অনলাইন বাইক হাটের ৬ প্রতারক আটক

অনলাইনে মোটরসাইকেল বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে স্থানীয় পুলিশ। এ সময় তিনটি চোরাই মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, অনলাইনে বাইক বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাদের সব হাতিয়ে নিতেন এই প্রতারক চক্র।
আটক প্রতারকরা হলেন- নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার অনন্তপুর গ্রামের আব্দুল বারেক মুন্সী বাড়ির মো.আব্দুল করিমের ছেলে মো. জাকির হোসেন ওরফে রাকিব (২৪), একই বাড়ির দ্বীন ইসলামের ছেলে মো. জাহিদুল ইসলাম ফারহান (১৯), একলামপুরের কাশেম কনট্রাক্টর বাড়ির আবুল কাশেমের ছেলে কামরুল হাসান ওরফে রাহাদ (২২), সদর উপজেলার ভুলুয়া কলোনির মো. লিটনের ছেলে মো. রিপন (২২), সোনাইমুড়ীর নাটেশ্বর গ্রামের ভূঁইয়া হাজী বাড়ির সাহেব উল্যার ছেলে শামীমুর রহমান ওরফে শামীম (২২) ও আলীপুরে ঈদের বাপের বাড়ির সুলতান আহমদের ছেলে মো. ফয়সাল ওরফে বুলেট বাবু (২৩)।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ও বুধবার রাতে উপজেলার একাধিক স্থানে অভিযান চালিয়ে এদের আটক করা হয়। তিনি বলেন, আটক আসামিরা একটি প্রতারক চক্র। তারা বিভিন্ন সময় অনলাইনে কম দামে মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রয়ের বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাদের ফাঁদে ফেলে তাদের নিকট থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়াসহ চোরাই মোটরসাইকেল এবং বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রয় করে আসছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শফিক বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হবে। এ ছাড়াও এই চক্রের আর কেউ আছে কি না তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পুলিশ জানায়, ৭০ হাজার টাকা দামে টানা বাইক বিক্রয় হবে বলে নোয়াখালী বাইক হাট নামে ফেসবুক পেজ থেকে একটি পোস্ট দেয় বেগমগঞ্জের অন্তরপুর গ্রামের মো. জাকির হোসেন। ওই পোস্টের সূত্র ধরে ফেনী সদরের ফরহাদ নগর গ্রামের শফিকের রহমানের (২০) সঙ্গে মোবাইল ফোন ও মেসেঞ্জারে কথা হয় রাকিবের। একপর্যায়ে মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সুজুকি জিক্সার মোটরসাইকেল ক্রয় করার জন্য ভুক্তভোগী তার এলাকার আজিজুর রহমান মিলনকে (২০) সঙ্গে নিয়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের গ্লোব ফ্যাক্টরির পশ্চিম পার্শ্বে পাকা রাস্তার ওপর আসেন। তখন প্রতারক রাকিব তাদেরকে বিজ্ঞাপনের মোটরসাইকেলটি দেখিয়ে দরদাম করেন। এরপর আসামি মো. জাহিদুল ইসলাম ফারহান, মো. রিপন, কামরুল হাসান, শামীমুর রহমান ও মো. ফয়সাল ও বাদলসহ অজ্ঞাত ৫/৬ জন পেছন দিক থেকে এসে শফিক ও মিলনকে আটক করে ফেলে।
পুলিশ আরও জানায়, ওই সময় আসামিরা তাদেরকে চড়-থাপ্পড় মেরে তাদের সঙ্গে থাকা নগদ পাঁচ হাজার টাকা ও দুইটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন। আসামিরা ভুক্তভোগীদের মোটরসাইকেল ক্রয়ের জন্য নিয়ে আসা টাকা কোথায় রেখেছে জানতে চাইলে তারা জানায় তারা টাকা নিয়ে আসেনি। এতে প্রতারকচক্র ক্ষিপ্ত হয়ে তাদেরকে পার্শ্ববর্তী অজ্ঞাত নির্জন স্থানে নিয়ে আটক করে মারধর করেন। আশপাশের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে তাদের উদ্ধার করে এবং আসামি জাকিরকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরবর্তীতে আটক আসামির তথ্যের ভিত্তিতে দুইজন আসামিকে বাড়ি ও গাবুয়া বাজার হোন্ডা সার্ভিসিং সেন্টার থেকে একটি সুজুকি জিক্সার, একটি পালসার, একটি অ্যাপাচি মোটরসাইকেল জব্দ করে।