগাযোগ করে। HLR/HSS-এ সংরক্ষিত থাকে সিম কার্ডের পরিচয় সম্পর্কিত তথ্য, যেমন IMSI নম্বর এবং এনক্রিপশন KEY। এগুলো যাচাই করে নিশ্চিত করা হয় যে সিমটি সত্যিই বৈধ গ্রাহকের কিনা। যাচাই সফল হলে ফোন এবং অপারেটরের মূল নেটওয়ার্কের (IMS) মধ্যে একটি নিরাপদ আইপি সিকিউরিটি (IPSec) টানেল তৈরি হয়। এর ফলে, ব্যবহারকারী ওয়াই-ফাই ব্যবহার করলেও তার ডিভাইস কার্যত অপারেটরের নিজস্ব নিরাপদ মোবাইল নেটওয়ার্কের ভেতরে কাজ করতে থাকে।