এনবিআরের ভার্চুয়াল সভায় ‘ট্রাম্প-মাস্ক’!

১৬ জুন, ২০২৫  
১৬ জুন, ২০২৫  
এনবিআরের ভার্চুয়াল সভায় ‘ট্রাম্প-মাস্ক’!

ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়কর অনুবিভাগের রাজস্ব পর্যালোচনা সভায় এবার যুক্ত হয়েছেন বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক ও , মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! সভার অংশগ্রহণকারীর তালিকায় এমন অভিজাত ব্যক্তি ছাড়াও দেখা গেছে আইটিইউ, শাওমি, রেডমি ও স্যামসাং এর বিভিন্ন বিভিন্ন মডেল, তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতি, মায়ের দোয়া স্যানিটারিস এবং বিভিন্ন বছরের নাম ও নানা ধরনের সংখ্যা সহ শতাধিক সন্দেহজনক ও ভুয়া আইডি।

এনবিআরের কর্মকর্তারা আরও জানান, ‘রাজস্ব পর্যালোচনার নিয়মিত সভায় সাধারণত সশরীরে উপস্থিত হন ঢাকাস্থ কর্মকর্তারা এবং অন্যান্যরা ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। তবে ১৫ জুন অনুষ্ঠিত সভায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়ে গেলেও এর বড় একটি অংশেরই কোনও বাস্তব অস্তিত্ব বা এনবিআরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই।’

উপস্থিতির সংখ্যা বাড়িয়ে দেখাতে ইচ্ছাকৃতভাবে এসব ভুয়া আইডি ব্যবহার করা হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ‘সম্প্রতি অধ্যাদেশ বাতিলসহ চার দফা দাবিতে আমরা আন্দোলনে অংশ নিই। সরকারের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত হলেও এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ বিষয়ে কোনও অগ্রগতি না হওয়ায় এখন তার সঙ্গে অসহযোগিতার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে এখনও অসন্তোষ বিরাজ করছে। তাই ভার্চুয়ালি সভায় লোক বেশি দেখানোর জন্য এসব ভুয়া আইডি ব্যবহার করা হয়েছে।’

জানা যায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আলাদা করে অধ্যাদেশ জারির পর থেকে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আন্দোলনে নামেন সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। দীর্ঘদিন ধরে চলা এ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ মে অধ্যাদেশ সংশোধনের আশ্বাসে আন্দোলন প্রত্যাহার করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে সরব ছিলেন সবাই। একই সঙ্গে চেয়ারম্যানের অপসারণের আগপর্যন্ত তাকে অসহযোগিতা করারও ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা। যদিও এর ফাঁকে বাজেটের কাজে এনবিআর চেয়ারম্যান কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় অফিস করেন। টানা ঈদের ছুটির পর প্রথম অফিসে রাজস্ব সভা করেন। আর এ ভার্চুয়াল সভায় ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইলন মাস্কের নাম সংবলিত আইডি দিয়ে মিটিংয়ে যোগ দেন কিছু কর্মকর্তা।

সভায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মে মাস পর্যন্ত আয়কর আদায়ের চিত্র তুলে ধরা হয়। জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে আয়কর খাতে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৩৯ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা। তবে এ সময়ে আদায় হয়েছে মাত্র ১ লাখ ৫ হাজার ১৯৬ কোটি টাকা—লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অনেক কম। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ। শুধু মে মাসেই আদায় হয়েছে ১০ হাজার ১৩০ কোটি টাকা।

সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান কর্মকর্তাদের জানান, অর্থবছরের শেষ ১৫ দিনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে রাজস্ব ঘাটতি কমিয়ে আনতে হবে। তবে কর্মকর্তারা জানান, অন্যান্য সময় রাজস্ব ঘাটতিতে তিনি যে কঠোর অবস্থান নেন, এবার তা পরিলক্ষিত হয়নি।