যবিপ্রবিতে দিনব্যাপী ৩০তম বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস পালন

বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা, কেক কাটা, আনন্দ শোভাযাত্রা, শপথ পাঠ, সেমিনার, নবীন বরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিশ্বের ১২৯ টি দেশের সাথে তাল মিলিয়ে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) ৩০তম বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস-২০২৫ পালন করা হয়েছে। আজ সোমবার দিনব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন (পিটিআর) বিভাগের উদ্যোগে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।
যবিপ্রবিতে পালিত ৩০তম বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবসটির এবারের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ‘যৌবনেই সুস্থ্য বার্ধক্যের প্রস্তুতি জরুরি’। এই দিবসটি প্রতি বছর ৮ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী পালিত হয়। এই দিবসটি পালনের মূল লক্ষ্য হলো বার্ধক্যকালে শরীরকে সুস্থ রাখা, দুর্বলতা এবং পড়ে যাওয়ার মতো সমস্যা প্রতিরোধে ফিজিওথেরাপি ও শারীরিক কার্যকলাপের গুরুত্ব সম্পর্কে সাধারণ জনগণকে সচেতন করা।
সকাল ১০টায় যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল মজিদ বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা উদ্বোধনের মাধ্যমে দিবসটির দিনব্যাপী কর্মসূচির শুভসূচনা করেন। এরপর উপস্থিত সকলকে নিয়ে শুরু হয় কেককাটা ও আনন্দ শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি যবিপ্রবির ডা. এম আর খান মেডিকেল সেন্টার থেকে শুরু হয়ে কবি নজরুল একাডেমিক ভবন ও স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবন প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। এরপর শুরু হয় রোটারি ক্লাব থেকে আগত বৃদ্ধাশ্রমের প্রবীণ অতিথিদের জন্য আয়োজিত বিভিন্ন হেলথ সেশন, এক্সারসাইজ ও ইনডোর গেমস্। সারাদিন চলমান এই অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে বিকাল ৩টায় যবিপ্রবির অধ্যাপক মোহাম্মদ শরীফ হোসেন গ্যালারীতে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল মজিদ।
সেমিনারে উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে যবিপ্রবি উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন (পিটিআর) বিভাগ খোলা হয়। এ বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে এ অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে-গঞ্জে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। স্বাস্থ্য সেবার বিভিন্ন ধারার মধ্যে ফিজিওথেরাপি একটি। স্বাস্থ্য সেবার প্রতিটি ধারার সেবা সঠিকভাবে প্রদান করলেই একজন রোগীর সঠিক চিকিৎসা করা সম্ভব। যবিপ্রবির উপাচার্য জানান, তিনি নিজে কিছুদিন যাবত ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা গ্রহণ করছেন এবং ভালো আছেন। তিনি ফিজিওথেরাপি সেবাদানকারী সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমাদের নিজেদেরকে ফিজিওথেরাপি সংক্রান্ত উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে এবং নিজেরকে আরো দক্ষ ও গুণগতমানসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে, তবেই তোমরা সকলকে সঠিক মানের সেবা দিতে পারবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়টি শহর থেকে দূরে প্রান্তিক অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় আমরা সবাইকে চিকিৎসা সেবার আওতায় আনতে পারছি না। এ কারণে ইতোমধ্যে যশোর শহরের মধ্যে একটি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে যেখানে উন্নতমানের ফিজিওথেরাপি সেন্টার ও আধুনিক গবেষণাগার স্থাপন করা হবে এবং সেটি স্থানীয় রোগীর পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে আগত রোগীদের জন্য আধুনিক ও গুণগতমানসম্মত স্বাস্থ্যসেবার মান নিশ্চিত করবে। তিনি দিবসটির সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করেন।
ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের সভাপতি ডা. এহসানুর রহমান, পিটি এর সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) খান মাসুম বিল্লাহ, স্বাস্থ্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জাফিরুল ইসলাম, প্রবীণ বিষয়ে লেখক ও গবেষক হাসান আলী, প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের কনসালটেন্ট ডা. বাপ্পী কবিশেখর পারমিতা প্রমুখ। উক্ত সেমিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন যবিপ্রবি পিটিআর বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ও যবিপ্রবির অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। সেমিনারটি উপস্থাপনা করেন পিটিআর বিভাগের প্রভাষক ডা. কাজী মোঃ আরমান হোসেন, পিটি। সন্ধ্যায় পিটিআর বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।