গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ এবং তাদের গাড়িবহরে হামলা ও সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহতের ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৬ জুলাই, বুধবার রাত ৮টা থেকে ১৭ জুলাই,সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি করেছে সরকার। স্থানীয় কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সন্ধ্যার পরই অনেকটা ফাঁকা হয়ে গেছে গোপালগঞ্জ শহর। ঘরে ফেরা কয়েকজন মানুষকে বিচ্ছিন্নভাবে রাস্তায় দেখা গেলেও তাদের চোখেমুখেও ছিল আতঙ্ক। শহরজুড়ে টহল দিচ্ছে র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনী। গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি উপস্থিতির কথাও জানিয়েছেন তারা।
এমন পরিস্থিতিতে সেখানে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ কিংবা বিঘ্নিত কোনোটাই করা হয়নি বলে নিশ্চিত করেছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়।
রাতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, ''যেকোনো পরিস্থিতিতেই ইন্টারনেট শাটডাউন না করার ব্যাপারে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট।
“সরকার দেশের যে কোনো স্থানে মোবাইল এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা নিরবচ্ছিন্ন রাখতে বদ্ধপরিকর।''
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, “যে কোন
পরিস্থিতিতেই ইন্টারনেট শাটডাউন না করার ব্যাপারে সরকারের অবস্থান সুস্পষ্ট। সরকার দেশের যে কোনো স্থানে মোবাইল এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা নিরবচ্ছিন্ন রাখতে বদ্ধপরিকর। গোপালগঞ্জে কিংবা দেশের অন্য কোন জায়গায় মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ কিংবা বিঘ্ন করতে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) কোন নির্দেশনা জারি করেনি। বর্তমান সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের আলোকে ইন্টারনেট বন্ধের প্রশ্ন উঠানো অবান্তর।”
এ নিয়ে সংশ্লিষষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব জাানন, “দুরভিসন্ধিমূলক উদ্দেশ্য নিয়ে স্বৈরাচার এবং তাদের দোসরা এ ধরনের অপতথ্য ছড়াচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং জনজীবনে শৃঙ্খলা অব্যাহত রাখতে মিস-ইনফরমেশন এবং ডিস-ইনফরমেশন ছড়ানোর আগে ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া যাচ্ছে।”
এদিকে ঘটনা কাভারে বিভিন্ন টেলিভিশন ও মাল্টিমিডিয়ার সাংবাদিকদের বহনকারী গাড়িতে হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি তীব্র নিন্দা জানিয়েছে অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্স। গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে অ্যালায়েন্সের সভাপতি হাসান শরীফ এবং সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সোহেল এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। এতে জানানো হয়, যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র করেসপনডেন্ট মোজাম্মেল হোসেন মুন্নাসহ আরও এক জাতীয় পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধি আহত হন। একাত্তর টিভি, স্টার নিউজ ও মাল্টিমিডিয়ার সাংবাদিকদের বহনকারী গাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। এ ধরনের সহিংসতা পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতাকে মারাত্মকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে। অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্স এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও কার্যকর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে।
অপরদিকে গোপালগঞ্জের ঘটনা নিয়ে সোশ্যাল হ্যান্ডেলে পক্ষে-বিপক্ষে নানা অপতথ্য ছড়াতে দেখা যাচ্ছে।