আইটিসি- আইআইজি গাইডলাইনের ২টি ক্লজ সংশোধন করেছে বিটিআরসি

দেশে ইন্টারনেট আমদানিতে বছরে বাঁচবে ১ কোটি ২০ লাখ ডলার

২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  
দেশে ইন্টারনেট আমদানিতে বছরে বাঁচবে ১ কোটি ২০ লাখ ডলার

ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) লাইসেন্স এবং ইন্টারন্যাশনাল টেরিস্টারিয়েল ক্যাবল (আইটিসি) গাইডলাইনের একটি ধারা সংশোধন করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি)। এর ফলে ভারত থেকে আমদানি করা ৬ আইটিসি কোম্পানি এবং রাষ্ট্রায়ত্ব বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল পিএলসি (বিএসপিএলসি) এর মধ্যে ব্যান্ড উইথ সরবরাহ ও রেভিনিউ শেয়ারে সমতা সৃষ্টি হবে। তবে এ জন্য সাবমেরিন কোম্পানিগুলোর ব্যান্ডইথ দাম প্রতিযোগিতামূলক করা এবং সেবাকে আরো দ্রুতগতির করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।  

আর বাজার বিশ্লেষকদের মতে, সংশোধিত গাইডলাইনের ফলে ভারত থেকে (আইটিসি) ব্যান্ডউইথ আমদানী কমায় দেশের বছরে ১ কোটি ২০ লাখ ডলার সাশ্রয়ী হবে। একইসঙ্গে সরকারের রাজস্ব ভাগাভাগির আয় বাড়বে ১০ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এছাড়াও ফেসবুক, গুগল, আকামাই ও ইউটিউব এর মতো কন্টেন্ট প্রোভাইডাররা ভারতকে কর দিয়ে বছররের পর বছর বাংলাদেশে ব্যবসা করে ভ্যাট ফাঁকি দিলেও আগামীতে এই পথ ক্রমান্বয়ে কমে আসবে। বহুজাতিক ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও বাংলাদেশে ডাটা সেন্টার স্থাপনে মনোযোগী হতে হবে। 

আইআইজি’র গাইডলাইনে আনা সংশোধনীতে বলা হয়েছে, আইআইজি অপারেটরদের এসটিএম-১, এসটিএম-৪, এসটিএম-১৬, এসটিএম-৬৪, জিই এবং আইপি প্রযুক্তির এফই এর মতো বিভিন্ন ইন্টারফেস গতি সমর্থন করতে হবে। প্রধান সংযোগটি আইএলডিসি এর মাধ্যমে হবে। যদি আইএলডিসি সচল না থাকে, তবে ১০% ব্যান্ডউইথ স্যাটেলাইট আর্থ স্টেশন/ভিএসএটি এর মাধ্যমে ব্যাকআপ করা যেতে পারে। প্রতিটি আইআইজি অপারেটরকে নিশ্চিত করতে হবে যে তাদের মোট ইন্টারনেট ট্রাফিকের ৫০% এর বেশি আন্তর্জাতিক টেরেস্ট্রিয়াল কেবলস (আইটিসি) এর মাধ্যমে রাউট করা হবে না। গ্রাহকদের সাথে সেবা স্তরের চুক্তি (এসএলএ) অনুযায়ী, কমিশনের পূর্বানুমোদন নিয়ে আইআইজি লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পর্যাপ্ত ব্যাকআপ ব্যান্ডউইথের ব্যবস্থা করতে পারবে।

এ নিয়ে বিএসসিপিএলসির সেলস ও মার্কেটিং বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক মো. আরিফুল হক জানান, তারা অতিরিক্ত ব্যান্ডউইথ সরবরাহ করার জন্য প্রস্তুত আছেন। সংশোধিত কাঠামোর আওতায়, আইআইজি অপারেটররা তাদের মোট ব্যান্ডউইথের ১০ শতাংশ পর্যন্ত স্যাটেলাইট আর্থ স্টেশন/ভিএসএটি-এর মাধ্যমে ব্যাকআপ ক্যাপাসিটি হিসেবে রাখতে পারবে, যতক্ষণ না বিকল্প লং ডিসটেন্স কমিউনিকেশন (আইএলডিসি) রুট পাওয়া যায়। 

অপরদিকে আইটিসি গাইডলাইন ও লাইসেন্সিং এর সংশোধনীতে রেভিনিউ শেয়ারিং ১ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে আইটিসি থেকে ব্যান্ডই্থ সরবরাহ থেকে রাষ্ট্রীয় সাবমেরিন ক্যাবল থেকে ব্যান্ডউইথ আমদানির সমান হবে। এতে করে আইটিসি’ থেকে ব্যান্ডউইথ নিয়ে বাড়তি সুবিধা পাবে না আইআইজিগুলো।

নিয়ন্ত্রক সংস্থা সূত্রে প্রকাশ, ভারত থেকে ব্যান্ডউইথ আমদানি আরও কমিয়ে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনতে চায়, একই সঙ্গে বিএসসিপিএলসি-এর মাধ্যমে সাবমেরিন কেবল থেকে সরবরাহ বাড়িয়ে ৬০ শতাংশে উন্নীত করা হবে। বাকি ১০ শতাংশ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সরবরাহ করা হবে। 

প্রসঙ্গত, বর্তমানে বাংলাদেশের ব্যান্ডউইথ ব্যবহারের প্রায় ৬০ শতাংশ, আইআইজি কোম্পানিগুলো ইন্টারন্যাশনাল টেরিস্ট্রিয়াল কেবল (আইটিসি) কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে ভারত থেকে আমদানি করে। বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল পিএলসি (বিএসপিএলসি) ইন্টারনেটের জন্য মোট ব্যান্ডউইথের ৪০ শতাংশ সরবরাহ করে। পরিসংখ্যান বলছে, দেশে আইটিসি থেকে ৪৫০০জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ, সাবমেরিন থেকে ২৫০০ ব্যান্ডউইথ বাংলাদেশে প্রবেশ করে। আর নতুন নিয়মে এই ব্যান্ডইথ সমান সাড়ে তিন হাজার বিজিপিএস এ বিন্যস্ত হবে।